মো. হোসেন বেপারী:
হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ.স.ম মাহবুব-উল আলম লিপন ও ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী মনির হোসেনের বিরুদ্ধে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তার ফেসবুকে অপ-প্রচার করায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পৌর পরিষদ। পৌর পরিষদের পক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে পৌর মিলনায়তনে সাংবাদিকদের মাঝে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র জাহিদুল আযহার আলম বেপারী।
এর আগে গেল সোমবার বিকেলে নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তার তার ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট ও মঙ্গলবার দুপুরে লাইভে এসে পৌর মেয়র ও ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এছাড়াও ওই পোস্ট ও লাইভে তিনিও তার স্বামীকে হুমকি প্রদান করায় তারা নিরাপত্তাহীনায় ভুগছেন বলে উল্লেখ করেন কাউন্সিলর মিনু আক্তার। তারপর নড়ে ছড়ে বসেন পৌর পরিষদ।
পৌর পরিষদের দাবি মিনু আক্তার মিথ্যা, বানোয়াট, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছে। যা অনাকাঙ্খিত, অনভিপ্রেত এবং জনপ্রতিনিধি হিসাবে শৃঙ্খলা পরিপন্থী। একটি মহল হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে পৌরসভা ও মেয়রের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য তাকে ইন্ধন দিয়ে আসছে।
নিন্দা জানিয়ে পৌরসভার কাউন্সিলরগণ বলেন, সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে আমান উল্যাহ্ মৃধাসহ ৫ জন ব্যক্তি বাদী গত ৩১ জুলাই পৌরসভায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ২নং বিবাদী ছিলেন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তারের বাবা আনোয়ার হোসেন ছিডা। পরবর্তীতে অভিযোগটি নিরসনকল্পে ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী মনির হোসেন ও ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজী মো. কবির হোসেনকে দায়িত্ব প্রদান করেন পৌর মেয়র।
দায়িত্ব পেয়ে কাউন্সিলরগণ অভিযোগের বাদী ও বিবাদীকে পরপর ৩টি লিখিত নোটিশ জারী করেন। ওই নোটিশে প্রেক্ষিতে বাদী পক্ষ উপস্থিত থাকলেও বিবাদী পক্ষ অনুপস্থিত থাকেন। এতে বিবাদীপক্ষ অনুপস্থিত থাকার কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলরগণ বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়নি মর্মে মেয়রের কাছে একটি লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে ষড়যন্ত্রের চক আঁকেন ২নং বিবাদী আনোয়ার হোসেন ছিডার মেয়ে নারী কাউন্সিলর মিনু আক্তার।
মিনু আক্তারের দেয়া বক্তব্যের জবাবে বক্তারা আরো বলেন, গত ৩১ তারিখে পৌর পরিষদের মাসিক সাধারণ সভায় মিনু আক্তার উপস্থিত হলেও উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে সে হাজিরা শীটে স্বাক্ষর না করে চলে যায়।
প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাহিদুল আযহার বলেন, মিনু আক্তারের যদি কোন অভিযোগ থাকে, তাহলে তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে এ ধরনের অনাকাঙ্খিত, অনভিপ্রেত এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাÐে জড়িয়ে মানহানি করছে । এসব ঘটনার ইন্ধনকারীদের শাস্তি দাবিসহ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতাও কামনা করেন প্যানেল মেয়র।
পরিষদের অন্যান্য নারী কাউন্সিলররা বলছেন, পৌর মেয়র তাদের সন্তানের মতো দেখছেন। তিনি সকল বিষয়ে স্ব-স্ব ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সাথে সমন্বয় করে সকল দায়িত্ব প্রদান করছেন। অথচ মিনু আক্তার উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে কু-রুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করায় লজ্জিত হলাম সবাই। মিনু আক্তার মানসিকভাবে সুস্থ আছে কিনা এমন প্রশ্ন তোলেন পৌর পরিষদ?
এসময় হাজীগঞ্জ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান, কাউন্সিলর মাইনুদ্দিন মিয়াজী, আলাউদ্দিন মুন্সী, সুমন তপদার, মোহাম্মদ শাহআলম, কাজী মনির হোসেন, হাজী মো. কবির হোসেন, মো. আজাদ হোসেন, মো. বিল্লাল হোসেন, মো. সাদেকুজ্জামান মুন্সী ও মো. শাহআলমসহ পৌরসভার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।