ঈদ শব্দটা শুনলেই মনে আনন্দেরর বন্যা বয়ে আসে। হৃদয়ে অতিরিক্ত কিছু অনুভূতি কাজ করে। এই শব্দটায় আনন্দের আলাদা মাত্র বহন কর, যে মাত্রা অন্য কোন শব্দে রয়েছে বলে আমার মনে হয় না। মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ আনন্দ আয়োজন হলো ঈদ উৎসব। ঈদ মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলেও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি মানুষ এই উৎসবে শামিল হয়। সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে যে যার সাধ্যমতো খুশিতে মেতে ওঠে। বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে মাত্র ২ টি দিন মুসলিম ধর্মের এই উৎসবের নাম ঈদ। এর একটি ঈদুল ফিতর ও অপরটি ঈদুল আযহা। উৎসব দুটির পেছনে রয়েছে মুসলিম ধর্মের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণমুখী কাজ ও ত্যাগের উজ্জ্বল মহিমা।
ঈদ ছোট-বড় সবার কাছে সমান গুরুত্ব বহন করে। শৈশব, কৈশোর, যুব, বৃদ্ধ- কোন বয়সেই ঈদের খুশির আলাদা পার্থক্য থাকে না। সবার মনেই ঈদের আকর্ষণ কাজ করে, ঈদ মনকে দেয় আলাদা সতেজতা। ছোট-বড় সবাই যার যার অবস্থান থেকে ঈদকে হৃদয়ে গেঁথে নেয় এবং সকলের সাথে সমানতালে বিনোদনে শামিল হয়। তবে সবার জীবনই শৈশব দিয়ে শুরু। তাই শৈশবের ঈদ হৃদয়ে আলাদা যায়গা করে নেয়। শৈশব বলতে আমি সাধারণত বুঝি জন্মের পর থেকে বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হওয়ার মধ্যবর্তী সময়কে। অনেকে আবার শৈশবকে ১৫/১৮/২১ বছর বয়সে বিভাজনও করে থাকেন। অবশ্য দেহের গ্রোথ ও লিঙ্গবেধে বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়ার তারতম্যও রয়েছে। কিন্তু আমার মতে বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়া মানেই কৈশোরে পা রাখা। অর্থাৎ একজন মানুষ নিজের সম্পর্কে জ্ঞান অনুধাবন করাই মানে সে কৈশোর। আর তা বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়া থেকেই সে তার শৈশব জীবন শেষ করলো।
প্রত্যেক মানুষের জীবনেই শৈশবের ঈদের স্মৃতি রয়েছে। পরিবেশ, অবস্থা ও পরিবারবেধে এই স্মৃতিতেও আছে তারতম্য। আমি গ্রামের ছেলে। শহরের ঈদের চেয়ে গ্রামের ঈদে শৈশব কাটানো আমার হৃদয়ে অন্য রকম অনুভূতি কাজ করে। গ্রাম্য পরিবেশে শৈশবের ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার যতটুকু বিনোদন ছিলো আর বর্তমানে যা যা মনে আছে, তার সবটুকুই বলছি-
