স্টাফ রিপোর্টার:
‘জাটকা এবং মা ইলিশের পাশে আমরা আছি প্রতিটি নিঃশ্বাসে’ এ শ্লোগানেকে হৃদয়ে ধারণ করে এ বছরের চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে ১৪তম জাতীয় ইলিশ উৎসবের চতুর্থ দিন গতকাল সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অতিবাহিত হয়েছে। এদিন বিকেল ৪টায় সেরা নাচিয়ে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন রাশেদুল রাব্বি, অথৈ সরকার, শুভ দাস। বিচারকদের বিবেচনায় বিজয়ী হয়েছে দোলা দাস দেওয়ান, রুবাইয়া ইসলাম রুবা, সোহানা, নাজনীন, কথা পাল।
বিকেল ৫টায় জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ মৌসুমে সকল মাছ ধরার নৌকা প্রশাসনের হেফাজতে রাখা জরুরি বিষয়ক মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের কার্যকরি কমিটির সদস্য ও বিজয় টিভির স্টাফ রিপোর্টার এবং চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি সোহেল রুশদী। সভা পরিচালনা করেন চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সাধারন সম্পাদক কাদের পলাশ।
চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সদস্যরা বক্তব্যে বলেন, জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা মৌসুমে যদি সঠিকভাবে আইন-শৃঙ্খলার প্রয়োগ করা হয় তাহলে জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা করা সম্ভব। জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা মৌসুমে জেলেদের কতগুলো নৌকা এবং নিবন্ধিত জেলে আছে তা প্রসাশনের কাছে তালিকা থাকা প্রয়োজন। জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা মৌসুমে নৌকাগুলো প্রশাসনের আওতায় রাখলে জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় সুফল আসবে। ইলিশের অভায়াশ্রমে নজরদারি জোরদার করা প্রয়োজন। অসাধু জেলেরা কারেন্ট জাল ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি ইলিশ নিধন করে। এ অসাধু জেলেরা এমন হাই স্প্রিট ইঞ্জিন নৌকায় ব্যবহার করে। বক্তারা বলেন, চাঁদপুরে এখন ইলিশ নেই। বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা চাঁদপুরের ইলিশ ভেবে কিনে নিচ্ছি দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ। চাঁদপুর ইলিশের বাড়ি নামে খ্যাত। সত্যিকার অর্থে চাঁদপুরের নদীতে ইলিশ নেই। এক সময় এক বাড়িতে ইলিশ ভাজা হলে ঘ্রাণে পুরো এলাকা মৌ মৌ করতো। আর এখন ইলিশ ভাজার সেই ঘ্রাণ নেই। চাঁদপুরের পদ্মা মেঘনা নদীতে পাহাড়া দিয়ে জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা করা সম্ভব নয়। আমরা সবাই যদি সচেতন হই তাহলেই মা ইলিশ ও জাটকা রক্ষা করা সম্ভব হবে। এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। আজ থেকে ১৪ বছর আগে চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের মহা সচিব ও ইলিশ উৎসবের রূপকার হারুন আল রশিদ যা শুরু করেছেন। আমরা যদি দেশকে ভাল না বাসি তাহলে জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা করা সম্ভব হবে না। জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা করতে হলে আগে কারেন্ট জাল উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। চাঁদপুর থেকে চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ৭০ কিঃমিঃ নদী কে তদারকি করবে? এটা সম্ভব না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জেলেদের কে সচেতনতায় কাজ করতে হবে। তবেই জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা করা সম্ভব হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও আর টিভির স্টাফ রিপোর্টার শরীফ চৌধুরী, কার্যকরি কমিটির সদস্য ও দেশ টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি লক্ষণ চন্দ্র সূত্রধর, কার্যকরি কমিটির সদস্য ও এখন টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার তালহা জুবায়ের, সদস্য ও ডিবিসি নিউজের চাঁদপুর প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম আতিক, বাংলা টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি ইকবাল বাহার।
সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ল²ীপুর লতিকা নৃত্যালয় নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করে। ডাঃ শুভ দাসের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করে শুভ দাস, দোলা দাস দেওয়ান, টুকটুক, ত্রয়ীসহ নৃত্য শিল্পীরা। পরে উদয়ন সংগীত বিদ্যালয়ের পরিবেশনায় মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। অঞ্জনা সাহার পরিচালনায় সংগীত পরিবেশন করেন অর্পনা দে, দিয়া দাস, ঋত্বিকা প্রশাদ, ধ্রæব ঘোষসহ আরো অনেকে। আভা রায় অপুর নৃত্য পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করে পূজা সাহা, কথা সাহা ও জবা দে। যন্ত্র সংগীতে ছিলেন অর্পনা দে, খোকন মজুমদার, অনিক নন্দি। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ দাস। গোল টেবিল বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন অরিন্দম দে, অমিত ভৌমিক, শাওলী রায়। গোল টেবিল বৈঠক শেষে আগরতলা ত্রিপুরা থেকে আসা অরিন্দম দে, অমিত ভৌমিক, শাওলী রায়কে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। রাতে ত্রিপুরার শাওলী রায়ের আবৃত্তি অনুষ্ঠিত হয়। সব শেষে অগ্নীবিনা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। শিপ্রা মজুমদার ও রাখি মজুমদারের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করেন ইশা, মিলি, চাঁদনী, চুমকি, রাশি নাদিয়া, সিয়াম, লিয়ন, রাহুল ও নব।