মোঃ সবুজ হোসাইন:
হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী বাজার লঞ্চঘাটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ৩০টি দোকানসহ দুটি বসতঘর পুড়ে গেছে। এছাড়া আরও ৩০টি দোকান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২০-২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টায় ইসলামিয়া হোটেল থেকে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে ধারণা করছেন তারা। এতে মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা পার্শ্ববর্তী মুদী দোকান, পেট্রোল ডিজেল দোকান, গ্যাস সিলিন্ডার দোকানে ছড়িয়ে পড়লে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সংবাদ পেয়ে হাইমচর ও পার্শ্ববর্তী রায়পুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনীর ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোয়াইহলা চৌধুরী, হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহবুবুর রহমান মোল্লা ও উপজেলা আ.লীগ সভাপতি হুমায়ুন প্রধানীয়াসহ জনপ্রতিনিধিরা। এসময় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সান্ত্বনা দেন তারা।
ক্ষতিগ্রস্ত মুদি ব্যবসায়ী দিদার ইসলাম বাবু জানান, রমজান মাসকে সামনে রেখে অনেক মালামাল ক্রয় করে রেখেছি। আমার সব শেষ। আমি এখন নিরুপায়।
ক্ষতিগ্রস্থ আরেক ব্যবসায়ী ফাহিমা আক্তার বলেন, তিল তিল করে জমানো একমাত্র সম্বল আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ব্যাংকের লোন, সংসার কি করে চলবে। এটা ভাবতেই বুকটা ফেটে যাচ্ছে। তিনি কান্নাজড়িত হয়ে আরোও বলেন, আমার ভাই সৈয়দ আহমেদের কসমেটিক্স ও মোবাইলের দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে। আমাদের ৩ দোকানে প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। সরকার যদি আমাদেরকে সহযোগিতা না করে ছেলে সন্তান নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
উপজেলা আ.লীগের সভাপতি হুমায়ুন প্রধানীয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের সময় হঠাৎ চরভৈরবী বাজারে আগুন লেগে বাজারের ৪০টিরও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে চাই হয়েছে। আরোও ৩০টি দোকান ক্ষতি হয়েছে। আমরা ধারণা করছি এতে প্রায় ২০-২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ সকল ব্যবসায়ীরা সব হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের জন্য সহযোগিতা কামনা করছি।
চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপ-সহকারী পরিচালক সাহিদুল ইসলাম জানান, একটি খাবারের হোটেল থেকে এ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত বলে আমরা জানতে পেরেছি। ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট প্রায় দুই ঘণ্টা কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
তিনি বলেন, মূলত ওই বাজারে খোলা ডিজেল, কেরোসিন দোকানের সংখ্যা বেশি। এছাড়া গ্যাস সিলিন্ডারের অনেকগুলো দোকান রয়েছে। আর এতেই আগুন খুব দ্রæত সময়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকান্ডের ৩০টি দোকানের মত পুরো ছাই হয়ে যায়। এছাড়াও আরো ৩০টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।