রিয়াজ শাওন:
আলোকিত মানুষই সমাজকে আলোকিত করে। নিজের আলোয় অন্যকে পথ দেখায় সফলতা গল্প শুনিয়ে। অন্যকে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়। আজ তেমনি একজন মেধাবী এবং উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত শিক্ষার্থীর বর্ণাঢ্য শিক্ষাজীবনের গল্প শোনাবো। যে কিনা শিক্ষাজীবনে পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। পাশাপাশি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় পেয়েছেন বোর্ড বৃত্তি। সবশেষে ২০-২১ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৭৮৬ তম স্থান অর্জন করে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালে মার্কেটিং বিভাগে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। কৃতিত্ববান এই মেধাবী শিক্ষার্থী হাজীগঞ্জ মডেল কলেজের ব্যবসা শিক্ষা বিভাগ থেকে ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড মকিমাবাদের বাসিন্দা মাহবুবুর আলম ও নাজমুল নাহার দম্পতির বড় মেয়ে মাহবুবা ইসলাম মিতু। তার গ্রামের বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১নং সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সুরঙ্গ গ্রামে। আগামী দিনের সম্ভাবনাময় মেধাবী এই শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক শপথ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার রিয়াজ শাওন। কথা বলেছেন তার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে।
রিয়াজ শাওন: আপনি কোথায় পড়াশোনা করেছেন?
মাহবুবা ইসলাম মিতু: আমি হাজীগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছি এবং হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল কলেজ থেকে ২০২১ সালে এইচএসসি পাশ করেছি।
রিয়াজ শাওন: আপনার বোর্ড পরিক্ষাগুলোর রেজাল্ট কেমন ছিলো?
মাহবুবা ইসলাম মিতু: আমি পিএসসিতে জিপিএ-৫, জেএসসিতে জিপিএ-৫, এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছি সাথে বোর্ড বৃত্তি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ সাথে বোর্ড বৃত্তি পেয়েছি।
রিয়াজ শাওন: আপনি কোথায় উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে চান?
মাহবুবা ইসলাম মিতু: আমি মূলত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। তার মধ্যে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অনার্স প্রধান স্বপ্ন ছিল। ঢাকা ভার্সিটিতে আমার আসে নাই। আমি অনেকগুলো ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি। তবে সর্বশেষ আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ৭৮৬তম মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছি। আমার বিষয় মার্কেটিং। আমি ইনশাআল্লাহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করব।
রিয়াজ শাওন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৭৮৬ তম স্থান পেয়েছেন। এই সংবাদ শোনার পর আপনার অনুভূতি কেমন ছিলো?
মাহবুবা ইসলাম মিতু: আলহামদুলিল্লাহ সুখবর তো সব সময় ভালো অনুভূতি দেয়। আমারও তাই ছিলো। তবে আরো বেশি আমি খুশি হতাম যদি ঢাবিতে আমার পড়ার সুযোগ হত। এখন যেখানে পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।
রিয়াজ শাওন: আপনার কি হওয়ার স্বপ্ন আছে?
মাহবুবা ইসলাম মিতু: আমি ব্যাংকার হতে চাই। পাশাপাশি আমি বিসিএস ক্যাডার হতে চাই।
রিয়াজ শাওন: আপনার সফলতার পিছনে কার কার বেশি অবদান রয়েছে?
মাহবুবা ইসলাম মিতু: আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা চালিয়েছি। তবে আমার এই চেষ্টাকে ফলবান করে তুলেছে আমাকে যারা দিক নির্দেশনা দিয়েছে। আমাকে যারা অনুপ্রেরণা দিয়েছেন তারা। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছেন আমার প্রিয় স্যার কাউসার হোসেন এবং ইউনিএইডের পরিচালক মোহাম্মদ বাবার ভাই। যার সাহায্য না পেলে হয়তো বা আমার এতদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা রইলো। আর আমার বাবা-মা তো নিরলস পরিশ্রম করে গিয়েছেন। আমাকে সর্বদা সাহায্য করেছেন, সাপোর্ট করেছেন, আমার পাশে ছিলেন।
রিয়াজ শাওন: ভবিষ্যতে যারা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে তাদের জন্য আপনি কি পরামর্শ?
মাহবুবা ইসলাম মিতু: অনেক বেশি পড়াশোনা করতে হবে এবং অনেক চেষ্টা করতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সফল না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কারণ চেষ্টা করতে করতে একদিন আপনি সফল হবেনই। আর তাদেরকে সঠিক দিক নির্দেশনা মানতে হবে যেখানে সঠিক দিকনির্দেশনা পাবে তারা সেখানে যেন কোচিং করে কিংবা সেখানেই যোগাযোগও রাখে। কারণ সঠিক নির্দেশনা ছাড়া হাজার হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে নিজের জন্য জায়গা করে নেওয়া মোটেও সহজ হবে না। এর জন্য সঠিক নির্দেশনা হচ্ছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
রিয়াজ শাওন: আচ্ছা আপনি কি তাদের কোন আইডিয়া দিতে পারবেন যেগুলো অনুসরণ করলে তারাও হতে পারে সফল?
মাহাবুবা ইসলাম মিতু: কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিতে চায়। তাকে অবশ্যই প্রথমে জেনে নিতে হবে সেখানে কোন কোন বিষয়ের উপর প্রশ্ন আসবে এবং প্রশ্নের প্যাটার্ন কেমন হবে। সেই বিষয়গুলো আগে থেকেই জেনে নিতে হবে এবং যে বিষয়ের উপর প্রশ্ন আসবে সেই বিষয়ের উপর ভালো করে জোর দিতে হবে। আগে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে আগে তাদের সাথে আলাপ করে, তাদের অভিজ্ঞতা নিতে হবে। পাশাপাশি ভালো কোচিং সেন্টারে কোচিং করতে পারে এবং ইংলিশ বাংলা গ্রামার এবং অন্যান্য যে বিষয়গুলো সেগুলোর উপর নিজের দিক থেকে সর্বোচ্চ জোর দিতে হবে।
দৈনিক শপথ পত্রিকা আপনার সফলতা কামনা করে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
মাহাবুবা ইসলাম মিতু: দৈনিক শপথ পত্রিকাকে অনেক ধন্যবাদ।