রোজা রাখা : শৈশবে রোজা রাখার বিষয়টি খুবই আনন্দের। ইসলামে যদিও বালেগ বা ১২ বছরের পর হতে রোজা ফরজ করা হয়েছে, তথাপি তার আগে থেকেই রোজা রাখতাম। ৫/৬ বছর বয়স হতে রোজা রাখতাম। রোজা নিয়ে অনেক মধুর স্মৃতি রয়েছে। বয়স কম বলে মা রাতে সেহরী খাওয়ার সময় ঘুম থেকে উঠাতেন না। বাবা-মা যখন সেহেরী খাওয়া শুরু করতেন তখন বিছানায় এদিক-ওদিক মোড়ামুড়ি করতাম, আমিও ভাত খাবো বলে কান্না করতাম, প্রস্রাবের ভান করে জেগে যেতাম। এভাবেই সেহেরী খেতে উঠতাম। বাবা-মায়ের শর্ত ছিলো খাও, তবে ভেঙ্গে-ভেঙ্গে রোজা রাখবা। আবার জ্ঞান দিতো ছোটরা দিনে ২/৩ টা রোজা রাখতে হয়। সব শর্ত মেনেই খাইতাম। তবে দিনে রোজা কিন্তু একটাই রাখতাম। এভাবেই ৬/৭ বছর বয়সে রোজা রাখার অভ্যাস করে ফেলি।
গরু কেনা : ঈদুল আযহায় গরু কেনা ছিলো আনন্দের। বাবার সাথে হাটে যেতাম গরু দেখতে। অনেক গরু দেখতাম। তবে গরুকে আমি তখন হাম্বা বলতাম। গরু কেনার পর বাবার সাথে গরুর দড়ি ধরে বাড়িতে নিয়ে আসতাম। রাস্তায় মানুষ গরুর দাম জানতে চাইলে সবাইকে বলতাম। এতে খুব আনন্দ লাগতো। বাড়িতে গরু আনার পর কাচি ও ওড়া নিয়ে মাঠে চলে যেতাম গরুর জন্য ঘাস আনতে। ওড়া ভরে ঘাস এনে গরুকে খাইতে দিতাম। পাড়ার সমবয়সীদের ডেকে আনতাম গরু দেখতে। সবাই মিলে গরুর লেজে ধরে টানাটানি করতাম। অনেক সময় গরু হাগু বা হিসু করে দিতো। এতে খুব মজা হতো।
নতুন জামা কেনা : ছোট বয়সে ঈদ আসলেই নতুন জামা কেনার জন্য পাগল হয়ে যেতাম। বাবাকে নতুন জামার অর্ডার দিতাম। নতুন জামা ছাড়া যেন ঈদ হবেই না। বাবার সাথে বাজারে যেতাম। পছন্দ মতো গেঞ্জি, জামা বা শার্ট, পেন্ট, জুতা কিনে নিয়ে আসতাম। বাড়ির সমবয়সীদের রাতেই ঈদের জামা দেখাতাম। এতে খুব আনন্দ লাগতো। চাঁদ রাতেই বাড়ির সব সমবয়সী সবাই সবার ঈদের জামা দেখতাম। কারটা বেশি সুন্দর এটা নিয়ে প্রতিযোগিতাও করতাম।
সেমাই বানানো : ঈদে গ্রামে সেমাই ছিলো প্রচলিত রেওয়াজ। ঈদের আগে প্রত্যেক ঘরে ঘরে সেমাই বানানোর হিড়িক লেগে যেতো। টিউবওয়েলের মত দেখতে একধরনের সেমাই মেশিন ছিলো। দুই/তিন বাড়ি মিলে একটা মেশিন সেমাই বানানোর কাজে ব্যবহৃত হতো। প্রায় সাত/আট দিন ঘুরে সিরিয়াল আসলে মেশিন পেতাম। বাড়ির উঠোনে বিছানা বিছায়ে পাশে চেয়ারে মেশিন রেখে সেমাই বানাতাম। মেশিনের হাতল ঘুরায়ে ঘুরায়ে সেমাই বানাতাম। আমি হাতল ঘুরাতাম, মা সেমাই মেশিন থেকে নিয়ে বিছানায় ছিটিয়ে দিতেন। বাড়ির এঘরের পর ওঘর প্রতিযোগিতা দিয়ে সেমাই বানাতাম। ঈদের দিন বানানো সেমাইয়ের প্রতি ছিলো বেশি আকর্ষণ। অবশ্য বর্তমান সময়ের মত সে সময়ে বাজার এত সেমাই বিক্রি হতো না।
