সাগর আচার্য্য:
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে যাত্রীবাহী পরিবহন ভাড়া বাড়ানোর কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। আকস্মিক এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন তারা। অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধিতে লঞ্চে যাতায়াত করতে এখন রীতিমত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। গতকাল শুক্রবার (১২ নভেম্বর) সকালে চাঁদপুর নদী বন্দরে যাত্রীদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো।
তবে বাড়তি ভাড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরি করা আয়েশা বেগম নামে এক যাত্রী দৈনিক শপথকে বলেন, ভর্তুকি কমাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলো। এরপর ভাড়া বাড়ানোর জন্য যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো ধর্মঘটের ডাক দিলো। তাদের লোকসান পুষিয়ে দেওয়া হলো। কিন্তু আমাদের তো বেতন বা আয় বাড়েনি। আমরা সাধারণ মানুষ এ যাত্রাতেও বলি হলাম। কারণ আমাদের তো গন্তব্যে যেতেই হবে এবং বাড়তি ভাড়াও দিতে হবে, নয়তো যেটুকু উপার্জন করছি সেটুকুও হারাতে হবে।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর থেকে ঢাকায় বাচ্চা নিয়ে লঞ্চে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সবসময় লঞ্চের ২য় শ্রেনীর সিট বুকিং করে আসা-যাওয়া করতাম, সেক্ষেত্রে এই সিটের ভাড়া ছিলো ১৫০ তারপর করোনাকালীন সময়ের কারণে গতবছর বেড়ে হলো ১৭০ টাকা আর বর্তমানে নেওয়া হচ্ছে ২২০ টাকা। উপায় না থাকায় এ ভাড়াতেই যাত্রা করতে হচ্ছে।
সাইদুল নামে ঢাকা রুটের এক যাত্রী বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানোর আগে চাঁদপুর থেকে ঢাকার লঞ্চ ভাড়া ছিলো ডেকে ১১৫ টাকা। তবে এখন নেওয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা।
এর আগে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে করোনাকালীন সময়ে লঞ্চের ভাড়া আশিংক বাড়লেও এবার ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ভাড়া নিয়ে লঞ্চ স্টাফদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়াতে দেখা গেছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষদের।
তবে লঞ্চ মালিক প্রতিনিধিরা বলছেন, লঞ্চের ভাড়া বাড়লেও খরচ পুষিয়ে উঠতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে লঞ্চের খরচ বেড়ে গেছে। মূলত সে কারণেই ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। পূর্বে ডেকের ভাড়া ছিলো ১১৫ টাকা যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকায়, নিচের চেয়ার ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০ টাকা, নন-এসি সিঙ্গেল কেবিন ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০০ টাকা, ডাবল কেবিন ১ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১২শ’ টাকা, এসি সিঙ্গেল কেবিন ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০০টাকা এবং ডাবল কেবিন ১২শ’ টাকা থেকে ১৪শ’ টাকা হয়েছে। এ ছাড়াও ভিআইপি কেবিন ও বিজনেস ক্লাসের ভাড়া লঞ্চ অনুযায়ী একেকরকম নেওয়া হচ্ছে।