স্টাফ রিপোর্টার:
হাজার হাজার কর্মী সমর্থককে কাঁদিয়ে পরদেশে চলে গেছেন চাঁদপুরের জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব সফিকুর রহমান ভূইয়া। চাঁদপুরের রাজনীতির মাঝে এক প্রভাবশালী নাম সফিকুর রহমান। শুধু নাম নয় একটি বটবৃক্ষ বলা চলে। সফিকুর রহমানের মৃত্যুর পর চাঁদপুর পৌর নির্বাচন একেবারে ঝিমিয়ে গেছে বলা চলে। শুধু তাই নয় আইন অনুযায়ী মেয়র পদে পুনরায় তফসীল ঘোষণা করা হবে। অথচ গত বৃহস্পতিবারও ছিলো তাঁর কর্মব্যস্ত জীবন। গণসংযোগ করছিলেন আর শরীর থেকে ঘাম ঝরাচ্ছিলেন। পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করার সময় নিজের পরিকল্পনা, প্রত্যাশা নিয়ে গণমাধ্যমে যে কথাগুলো বলেছিলেন তা পাঠকদের উদ্দেশ্যে হুবহু তুলে ধরা হলো।
নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছি। ৯মার্চ-এর পর থেকে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে ভোটের জন্য যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে চায়। কিন্তু মানুষের মনে শঙ্কা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় যেভাবে নির্বাচনে হয়েছে যদি এখানেও সেরকম হয় তারা শঙ্কা করছে ভোট দিতে পারবে কী না?
চাঁদপুরের মানুষ একটা দিক থেকে আশ্বস্থ হচ্ছে যে বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান এবং সেনাবাহিনী প্রধানের বাড়ি চাঁদপুরে। আমি দেখেছি মানুষ কথা বলতেছে, ওনারা যেহেতু আছে আমাদের ভোট আমানত নিশ্চয় রক্ষা করবেন। সাধারণ মানুষ গণমাধ্যমের মাধ্যমে আইজি ও সেনা প্রধানের কাজে এ আহবান জানানোর কথা বলেছে।
আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করছি আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর রঙীন পোস্টার এখনো রয়ে গেছে। যেখানে পাঁচটি অফিস করার কথা সেখানে ৭-৮টা অফিস করেছেন। এব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রয়াত সফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, যদি প্রশাসন নিরপক্ষ থাকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মানে। অর্থাৎ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ওয়ারেন্ট ব্যাতীত কোনো মানুষকে হেস্তনেস্ত করা যাবে না, এ্যারেস্ট করা যাবে না। সুর্নিদিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মামলা করা যাবে না। বিষয়গুলো যদি পুলিশ প্রশাসন মানে তবে অবশ্যই ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে হবে। অর্থাৎ পুলিশ হয়রানি না হলে ইভিএম এ মানুষের যে আস্থা আছে তা চাঁদপুর পৌরসভার ভোটের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে। কারণ মানুষ যদি ভোট কেন্দ্রে যায় তবে ৬০-৭০ ভাগ ভোট কাস্ট হওয়ার সম্ভবনা আছে। যে কারণে ইভিএম এর অবিশ্বাস আছে সেটাও পরিবর্তন হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রশাসনকে সুষ্ঠু নির্বাচন গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে।
আমি নির্বাচনী প্রচারণা করতে গিয়ে আমি কোনো বাঁধার সম্মুখীন হইনি। আমরা চাচ্ছি শান্তি সুষ্ঠু ভাবে একটি নির্বাচন হোক। সাধারণ মানুষের সাড়া আছে। ভোট দিতে চায়। নির্বাচন কমিশন যদি সেরকম পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে সাধারণ মানুষ স্বতঃষ্পূর্তভাবে ভোট দিতে যাবে। যদি সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারে আমার বিশ্বাস ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চত।
আমি ২০০০-২০০৫ সাল পর্যন্ত চাঁদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলাম। আমার পাঁচ বছর চলাকালীন সময়ে আমি যেসকল উল্লেখযোগ্য কাজগুলো করেছি তার মধ্যে রয়েছে, দৃশ্যমান চাঁদপুর পৌরসভার আধুনিক মূল ভবন, পুরাণ বাজার কমিউনিটি সেন্টার, পুরান বাজার ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, চাঁদপুর পৌর অডিটরিয়াম, আর্ন্তজাতিক মানের বাসস্ট্যান্ড ইলিশ চত্ত্বরসহ প্রচুর কাজ আমার সময়ে করেছি। গত ১৪বছরে এমন কোনো কাজ হয়নি । যা চাঁদপুর পৌরবাসীর সমীক্ষায় আছে। আগামী দিনেও যদি আমি নির্বাচতি হই ইনশাল্লাহ অতীতের ন্যায় প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার নাগরিকদের জন্যে যে সমস্ত সুবিধা পাওয়া দরকার সেগুলোই দেবার চেষ্টা করবো। বিশেষ করে টেক্স না বাড়িয়ে নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করবো।
সবশেষ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ অনুকূলে থাকবে এটা আমরা চাই। নাগরিকদের ভোট দেয়ার অধিকার থাকবে এটা আমরা চাই। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্যে গণমাধ্যম কর্মীদেরও ভূমিকা আছে।