সুমন আহমেদ:
শীতে কাবু হচ্ছে চাঁদপুরের চরাঞ্চলের মানুষ। শুধু তাই নয় নদী তীরবর্তি এলাকার মানুষেরও একই হাল। যদিও গ্রামেও প্রচুর শীত প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ গ্রামের হতদরিদ্র মানুষও প্রচন্ড শীতে কাবু হয়ে গেছে। চাঁদপুরে ছোট বড় ২৫টি চর রয়েছে। এর অধিকাংশগুলোতেই মানুষের বসবাস রয়েছে। চরগুলো মূলত জেলার চারটি উপজেলায় বিদ্যামন। এরমধ্যে চাঁদপুর সদর, মতলব দক্ষিণ, হামইচর ও মতলব উত্তর উপজেলা রয়েছে। যার মধ্যে ফরাজীকান্দি, জহিরবাদ, এখলাছপুর ও মোহনপুর ইউনিয়নের এ চরগুলোতে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ বসবাস করছে। এছাড়াও চাঁদপুর সদরের দুটি ইউনিয়ন ও হাইমচরের তিনটি ইউনিয়নই চরে। এসব এলাকার বাসিন্দারা প্রাকৃতিক দূর্যোগ আসলেই চরম কষ্ট ও দূর্ভোগের মধ্যে পড়েন। যার প্রেক্ষিতে গত রোববার দিবাগত রাত থেকে প্রচন্ড শীত পড়তে শুরু হলে আবারো তাদের পড়তে হচ্ছে বাড়তি ভোগান্তিতে। কারণ চরাঞ্চলে বসবাসকারী শিশু, নারী ও পুরুষ সবাই এখন শীতে কাবু হয়ে পড়েছে। শ্রমিক, দিনমজুর ও দৈনন্দিন খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কাজ কর্মেও ছন্দপতন ঘটেছে। তাছাড়া শীতের প্রকোপ বাড়ায় সকালে অনেকেই দেরি করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলছেন। মূলত চরাঞ্চলে গাছপালা কম হওয়ার কারণে কুয়াশা আর বাতাস দুটোই তাদের ছোট ছোট ঘরগুলোতে প্রভাব বিস্তার করে।
মেঘনা ও পদ্মার ভাঙ্গনের শিকার হাজার হাজার পরিবার অস্থায়ীভাবে ঘর তৈরী করে কোন রকম বসবাস করে এই এলাকায়। তবে সরকারিভাবে মতলব উত্তরে গুচ্ছগ্রাম তৈরী করা হয়েছে। সেগুলোতে গাছপালা কম হওয়ার কারণে রোদ, বৃষ্টি ও শীত সব মৌসুমেই কষ্টে দিনাতিপাত করেন চরাঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত এসব পরিবারগুলো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চরে বসবাকারী এসব মানুষ বেশীরভাগ কৃষি ও জেলে পেশায় তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। যোগাযোগ বিচ্ছন্ন এলাকা হওয়ার কারণে চিকিৎসাসহ সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত থাকে তারা।
এখলাছপুর ইউনিয়নের চরকাশিম এলাকার বাসিন্দা বজলুর রশীদ দেওয়ান বলেন, চরাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ নিম্ন আয়ের। তারা শীতে কাবু হয়ে গেছে। এখানকার সবাই শীত থেকে রক্ষা পেতে আগুন জালিয়ে ঘরের সামনে বসে থাকতে দেখা যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজী শরিফুল হাসান বলেন, সরকারিভাবে প্রাপ্ত ৫ হাজার কম্বল প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। চরাঞ্চলের শীতার্তদের আলাদাভাবে কিছু করতে পারলে ভালো লাগবে। আমি চেষ্টা করবো তাদের জন্য কিছু করতে। ইউনিয়ন পরিষদ তালিকা করে কম্বল বিতরণ করবে। তারপরও কেউ না পেলে যোগাযোগ করলে কম্বলের ব্যবস্থা করা হবে।
এই প্রসঙ্গে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, আমরা প্রতিটি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে কম্বল বরাদ্দ দিয়েছি। নিশ্চয় জনপ্রতিনিধিরা শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করে দিবেন।