সুমন আহমেদ:
আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলাতে গ্রামীণ এ জনপদের দ্বীনি শিক্ষার আলো ছড়ানোর প্রয়াসে ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে আউলিয়াবাগ দাখিল মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসাটি মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার ঠাকুরচরে অবস্থিত। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা ও শিক্ষানুরাগী ইব্রাহীম খলিল। তিনি এলাকার সর্বস্তরের জনগণের সার্বিক সহযোগিতায় দ্বীনি শিক্ষার আলো ছড়াতে এ দাখিল মাদ্রাসা স্থাপন করেন। কিন্তু আসবাবপত্রের অভাব, শিক্ষক সংকট, শ্রেণিকক্ষের সমস্যাসহ নানা সমস্যায় এখনো আলোর মুখ দেখেনি ওই মাদ্রাসাটি। এমনকি প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৫ বছর পার হলেও এখনো সরকারি কোন উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি মাদ্রাসাটি। অথচ লেখাপড়া ও ফলাফলের দিক থেকে অনেক সাফল্য থাকলেও নানান সমস্যাকে সঙ্গী করে এগিয়ে চলছে দ্বীনি শিক্ষার এ বিদ্যা প্রতিষ্ঠানটি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ টিনসেড ঘরে ১ম শ্রেণি থেকে দাখিল ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করছে। জরাজীর্ণ টিনসেড ঘরে চলছে শ্রেণির কার্যক্রম। শ্রেণি কক্ষে নেই দরজা, জানালা, পর্যাপ্ত চেয়ার টেবিল ও বৈদ্যুতিক পাখা। শিক্ষকদের বেতনও বকেয়া কয়েক মাসের।
আলাপকালে জানা গেছে, মাদ্রাসার ফলাফল সন্তোষজনক। কিন্তু এখনও হয়নি এমপিওভূক্ত। বিভিন্ন অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েরা এ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছে। বর্তমানে মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শ্রেণিকক্ষের অভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া মাদ্রাসায় বহু শিক্ষকের পদ শুণ্য রয়েছে।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, শ্রেণিকক্ষের অভাবে পাঠদান করানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। ভবনসহ মাদ্রাসার বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার আবেদন করেছি। একটি ভবন এসেছে। কিন্তু এখনও কাজ শুরু হয়নি। বেতন অপ্রতুল তাও আবার অনেক মাসের বাকী। এমপিওভূক্ত হবে এ আশায় বসে থেকে সার্টিফিকেটের বয়সও চলে যাচ্ছে।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম খলিল জানান, ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও দ্বীনি শিক্ষার এ মাদ্রাসার প্রয়োজনের তুলনায় সরকারি বরাদ্দ তেমন পাওয়া যায়নি। যা পেয়েছি তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম। অথচ এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে চাকরি করছেন অনেকেই। যার সুবিধাভোগী এই দেশ, জনগণ এবং সরকার। তাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সু-দৃষ্টি কামনা করছি মাদ্রাসাটির উন্নয়নের জন্য।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম খান জানান, মাদ্রাসার পাকা ভবনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব অ্যাড. নূরুল আমিন রুহুল এমপির মাধ্যমে একটি ভবন বরাদ্দ এসেছে। পর্যায়ক্রমে সকল সমস্যার সমাধান করা হবে।