প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
সুবিধাবঞ্চিত জনগণের দোড়গোড়ায় উন্নত চক্ষুুসেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে হাইমচর উপজেলার আলগী বাজারে স্থায়ী ‘চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্র’ নামে একটি উইমেন লীড গ্রীন ভিশন সেন্টার গতকাল রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। ঙৎনরং ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ইধহমষধফবংয-এর সহযোগিতায় চাঁদপুরের মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল এই ভিশন সেন্টারটি পরিচালনা করবে। সৌর বিদ্যুৎ চালিত এ ভিশন সেন্টারে নিরবিচ্ছিন্নভাবে এ অঞ্চলের মানুষ দূরবর্তী শহরে না গিয়ে সহজেই চোখের আধুনিক চিকিৎসা করাতে পারবেন এবং টেলিকন্সাল্টশনের মাধ্যমে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিতে পারবেন।
এ উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন হাইমচরের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূর হেসেন পাটোয়ারী। হাইমচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাই থোয়াইহলা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ আবু জাফর। অতিথিবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঙৎনরং ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ইধহমষধফবংয-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডাঃ মুনীর আহমেদ, হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন এবং বাগাদী গনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম কামরুল হাসান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, আজ থেকে হাইমচরের জনগণ এই ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে সহজে ও কম খরচে চোখের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারবে। বিশেষ করে যারা চট্টগ্রাম, ঢাকা বা চাঁদপুর শহরে যেতে পারে না, তারা এই কেন্দ্র থেকে একই মানের চিকিৎসা সেবা পাবেন। তিনি ঙৎনরং ও মাজহারুল বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরো ভিশন সেন্টার স্থাপনের অনুরোধ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোইয়হলা চৌধুরী বলেন, গ্রামাঞ্চলে মানসম্মত চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রসারে মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুর চোখের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে এই স্থায়ী ‘চক্ষু চিকিৎসা কেন্দ্র’ তথা ভিশন সেন্টার গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিহনের মাধ্যমে এর প্রচার ও সম্প্রসার করার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং ভিশন সেন্টারের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে এর প্রশংসা করেন।
হাসপাতালের ম্যনেজার এডমিসিস্ট্রেশন শামীম খানের সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা কামাল উদ্দিন খান। স্বাগত বক্তব্যে মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সিনিয়র জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, স্থানীয় জনগণের মাঝে চক্ষু সেবা সম্পর্কে ধারণা দেয়া ও তাদের উন্নত চিকিৎসা দিতে এই ভিশন সেন্টার চালু করা হয়েছে। চক্ষু চিকিৎসায় ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ এই চিকিৎসা কেন্দ্রে নানাবিধ সেবামূলক কর্মকান্ড যেমন, স্বল্পমূল্যে চক্ষু চিকিৎসা, কম্পিউটারে চশমার ব্যবস্থাপত্র ও চশমা প্রদান, শিশুদের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা, চোখের প্রেসার নির্ণয়, শ্লীট ল্যাম্পে চক্ষু পরীক্ষা, টেলিমেডিসিন সার্ভিসের মাধ্যমে বিশেষায়িত চক্ষু চিকিৎসাসহ মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে চোখের ছানী, নেত্রনালী, ফ্যাকো অপারেশনসহ সকল প্রকার অপারেশনের জন্য রোগী বাছাই করা হয়।
Orbis International Bangladesh-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ বলেন, ঙৎনরং ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে উড়ন্ত চক্ষুু হাসপাতালের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করে। সেই থেকে এদেশের চক্ষু সেবার মান উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ সরকারের ন্যাশনাল আই কেয়ার গৃহীত সারা দেশে ২০০টি ভিশন সেন্টার চালু করার পরিকল্পনারই এক অংশ হিসেবে এই ভিশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং শিশু অন্ধত্ব নিরাময়ের পাশাপাশি সমন্বিত চক্ষু চিকিৎসা সেবা সম্পসারে অরবিসের কার্যক্রম তুলে ধরেন। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগী চক্ষু হাসপাতালের মাধ্যমে ঙৎনরং চক্ষুু চিকিৎসকসহ নার্স, প্যারামেডিকস্, মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে। বর্তমানে ঙৎনরং বাংলাদেশে আরওপি, শিশু ও ডায়াবেটিকজনিত অন্ধত্বের উপর গুরুত্ব প্রদান করছে। একই সঙ্গে সব ধরনের পরিহারযোগ্য অন্ধত্ব নিবারণে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের ন্যাশনাল আই কেয়ারের সাথে।
প্রাক মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার সময় হতেই চাঁদপুর ও আশে-পাশের জেলা সমূহে অন্ধত্ব নিবারন, দূরীকরণ এবং চক্ষু রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা একটি অন্যতম সমস্যা হিসেবে পরিগণিত ছিল। বিগত ১৯৭৮ সালে বিশিষ্ট সমাজ হিতৈষী শিল্পপতি, সমাজসেবক ও দানবীর রোটারিয়ান মরহুম মাজহারুল হক ভূঁইয়ার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও উৎসাহী ভূমিকায় ১৯৮২ সালে মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।