স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুরে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতারণার দায়ে পরীক্ষার্থী মো. ইয়াছিন হোসেনসহ দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ লাইনস থেকে ইয়াছিনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে অভিযান চালিয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা থেকে ওমর ফারুক নামের আরেক যুবককে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মো. ইয়াছিন শাহরাস্তি উপজেলার নাহারা গ্রামের মো. আবুল হাশেমের ছেলে এবং ওমর ফারুক হাজীগঞ্জ উপজেলার সুহিলপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
পুলিশ জানায়, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চাঁদপুর পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে চাকুরী প্রার্থী মো. ইয়াছিন হোসেন উপস্থিত হয়। তিনি ৫ ফেব্রæয়ারি শারীরিক বাচাই পর্বে উত্তীর্ণ হয়। পরবর্তীতে ৬ ফেব্রæয়ারি শারীরিকসহ অন্যান্য পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় আজ সকালে পুলিশ সুপারের কৃতকার্য লেখা সীল ও স্বাক্ষর জাল করে প্রবেশপত্র নিয়ে পুলিশ লাইন্সে প্রবেশ করেন। পরে সন্দেহ হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হলে তিনি প্রতারণার কথা স্বীকার করেন এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হাজীগঞ্জ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে নকল সীল তৈরি করে দেওয়া যুবক ওমর ফারুককেও গ্রেফতার করা হয়।
পরীক্ষার্থী ইয়াছিন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের জন্য এক দালালের সাথে ৩শ টাকা ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ৮ লাখ টাকা চুক্তি করে ইতোমধ্যে নগদ ৩ লাখ টাকা প্রদান করেন। পুলিশ ওই দালালের বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই ঘটনায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, চাঁদপুরে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাছাই পর্ব চলছে। এখান থেকে ৯৩ জনকে নির্বাচিত করা হবে। আবেদনকারীদেরকে পরীক্ষা অংশগ্রহণের জন্য প্রবেশপত্র দেয়া হয়েছে। তিন দিন ধরে শারীরিক বাছাই পর্বের কাজ চলছে। প্রথম দিনের শারীরিক পরীক্ষায় সবগুলো ইভেন্টে উত্তীর্ণ হলে দিনশেষে আমরা একটি কাগজে স্বাক্ষর করে দেই, যেটা পরের দিনের প্রবেশপত্র হিসেবে কাজ করে। এমন একটি ইভেন্টে গতকাল একজন ফেল করেছে, সে ফেল করায় তাকে আমরা বের করে দিয়েছি। সে বাহিরে একটি কম্পিউটার দোকান থেকে নিজের আইডি দিয়ে লগইন করে আরেকটি কাগজ বের করে। সে নিজে সবগুলো সিল তৈরি করে আমার সাইন নকল করে মাঠে প্রবেশ করেছে। পরবর্তীতে আমরা তাকে আটক করি। কারণ প্রতিদিনের শারীরিক পরীক্ষায় সবগুলো ইভেন্টে উত্তীর্ণদের ডাটাবেজ আমাদের কাছে রয়েছে। কোন প্রকার ছলছাতুরি বা ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, যখন আমাদের ডাটাবেজের সাথে এই ছেলের প্রবেশপত্রের অমিল পেলাম, তখন তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরবর্তীতে সে সব স্বীকার করে। যার মাধ্যমে সিল তৈরি করেছে আমরা তাকেও আটক করেছি। এছাড়াও সিল তৈরি কারককে আটক করতে গিয়ে আরও কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে, সে ৮ লক্ষ টাকায় পুলিশের চাকরি দিবে বলে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে একজনের সাথে চুক্তি করেছে এবং ৩ লক্ষ টাকা নিয়েছে। যে ব্যক্তি তাকে টাকা দিয়েছে পুলিশের চাকরির জন্য আমরা তাকেও খুঁজছি। খুঁজে পেলে আমরা তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
গত ৫ ফেব্রæয়ারি থেকে চাঁদপুর জেলায় পুলিশের কনস্টেবল পদে জন্য পরীক্ষায় শুরু হয়। পরীক্ষায় মোট ৩ হাজার ২৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রাথমিক বাছাই শেষে ৫৪০ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিবে। চূড়ান্ত বাছাই শেষে এ পদে ৯৩ জনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ প্রদান করা হবে।