ঈদ কার্ড বিনিময় : ঈদ আসলেই ঈদ কার্ড ছিলো একটা এক্সট্রা অর্ডিনারী বিনোদন। ঈদ কার্ড ছাড়া তখন ঈদ মাটি মাটি লাগতো। ঈদের দশ/পনের দিন আগেই স্কুলের বন্ধুদেরকে ঈদ কার্ড দিতাম, বন্ধুরাও আমাকে দিতো। বাজারে কেনা ঈদ কার্ডের চেয়ে নিজে বানানো ঈদ কার্ডটাতেই বেশি বিনোদন পেতাম। বিশেষ করে ক্যালেন্ডারের পাতা কিংবা ভারি কাগজে জরি ও রং করে ঈদ কার্ড বানাতাম। তাতে ধান, পুঁতি, দিয়াশলাই শলাকা দিয়ে ঈদ মোবারক লিখতাম।
ঈদের চাঁদ দেখা : ঈদের চাঁদ না দেখলে আনন্দে শতভাগ পূর্ণতা আসতো না। ২৯ রোজা শেষ হলেই ইফতার সেরে দৌড় দিতাম চাঁদ দেখতে। দেখা না ফেলে ৩০ রোজা রাখতাম। তারপর চাঁদ দেখতাম। এমনও হয়েছে চাঁদ দেখার জন্য বড় বড় গাছের আগাই উঠে যেতাম। এদিক-ওদিক উঁকিঝুঁকি দিয়ে পশ্চিমের আকাশে চাঁদ খুঁজতাম। আবার কখনো মসজিদের গম্বুজ বা মাইক ফিলারের উপরে উঠে চাঁদ খুঁজতাম। আর ঈদুল আযহার চাঁদ দেখার জন্য আরবী জ্বিলক্বদ মাসের শেষ তারিখে জ্বিলহজ্জ্ব মাসের চাঁদ দেখতাম। তারপর জ্বিলহজ্জ্ব মাসের ৯ তারিখ সন্ধ্যায় ঈদের চাঁদ দেখতাম। চাঁদ দেখা নিশ্চিত হলে ছোট-বড় সবাই মিলে খুব আনন্দ করতাম। আবার ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক স্লোগানে মিছিলও বের করতাম।
মেহেদী পরা ও আতশবাজি খেলা : ঈদের চাঁদ দেখে ঈদ নিশ্চিত করার পর আতশবাজি খেলায় মেতে উঠতাম পাড়ার সবাই মিলে। আর রাত জেগে হাতে মেহেদি লাগাতাম। শৈশবের মেহেদি আর বর্তমানের মেহেদি এক মেহেদি নয়। তখন মেহেদি গাছের পাতা ছেড়ে পাডা-পুতার বাডা মেহেদি নারিকেল পাতার শলা দিয়ে হাতে লাগাতাম। আর এখন সবাই কেমিক্যালের তৈরী মেহেদি লাগায়। মেহেদি লাগানোর জন্য বাড়ির আন্টি বা ভাবি কিংবা আপুদের বাসায় বাড়ির সব পোলাপান গিয়ে ভিড় জমাতাম। সিরিয়ালে একের পর এক লাগাতে লাগাতে ভোর রাত হয়ে যেত। তারপর বাসায় ফিরলে মায়ের বকুনিও শুনতে হতো।
টং দোকান দেওয়া : শৈশবে ঈদের দিন ব্যবসায়ী হতাম। আগের দিন বাঁশের শাখা ডাল, কদম গাছের ডাল ও পাতা, নারিকেল পাতা, সুপারি পাতা, কলা পাতা ইত্যাদি দিয়ে বাড়ির সামনে টং দোকান বানাতাম। ১০০-২০০ টাকার পুঁজি নিয়ে বাজার যেতাম। চকলেট, চানাচুর, বাদাম, আচার, রাজা কনডম, বাঁশি ইত্যাদি কিনে আনতাম। ঈদের দিন দোকানে তা বিক্রি করতাম। আবার বাড়িতে মাকে দিয়ে চালতার আচার, আমড়ার আচার, আলুর দম বানায়ে তাও দোকানে বিক্রি করতাম। পুঁজির স্বল্পতা থাকলে ব্যবসায়ে আবার পার্টনারও নিতাম। ঈদের নামাজের আগে ও পরে সব বিক্রি হয়ে যেতো। ৫০-১০০ টাকা লাভও হতো। ব্যবসাটি খুব আনন্দে করতাম।
