স্টাফ রিপোর্টার:
দীর্ঘ দুই মাস নিষেধাজ্ঞার পর গত সোমবার (১ মে) থেকে ইলিশ আহরণে নামে চাঁদপুরের জেলেরা। যদিও নদীতে কাঙ্খিত ইলিশ না পাওয়ায় প্রথম দিন মাছ ঘাট ছিলো ইলিশ শূন্য। তবে প্রথম দিন ইলিশের সরবরাহ কম থাকলেও মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে চাঁদপুরের মাছঘাটে বাড়তে থাকে ইলিশের সরবরাহ।
মঙ্গলবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই চাঁদপুর মাছঘাটে ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় ঘাটে ইলিশ ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। প্রতিটি আড়তের সামনে কম-বেশি ইলিশের স্তূপ লক্ষ্য করা গেছে। কেউ বরফ ভেঙে প্যাকেটজাত করছেন, আবার কেউ ইলিশ সরবরাহের কাজ করছেন। এদিন মাছঘাটে ৩০০ থেকে ৪০০ মণ ইলিশ সরবরাহ হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। যদিও এসব মাছের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলো ভোলা, বরিশাল ও সন্দীপ থেকে আসা। তবে মাছের দামে চড়া বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। এতে মাছ কিনতে হিমছিম খাচ্ছেন তারা।
ক্রেতারা জানান, অভিযানের পর ঘাটে আজ মোটামুটি মাছ দেখা গেছে। তবে মাছের দাম স্বাভাবিক না। এখন মাছের দাম একটু বেশি। আর আড়তদাররা বলছেন, যখন মাছ ধরা পড়বে তখন মাছের দাম কমবে। প্রতি কেজি মাছ ১ হাজার ১০০ টাকা দিরে বিক্রি হচ্ছে।
জামান গাজী নামে এক ক্রেতা বলেন, জাটকা শিকারে টানা দুই মাস সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর আজ চাঁদপুর মাছঘাটে মাছ বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তবে প্রথম দিনে মাছের দাম বেশি থাকায় কিনতে পারলাম না।
ঘাটের আড়তদার সাইফুল ইসলাম জানান, গতকালের তুলনায় আজ মাছ বেশি আমদানি হয়েছে এবং আজ ক্রেতাও বেড়েছে। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর মাছও কিছুটা এসেছে। তবে পরিমাণে কিছুটা কম। আর নোয়াখালী, সন্দীপ ও হাতিয়ার মাছ একটু বেশি এসেছে।
আরেক আড়তদার আনোয়ার হোসেন গাজী বলেন, গতকালের তুলনায় আজকে ইলিশের আমদানি ভাল হয়েছে। মাছের দাম একটু বাড়তি আছে। বর্তমানে সবকিছুর দাম বাড়তি, জেলেদের খরচ বেড়েছে। যার কারণে মাছের দাম বাড়তি।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবেবরাত সরকার বলেন, গতকাল চাঁদপুরসহ সারাদেশে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। কাল চাঁদপুর ঘাটে মাত্র ১শ থেকে দেড়শ কেজি ইলিশ মাছ এসেছিল। আজ একটু বেশি এসেছে। বেশিরভাগ মাছই ছোট। আজ বাজারে ৩০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ২০-২১ হাজার টাকা, ৫০০ গ্রামের উপর থেকে ৮-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৩০-৩৫ হাজার টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ প্রায় ৫০ হাজার টাকা পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এক কেজি ওজনের ইলিশ কম এসেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন মাছের নতুন সিজন। মাছ বড় হবে আরও দুই মাস পর। তখন মাছের আমদামি বাড়বে। মূলত ইলিশের সিজন হচ্ছে জুন, জালাই ও আগস্ট মাসে। এই সময়ে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ে। সরকার যেই অভিযান দিয়েছে তা মোটামুটি সফল হয়েছে।