এম এ লতিফ:
ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় আগামি ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ‘ইলিশ প্রজনন মৌসুম’। আর এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চাঁদপুর মৎস্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা। তবে এ কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে এবছর সর্বোচ্চ ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান।
তিনি বলেন, আশা করছি এ বছর অন্যান্য বছরের ন্যায় দেশের সকল নদ-নদীতে ইলিশ নিরাপদে বিচরণ করে নির্বিঘেœ ডিম ছাড়বে। তাছাড়া গেলো বছরও পৌনে ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদিত হয়েছিল। সেই হিসেবে এ বছরও আমরা আশা করছি ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা যে পদ্ধতি অবলম্বন করে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি ও মা ইলিশ রক্ষা কর্মসূচি পালন করছি, এতে করে প্রতিবছরই আমাদের ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ২০১৯ সালে ৫ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০ সালে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন ও ২০২২ সালে ৫ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল। এই পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতিবছরই আমাদের ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত বছর ইলিশ প্রজনন মৌসুমেও ৫১.৭৬ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছিল। তাই আমরা আশা করছি এবছর আরো বেশি পরিমানে ডিম ছাড়বে মা ইলিশ। তবে সেটি বাস্তবায়নে আসন্ন ইলিশ প্রজনন মৌসুমে দেশের ৬টি অভয়াশ্রম এলাকা সুরক্ষিত রাখতে হবে। যাতে করে অসাধু জেলেরা ইলিশের ডিম ছাড়ায় বাঁধা হয়ে না দাঁড়ায়।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুরে ৪৪ হাজার ৩৫ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এবছর প্রজনন মৌসুমে নদীতে না নামার জন্য তাদেরকে সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে প্রজনন মৌসুম শুরুর সাথে সাথেই নিবন্ধিত ৪৪ হাজার ৩৫ জেলেকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। এছাড়াও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, এবছর আমরা ইলিশ প্রজনন মৌসুমের সফলতা পেতে সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করছি। বিশেষ করে স্থানীয় মৎস্য বিভাগসহ জেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও জণপ্রতিনিধিরাও যথেষ্ট থাকবেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক ইলিশ ডিম ছাড়বে ও সর্বোচ্চ ইলিশ উৎপাদন হবে।