ঈদগা ময়দানে যাওয়া : ঈদের দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতাম। গোসল করে নতুন জামা-কাপড় পড়ে ঈদগায়ে যেতাম। বাড়ির সব সমবয়সীরা ঈদগায়ে খুব আনন্দ করতাম। ঈদের নামাজ আদায় করে কোলাকুলি করতাম। কোলাকুলিতে কি যে মজা হতো।
সালামি নেওয়া : ঈদে সালামি পাওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকতাম। তখল ১ টাকা, ২ টাকা, ৫ টাকা সালামির প্রচলন ছিলো। ঈদের নামাজ শেষ করে ঈদগায়েই বাবার কাছে সালামি চাইতাম। বাড়ির চাচা, জেঠা, বড় ভাই, বড় বোন, এলাকার বড়দের কাছে সালামি চাইতাম। অনেককে পা ছুঁয়ে সামাল করেও সালামি আদায় করতাম। সালামির টাকা মায়ের কাছে জমা রাখতাম।
কোরবানি করা : ঈদুল আযহায় কোরবানি হয়। ঈদের নামাজে যাওয়ার আগেই বাবার সাথে কোরবানির গরুকে গোসল করাতাম এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতাম। যেখানে কোরবানি করা হবে সেই সুবিধাজনক স্থানে বেঁধে রেখে ঈদগায়ে যেতাম। নামাজ শেষ করে এসে গরু কোরবানি হতো। পাড়ার ছোটরা সবাই মিলে হুজুরের পিছে পিছে ছুটতাম, পাড়ার অনেক গরু কোরবানি দেখতাম। আমাদের গরু কোরবানির সময় সবার সাথে গরুর পিঠে ধরতাম। এরপর গরু বানানোর কাজে বাবাকে সহযোগিতা করতাম। প্রয়োজনীয় জিনিস এগিয়ে দিতাম, বাবাকে পান খাইতে দিতাম, গোস্ত হাতে নিতাম। সবার সাথে বসে দেখতাম ও মজা পেতাম।
গোস্ত বন্টন করা : কোরবানির গোস্ত বন্টন করায় থাকতো আলাদা আনন্দ। কারণ- যারা কোরবানি দিতে পারে না, গ্রামের ঐসব মানুষরা গোস্ত নিতে আসতো। তাদেরকে নিজ হাতে গোস্ত দিতাম। আবার বাড়ির যারা কোরবানি দিতো না, তাদেরকে গামলায় বা পলিথিনে ভরে তাদের ঘরে গোস্ত দিয়ে আসতাম। এসব কাজে মা ও বাবা দুজনই সহযোগিতা করতো।
ঘরে ঘরে গিয়ে পায়েস, খিঁচুড়ি ও গোস্ত খাওয়া : ঈদের দিন বাড়ির সহপাঠী যারা আছে তাদের ঘরে যেতাম। সহপাঠীদের মায়েরা পায়েস, খিঁচুড়ি ও গোস্ত দিতো, তা খেতাম। এটা আমিও করতাম। সহপাঠীদের আমাদের ঘরে নিয়ে আসতাম। সবাইকে নাস্তা,পায়েস, খিঁচুড়ি, গোস্ত ইত্যাদি খাইতে দিতাম।
বিটিভিতে ঈদ বিনোদন দেখা : ঈদ আসলে বিটিভির ঈদ আয়োজন দেখার জন্য মনে আলাদা বিনোদন কাজ করতো। তখনকার সময়ে এখনকার মত কোন স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ও ডিস ছিলো না। শুধু বিটিভি ছিলো। তাও এন্টেনা সিস্টেম। সবচেয়ে বড় কথা হলো দুই-চার বাড়ি খুঁজলে একটা টিভির দেখা মিলতো। ঈদে টিভিতে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা ও সিনেমা দেখাতো। আশেপাশের ঘরের ও বাড়ির