স্টাফ রিপোর্টার:
হাইমচর উপজেলার ১ নং গাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদে জেলেদের ৪০ কেজির পরিবর্তে ৩০ কেজি চাউল দেয়ার প্রতিবাদ করায় সোহেল মাঝি নামে একজনের উপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও কেহ কেহ বলছেন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
জনা যায়, গত শুক্রবার বেলা ১১টায় গাজিপুর ইউনিয়নে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান গাজি। এ সময় চাল নেয়ার জন্য অটো নিয়ে আসেন জেলে আহসান গাজী। অটোর ড্রাইভার হাসেম সরদার অটোটি পরিষদের সামনে রাখায় অন্য আরেক অটো ড্রাইভারের সাথে কথা কাটাকাটি হলে চেয়ারম্যানের ছেলে আবু তাহের গাজি ড্রাইভারকে মারধর করেন। ড্রাইভারের সাথে থাকা সোহেল মাঝি প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যানের ছেলেরাসহ পরিষদের লোকজন তাকে মারধর করে। পরে সোহেল মাঝির পরিবারের লোকজন সংবাদ পেয়ে পরিষদে আসলে চেয়ারম্যান হাবু গাজিসহ তার ছেলেরা তাদের উপর হামলা করলে উভয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান গাজির ৪ ছেলেসহ ১০ জন আহত হয়। আহতরা সবাই হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এদিকে প্রতিবাদকারী সোহেল মাঝির অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে হাইমচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
গুরুতর আহত সোহেল মাঝির ভাতিজা ছিদ্দিক মাঝি জানান, সোহেল মাঝি তার আত্মীয় এক জেলের সাথে পরিষদে গিয়েছিলেন। সেখানে ৪০ কেজি চালের পরিবর্তে ৩০ কেজি চাল দেয়ায় সোহেল প্রতিবাদ করে। এতে চেয়ারম্যানের ছেলেরা তার উপর হামলা চালায়। চেয়ারম্যানের লোকজনের হামলায় সোহেল মাঝি গুরুতর আহত হন। সোহেল মাঝি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান গাজি পরিষদের আসবাবপত্র ভেঙ্গে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সুষ্ঠ তদন্ত করে আইণি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য তিনি প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।
অটো ড্রাইভার হাসেম সরদার জানান, পরিষদের সামনে অটো রাখলে অন্য আরেক অটো ড্রাইভার আমার সাথে কথা কাটাকাটি করলে চেয়ারম্যানের ছেলে আমাকে মারধর করতে থাকে। আমার সাথে থাকা সোহেল মাঝি প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের ছেলেরা তাকে পরিষদের ভিতরে নিয়ে নির্যাতন করে। পরে সোহেলের পরিবার ঘটনাটি জানতে পেরে পরিষদে আসার সাথে সাথে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান গাজিসহ তার ছেলেরা আমাদের উপর হামলা চালায়।
ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান গাজির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাল দেয়া অবস্থায় পরিষদে এসে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে। আমি এসে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।
এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর রশিদ জানান, গাজিপুর ইউনিয়নে চাল দেয়ার সময় সংঘর্ষের সংবাদ পেয়েছি। ওই সময় আমি নদীতে অভিযানে ছিলাম।
হাইমচর থানা এ এস আই প্রাণ কৃষ্ণ জানান, ১ নং গাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদে সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তিনি জানান, অটো রাখাকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি বড় আকারে রূপ নিয়েছে।