বিল্লাল ঢালী:
চাঁদপুর জেলায় ৩১টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নেই নারকোটিক পারমিট। এতে বিশেষ প্রয়োজনে প্যাথেড্রিন, মরফিন, রেক্টিফাইড স্পিরিট ব্যবহারে নীতিমালা মানা হচ্ছে না। চাঁদপুরে ৬৮টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মধ্যে ৩৭টি নারকোটিক পারমিট থাকলেও বাকী প্রতিষ্ঠানগুলোর নেই। অর্থাৎ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই চলছে অর্ধেক হাসপাতাল ও ক্লিনিক। পারমিট ছাড়াই ব্যবহৃত হচ্ছে প্যাথেড্রিন, মরফিন ও রেকটিফাইড স্পিরিট। এসব অননুমোদিত ড্রাগের ব্যবহার চললেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিস পরিচালনা করেনি কোনো অভিযান। হাসপাতাল পরিচালনার বর্তমান নীতিমালায় নারকোটিক পারমিট বাধ্যতামূলক। তাই অসম্পূর্ণভাবে কাগজপত্রের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে হাসপাতাল মালিক পক্ষ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুসারে কোনো ফার্মেসিতে প্যাথেড্রিন, মরফিন, রেকটিফাইড স্পিরিট মজুত অথবা বিক্রি করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর হতে লাইসেন্স সংগ্রহ করার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া যেসব সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন করা হয় সেসব হাসপাতাল ক্লিনিকে বাধ্যতামূলকভাবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর হতে নারকোটিক পারমিট সংগ্রহ করার বিধান রয়েছে।
অথচ এসব প্রতিষ্ঠান নারকোটিক পারমিট না নেয়ায় মাদক জাতীয় ঔষধের অবাধ ব্যবহার হচ্ছে। বিশেষ করে মাদকসেবীরা এসব হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে সহজেই সংগ্রহ করছে নেশা জাতীয় ঔষধ। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঠিক তদারকির অভাবে যাচ্ছেতাই কার্যক্রম পরিচালনা করছে হাসপাতালের মালিকরা।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা ৬৮টি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সাতটি। মা ও শিশু হাসপাতাল একটি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুর অফিস থেকে জানা যায়, চাঁদপুর জেলায় মাদকদ্রব্য ব্যবহারের পারমিট রয়েছে সরকারি বেসরকারি মিলে মাত্র ৩৭টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের। যা মোট সংখ্যার অর্ধেক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিক বলেন, তারা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পারমিট আগে নিতেন না। হাসপাতাল ও ক্লিনিকে মাদকের নারকোটিক পারমিট বাধ্যতামূলক হওয়ায় কর্মকর্তাদের পরামর্শেই অসম্পূর্ণ আবেদন করে রেখেছেন কাল ক্ষেপণের জন্য।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের সহকারী পরিচালক মো. দিদারুল আলম বলেন, হাসপাতাল ও ক্লিনিক একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। তাই আমরা নারকোটিক পারমিট বিষয়টি কঠোরভাবে নিচ্ছি না। এছাড়া হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো মনিটরিংয়ের দায়িত্বে আছেন সিভিল সার্জন মহোদয়। আমি তাকে বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনি প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিদর্শনে যাচ্ছেন। সকল প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্সের আওতায় আনতে কাজ করছেন। তিনি আশ্বস্ত করেছেন সহসাই সব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের আওতায় আসবে।
চাঁদপুর জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শাখাওয়াত উল্যা বলেন, হাসপাতাল ও ক্লিনিক সকল প্রতিষ্ঠান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করেছে। বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সহসাই লাইসেন্সের আওতায় আসবে।