হাইমচর প্রতিনিধি:
হাইমচর উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙ্গা গ্রামে ও উত্তর ইউনিয়নের ছোট ল²ীপুর গ্রামে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই চালু করা হয়েছে আল-আকসা মডেল একাডেমি ও নেকসা মডেল একাডেমি নামে দুটি শিশু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় কয়েকজন যুবক ও প্রবাসীদেরকে অংশীদার নিয়ে মেঘনা সমবায় সমিতি এই বিদ্যালয় পরিচালনা করছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে শুরু হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম। তবে সরকারি পাঠ্যবই না পেয়ে পুরাতন বই দিয়ে পাঠদান করছেন। ছাড়পত্র ছাড়া নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পাশ্ববর্তী চরভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও ভর্তি করেছেন এই বিদ্যালয়ে।
সরেজমিন ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু থেকে প ম শ্রেণী পর্যন্ত ৬ শ্রেণির পাঠদান চালু করা হয়েছে। সেমিপাকা বিদ্যালয়টির সম্পত্তি স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন জুয়েলের কাছ থেকে ১০ বছরের জন্য ভাড়া নেয়া হয়েছে। ৮জন শিক্ষক একাডেমিতে পাঠদান করছেন। ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯০জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে প্রতিষ্ঠানে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোরশেদ আলম জানান, পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তেই অনুমোদন ছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। তবে এটি করা ঠিক হয়নি। তারা অনুমোদনের জন্য এবং পাঠ্য বই পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন করবেন। ছাড়পত্র ছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়েছে তা সঠিক। তবে এসব শিক্ষার্থী আমাদের পরিচালনা পর্ষদ পরিবারের সন্তান।
স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল গাজী জানান, এখানে স্কুল হয়েছে হঠাৎ করে। এলাকাবাসীর সাথে যোগাযোগ করতে দেখিনি। অনুমোদন নেই এখনই জানতে পারলাম। এদের স্কুল প্রতিষ্ঠার কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন হাইমচর উপজেলা সভাপতি তাজুল ইসলাম জানান, আল-আকসা কিন্ডার গার্টেন একাডেমি হয়েছে আমরা জানতে পেরেছি। তবে তারা অনুমোদন ছাড়া স্কুল চালুর পাশাপাশি কিছু অনিয়মও শুরু করেছে। পাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছাড়পত্র ছাড়া ভর্তি করিয়েছেন। সে সম্পর্কে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের সাথে তাদের কোন যোগাযোগ নেই।
হাইমচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনির উজ্জামান জানান, আমরা কোন কিন্ডারগার্টেন অনুমোদন দিতে পারি না। ২০২২ সালে সরকার কোনো প্রকার বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার না করার জন্য জোড় দিয়েছেন। কিন্তু তারা আমাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি না নিয়েই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছাকাছি এ প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তুলেছে। এ বছর তারা পাঠ্য বই পায়নি। বিষয়টি আমি জানতে পেরে দুইজন সহকারী সহকারী শিক্ষা অফিসার কয়েকদিন আগে আল-আকসা মডেল একাডেমি নামে ওই প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়েছি। মিজানুর রহমান ও জুলফিকার নামে দুইজন শিক্ষা অফিসার তদন্ত করে দেখেছেন বইগুলো পুরনো, তারা কোন ভাবে সংগ্রহ করেছে। এই বছরের নতুন কোন বই তাদেরকে দেয়া হয়নি।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চাই থোয়াইহলা চৌধুরী জানান, আল-আকসা মডেল একাডেমি নামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করার জন্য আবদেন করা হয়নি। কাউকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার অনুমতি দেয়া হয়নি। এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বলতে পারবেন।
প্রথম পাতায় ২ কলামে।
হাইমচরে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়
টাকার বিনিময়ে সেবা প্রদানের অভিযোগ
মোঃ সবুজ হোসাইন
হাইমচর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে টাকার বিনিময়ে সেবা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এ কার্যালয়ের বিজিটর অফিসার মেহরুননেছা ও আয়া ইতি রানী মজুমদারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন সেবা গ্রহীতা এক মহিলা। দীর্ঘ মেয়াদি গর্ভ নিরোধক পদ্ধতি আইইউডি (কপারটি) খুলতে আসা সেবা গ্রহীতা মহিলার কাছ থেকে ৫শ টাকা দাবি করেন এ কর্মকর্তারা। দাবিকৃত পাঁচশত টাকা দিতে না পারায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইইউডি (কপারটি) না খুলোই চলে আসতে হয় তাকে। এমন অভিযোগ করেছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুখিয়া গ্রামের নাজমা বেগম ফাতেমা।
নাজমা বেগম ও ফাতেমা জানান, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আইইউডি (কপারটি) ব্যবহার করার কিছুদিন পর তার বøাড বের হতে থাকে। তাই তিনি তার নিকটতম পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে হাইমচরে আসেন। এখানে এসে তিনি কর্তব্যরত মেহরুননেছার কাছে তার সমস্যার কথা খুলে বলেন। তিনি সেবা গ্রহীতা নাজমা বেগমকে (কপারটি) কাঠি খুলে পেলার পরামর্শ দেন। তখন নাজমা বেগম তাকে কাঠি খুলতে বলেন। বিজিটর মেহেরুন্নেছা ও আয়া ইতি রানী মজুমদার সেবা গ্রহীতার কাছ থেকে ৫০০ টাকা দাবি করেন। তিনি টাকা দিতে না পারায় তারা তার কাঠিটি খুলতে রাজি হননি। সেবা গ্রহীতা মহিলা নাজমা বেগম ও তার সাথে থাকা ফাতেমা বেগম অভিযুক্তদেরকে একশত টাকা দিতে রাজি হন। মেহেরুন্নেছা ও অফিস সহকারি ইতি রানি মজুমদারকে তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় তারা তার কাঠি খুলে দেন নি।
অভিযুক্ত উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের বিজিটর মেহেরুন্নেছা জানান, নাজমা বেগম (কপারটি) কাঠি খুলতে আমাদের এখানে এসেছিলেন। আমাদের এখানে কাঠি খোলার কোন নিয়ম নাই। আমরা তার সাথে দুষ্টামি করেছি।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারি অফিসার তন্ময় বনিক জানান, এমন ঘটনা যদি কোন সেবা গ্রহীতার সাথে ঘটে থাকে তাহলে তাদেরকে বলেন আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।