বাচ্চা-কাচ্চারা ঈদের সিনেমা দেখতে টিভির ঘর খুঁজতো। আমিও এমনটা করতাম। অনেক টিভি ওয়ালারা আবার বেশি মানুষ পছন্দ করতো না, তাই তারা ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখতো। তখন ঘরের জানালা বা বেড়ার ফাঁক দিয়ে তাকিয়ে টিভিতে অনুষ্ঠান দেখতাম। কোন রকমে ঘরের ভিতর ডুকতে পারলে মাটিতে বিছানায় বসে মাথা উঁচু করে তাকিয়ে টিভি দেখতাম। কাহিনী দেখার পর নেশা লেগে যেতো, তারপরেও সিনেমা বা অনুষ্ঠান শেষ না করে আসতাম না। মাঝে মাঝে টিভি ঝিরঝির করলে এন্টেনার বাঁশ ধরে এদিক-ওদিক ঘুরাতাম আর ছিল্লাইয়া কইতাম ঠিক আছে নি? হইছে নি? আসছে নি? তারপরেও ঈদ বিনোদন মিচ করতাম না।
নানুর বাড়ি যাওয়া : শৈশবের ঈদ মানেই নানুর বাড়ি বেড়াতে হবে। এটা শৈশবের ঈদ সংস্কৃতিরই অংশ। ঈদের পর দিনই চলে যেতাম নানুর বাড়ি। যদিও আমার জীবনে নানুকে দেখিনি, তবে মামার আদর ও মামাতো ভাইদের সাথে খুব মজা হতো। স্কুল ছুটি শেষ হওয়ার আগের দিন চলে আসতাম।
ঘুরে বেড়ানো : ঈদের পর বিনোদন হিসেবে বিভিন্ন যায়গায় ঘুরে বেড়ানো ছিলো শৈশবের ঈদ বিনোদনের অংশ। সহপাঠীদের সাথে নানান যায়গায় ঘুরতে যেতাম। ঈদের খুশিকে কেন্দ্র করে তখনকার সময়ে গ্রামে নাটক ও যাত্রাপালার আয়োজন হতে। সহপাঠীদের সাথে চলে যেতাম তা দেখতে। তখনকার যাত্রা বা নাটকের একটা অংশ এখনো স্মৃতিতে রয়েছে। আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় চার কি পাঁচ কিলোমিটার দূরে একটা স্কুল মাঠে ছিলো সেই আয়োজন। যাত্রা বা নাটকের কথা মনে না থাকলেও ঐ অংশটুকু খুব মনে পড়ে। নায়কের কণ্ঠের সেই অংশটুকু হলো- ‘ভানু, ও ভানু, ভানুরে…. আঁই যাইয়ুম ঢাহার শহর তোরলেই আইনুম কী?
শৈশবের ঈদ-স্মৃতি লিখতে গেলে এর যেনো শেষ নেই। আমাদের জীবনে শৈশব আর কখনোই ফিরে আসবে না। এটা কালের বিবর্তণেরই অংশ। বর্তমানে যে যার অবস্থানে আছি সবার মাঝেই কমবেশি শৈশবের স্মৃতি রয়েছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মাঝে শৈশবের সেই স্মৃতিগুলো স্মৃতিচারণ করতে পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পুরোনো সংস্কৃতিকে হৃদয়ে লালন করে আগামীর অপসংস্কৃতি থেকে দূরে থাকতে পারবে। শৈশবের ঈদ-স্মৃতি খুব মনে পড়ে। এখন কেমন যেন সব আনন্দেই ভাটার টান। আগের মতো করে আর আনন্দ হয় না ঈদে। বাস্তবতার চাপে সবই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। মনে হয়- বড় ভালো ছিল আমাদের ছোটবেলা! এখন আর ছোটবেলার মতো আবেগ নেই। সবকিছুই মনে হয় যান্ত্রিক, আবেগহীন ও অনুভূতিশূণ্য।