রিয়াজ শাওন:
হাজীগঞ্জ বাজারস্থ কোহিনুর আবাসিক হোটেলের মালিক আরিফ খন্দকার (৩৩) এর বিরুদ্ধে চাঁদপুর আদালতে পর আরো একটি ধর্ষণের মামলা হয়েছে যশোরের আদালতে। গত রোববার (২২ জানুয়ারি) যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার এক নারীকে সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে যশোর আদালতে খন্দকার আরিফসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোঃ গোলাম কবির সিআইডি যশোরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত আরিফ হোসেন (৩৩) হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের নাটেহরা গ্রামের খন্দকার বাড়ির মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে।
মামলায় ওই নারী উল্লেখ করেছেন, আসামি আরিফ খন্দকারের সাথে তার ফেসবুকে পরিচয় হয়। কথাবার্তার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে তৈরি হয় প্রেমের সম্পর্ক। গত বছরের ১৭ নভেম্বর আরিফ যশোরে এসে ওই নারীর সাথে দেখা করেন। পরের দিন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমকে হাজীগঞ্জে নিয়ে আসেন। সেখানে আরিফের নিজস্ব কোহিনুর আবাসিক হোটেলে নিয়ে আটকে রাখেন। এরপর ওই দিন রাত ৯টায় তিন আসামিই তার কাছে যান। সেখানে ওই নারীকে আরিফ জানান, ডাক্তার রনির কাছে তাকে চার লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন এবং তাকে ভারতে পাচার করা হবে। এ কথা শোনার পর ওই নারী পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এতে ওই রাতে তাকে আসামিরা একাধিকবার সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। ওই সময় তাকে মারধরসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সিগারেটের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। পরের দিন কৌশলে ওই নারী পালিয়ে যশোরে চলে যান।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিয়ের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে হাজীগঞ্জ বাজারের কোহিনূর আবাসিক হোটেল মালিক আরিফ হোসেন (৩৩) সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে চাঁদপুর বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুানালে ধর্ষণ, বøাকমেল ও পর্ণগ্রাফি আইনে অভিযোগ দায়ের করেন হাজীগঞ্জের এক নারী। যার মামলা নং ২১/২৩ইং।
বিজ্ঞ বিচারক বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে হাজীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দেন।
এই মামলায় ভুক্তভোগী ওই নারী উল্লেখ করেন, তাকে বিয়ের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরবর্তীতে বিয়ের কথা বললে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং ধর্ষণের ভিডিও স্থিরচিত্র ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় এবং আত্মীয়-স্বজনকে পাঠিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়।
জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি অভিযুক্ত আরিফ খন্দকার আরেক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে রামগঞ্জ উপজেলার খলিফাদর্জা দেখা করতে গেলে। স্থানীয় লোকদের হাতে ধরা পড়ে। পরে স্থানীয়রা রামগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয় এবং মুছলেখা দিয়ে ছাড়া পান আরিফ খন্দকার।
এছাড়াও ২০২২ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলার ১১নং পশ্চিম হাটিলা ইউনিয়নের ঢড্ডা গ্রামের বকাউল বাড়ির এক গৃহবধূর সাথে পরকীয়া সম্পর্কে গড়ে তোলে আরিফ খন্দকার (৩৩)। এতে ঐ গৃহবধূর ডির্ভোস হয়।