স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুরে উৎসবমূখর ও আনন্দঘন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুই দিনব্যাপী জেলা সাহিত্য মেলা শুরু হয়েছে। জেলা পর্যায়ের সাহিত্যিকদের সৃষ্টিকর্ম জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার লক্ষ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলা একাডেমির উদ্যোগে এ মেলার এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতকাল (১১ ফেব্রæয়ারি) শনিবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ সাহিত্য মেলায় বিভিন্ন বয়সের দুই শতাধিক সাহিত্যিক অংশগ্রহণ করেন। সাহিত্য মেলাকে ঘিরে জেলার সকল পর্যায়ের সাহিত্যিক ও সাহিত্য প্রেমীদের মিলনমেলা ঘটে।
চাঁদপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত চাঁদপুর সাহিত্য মেলার উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। এর আগে বেলা ১১টায় সাহিত্য মেলা উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দেশবরেণ্য কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলা একাডেমির পরিচালক এবং দেশবরেণ্য লেখক ড. আমিনুর রহমান সুলতান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাহিত্য মেলার সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমতিয়াজ হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সাহিত্য হতে পারে অন্যতম বড় হাতিয়ার। কারণ, সাহিত্য যে আলো বহন করে সে আলো অন্যের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। সাহিত্য মানুষকে মননশীল করে তোলে। তাই জেলা পর্যায়ের সাহিত্যের বিকাশ এবং মানুষের মাঝে সাহিত্যের বোধকে জাগ্রত করার লক্ষ্যে সরকার সাহিত্য মেলার আয়োজন করেছে।
তিনি আরো বলেন, চাঁদপুর শিল্পচর্চায় সমৃদ্ধ একটি জেলা। এ জেলার অনেক কৃতিসন্তান সাহিত্যঙ্গণে আলোকিত ব্যক্তিত্ব। চাঁদপুর জেলা সাহিত্য মেলায় অংশ নেয়া সকল সাহিত্যিকদের আমি অভিবাদন জানাই। আপনাদের সুন্দর উপস্থিতি অংশগ্রহণ এ আয়োজনকে সাফল্যমÐিত করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং জঙ্গিবাদমুক্ত অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সবাই একসাথে কাজ করবো। এ সম্মেলন জেলা পর্যায়ের সাহিত্যিকদের সৃষ্টিকর্ম জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার মাধ্যমে দেশের সাহিত্য কর্ম আরও সমৃদ্ধ হবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অসিত বরণ দাস, ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসির আরাফাত, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জে আর ওয়াদুদ টিপু, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দা বদরুন নাহার, মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও দেশবরেণ্য প্রাবন্ধিক ড. সরকার আব্দুল মান্নান, কবি জামশেদ ওয়াজেদ, মনসুর আজিজ, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ুন কবির ঢালী, আহমেদ রিয়াজ, প্রণব মজুমদার অমর সাহা প্রমুথ, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ূব আলী বেপারী, জেলা কালচারাল অফিসার দিতি সাহা, প্রমুখ।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে শুরু হয় প্রবন্ধপাঠ ও আলোচনা। পূর্ব নির্ধারিত প্রবন্ধ পাঠ করেন, পীযূষ কান্তি বড়ুয়া, কাদের পলাশ ও শাহমুব জুয়েল। পঠিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন, সরকর আবদুল মান্নান, সৌম্য সালেক ও মুহাম্মদ ফরিদ হাসান। দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে দ্বিতীয় থাকবে স্বরচিত কবিতা পাঠ সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠান।