স্টাফ রিপোর্টার:
হাজীগঞ্জ উপজেলার কালচোঁ ইউনিয়নের ভাটরা গ্রামে স্ত্রী ফারহানা বেগম পান্নাকে (২৪) নির্যাতন ও পেটে লাথি মেরে হত্যার দায়ে স্বামী মো. শাহজাহান প্রধানকে (৪৩) মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল সোমবার দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় দেন।
হত্যার শিকার ফারহানা একই ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির মো. আলী আকবর পাটওয়ারীর মেয়ে। আর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি শাহজাহান প্রধান ভাটরা গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মৃত আব্দুস ছাত্তারের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৫ সালে ফারহানা ও শাহজাহানের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসার জীবন ভালই চলছিল। ঘটনার সময় তাদের মাহবুব (৩) নামে পুত্র ও মীম নামে দেড় বছর বয়সি কন্যা সন্তান ছিল। ঘটনার কিছুদিন পূর্ব থেকে শাহজাহান সৌদি আরব যাওয়ার জন্য স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।
ঘটনার দিন ২০০৯ সালের ৭ জুন বিকেলে নিজ বসতঘরে শাহজাহানের সাথে তার স্ত্রীর যৌতুক নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রীকে শারিরীক নির্যাতন ও তলপেটে লাথি মারে শাহজাহান। এতে ফারহানা মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে এবং অজ্ঞান হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ফারহানার ভাই ফারুক আহম্মদ পাটওয়ারী বাদী হয়ে শাহাজাহান প্রধানকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীতে ওই মামলাটি ২০০৯ সালের ১০ ডিসেম্বর চাঁদপুর নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের হয়। বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন সিআইডি চাঁদপুরের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীরকে। তিনি তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৭ মার্চ শাহজাহানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু বলেন, দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। স্বাক্ষী ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন বিচারক। মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবদুল মান্নান খান মহিন।