কচুয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মানিক ভৌমিক কচুয়ার সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে “রাজনৈতিক মঞ্চ” শিরোনামে নিয়মিত আর্টিকেল লিখেন। তার লেখা কলামগুলো তথ্যনির্ভর ও প্রশংসাযোগ্য। আমিও তার লেখা পড়ার অপেক্ষায় থাকি।
“রাজনৈতিক মঞ্চ” গত সংখ্যাটির লেখাটিও ছিল তথ্যনির্ভর ও যৌক্তিক। যেখানে মানিক ভৌমিক মাননীয় এমপি মহোদয়ের প্রশংসার পাশাপাশি সমসাময়িক পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছেন। অথচ একটি বিশেষ মহল তার লেখাটিকে মেনে নিতে পারেনি। ভিমরুলের চাকে ঢিল মারলে যা হয়, তাই ঘটেছে। গুটি কয়েকজনের মধ্যে কচুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা খানমও চটেছেন। তিনি একধাপ এগিয়ে গিয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে বিষয়টি তুলে ধরে বলেছেন, মানিক ভৌমিক এমপি মহোদয়কে নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট কথা লিখেছেন। এমপি মহোদয়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। তিনি শালীনতা বজায় রাখার আহ্বান জানান।
সুলতানা খানম, আপনি বোধহয় ভুলে গেছেন, আপনি কচুয়া প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য। প্রেসক্লাব পরিবারের আপনিও একজন। আপনি কি বিষয়টি নিয়ে প্রেসক্লাবে আলোচনা করতে পারতেন না? আপনি মানিক ভৌমিককে ডেকে নিয়েও বলতে পারতেন।
একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি বলবো, মানিক ভৌমিকের লেখাটি মোটেই মিথ্যা ও বানোয়াট নয়। লেখাটিকে যদি মিথ্যা ও বানোয়াট বলা হয় তাহলে এমপি মহোদয়কেই খাটো করা হবে। মানিক ভৌমিকের লেখার কয়েকটি লাইন তুলে ধরছি। ‘কচুয়ার উন্নয়নের ৪০ বছর’ শিরোনামে লিখতে গেলে একটি ছোটখাটো পুস্তিকা প্রকাশ করা যাবে, যার প্রতিটি পরতে পরতে লিখতে হবে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর মহোদয়ের নাম। অনুন্নত ও পিছিয়ে থাকা একটি উপজেলাকে তিনি ধীরে ধীরে উপশহরে রূপদান করেছেন। কচুয়ার চার লক্ষ মানুষ কোনো না কোনোভাবে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের কাছে ঋণী।” এই কয়েকটি লাইন নিশ্চয়ই মিথ্যা ও বানোয়াট নয়।
সুলতানা খানম, মানিক ভৌমিকের লেখাটাকে ঢালাওভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে আপনি অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন। আদৌ আপনি সম্পূর্ণ লেখাটা পড়েছেন কি না আমার সন্দেহ আছে। আপনি একজন শিক্ষক। আমি আশা করবো, আপনি মানিক ভৌমিকের সম্পূর্ণ লেখাটি পড়বেন। আপনার দৃষ্টিতে যে যে লাইন বা অনুচ্ছেদ মিথ্যা ও বানোয়াট সেগুলি উল্লেখ করে প্রতিবাদসহ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারতেন। মাসিক আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়ের সভাপতি ইউএনও মহোদয়ের কাছে বিষয়টির জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি রেজুলেশনে বিষয়টির শুধু উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন ।
“সকল উদ্ধৃতি কি রেজুলেশনে আনা হয়?” –এ প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
সুলতানা খানমকে মনে করিয়ে দিতে চাই, “যদি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ফ্যামিলি ইচ্ছা করে, আমি প্রকাশ্যে বলে দিলাম, যদি ইচ্ছা করে ১ ঘন্টায় শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাইয়া দিতে পারবে।” কথাগুলো শুয়ারুলে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর মহোদয়ের জনসভায় এক বক্তা বলেছেন। সুলতানা খানম অনেকের মত আপনিও তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকরা অনেক কিছুই হজম করে। লেখাটি কোনো পত্রিকায় আসেনি। ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি মহোদয়ের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য জনসভায় এ ধরনের কথা বলা হয়, এবং আপনারা এগুলো উপভোগ করেন। তেল মারারও একটা সীমা আছে। তেল মারতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার গদিতে টান পড়েছে। আপনারা কেউ কথাটির প্রতিবাদও করেননি ! বক্তব্যের সেই ভিডিওটি সাংবাদিকদের কাছে আছে। সাংবাদিকদের প্রতিপক্ষ ভাবলে রাজনীতিতে হোঁচট খাবেন। প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য হয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মিথ্যাচার করা কতটুকু যৌক্তিক, এটা নিয়ে প্রেসক্লাবের মিটিংয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ধন্যবাদ।
রাকিবুল হাসান
সাবেক সভাপতি, কচুয়া প্রেসক্লাব।