স্টাফ রিপোর্টার:
শাহরাস্তি উপজেলার ছোটতুলা গ্রাম থেকে অপহরণ হওয়া পাঁচ বছরের শিশু কন্যা খাদিজাকে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়েছেন গর্ভধারিনী মা ফাতেমা আক্তার। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, তার পাঁচ বছরের শিশুকন্যা খাতিজা গত ১১ এপ্রিল তার বাড়ি থেকে অপহরণ হয়। এই ঘটনায় আমি একটি মামলা করেছি। মামলায় রবিউল আলম ও মোহাম্মদ ফরহাদ নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করেন। দুইজন আটক হলেও তার শিশু সন্তান এখনো উদ্ধার না হওয়ায় তিনি উদ্বিগ্ন। এব্যাপারে গতকাল শনিবার (২৬জুন) সকালে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের মা ফাতেমা আক্তার সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শিশুর দাদা শাহজাহান কবীর ও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন ও সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা সহ অন্যান্য সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, শাহরাস্তি ছোটতুলা থেকে অপহৃত শিশু কন্যা খাদিজা । দুই মাস ১৪ দিনেও উদ্ধার হয়নি। বিগত ১১ এপ্রিল ২০২১ ইং বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টার সময় শিশু খাদিজাকে অপহরণ করা হয়েছে। এই ব্যাপারে খাদিজার মা ফাতেমা আক্তার বাদী হয়ে সারাস্তি মডেল থানায় বিগত ০৭/০৫/২০২১ ইং তারিখে মামলা দায়ের করেন। মামলার নং ০৭। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ৭/৩০ ধারা।
এই মামলার আসামি করা হয় একই গ্রামের মোঃ রুহুল আলম (২৫) এবং ফরহাদ (৩০), উভয় পিতা শেখ ফরিদ সহ অজ্ঞাত নামা কয়েকজনকে বিগত ০৭/০৫/২০২১ইং তারিখে উল্লেখিত ২ জন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করিয়া কোর্টে চালান দেয়। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত আসামিদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ঘটনা তদন্তে পুলিশ এই মামলা সম্পর্কিত সরোয়ার হোসেন পিতা আবুল খায়ের, সাং ছোটতুলা , হিমাংশু চন্দ্র দাস, পিতা মৃত সুভাষ চন্দ্র দাস, মোঃ একরামুল হক ভূঁইয়া, পিতাঃ মোঃ আবু তাহের ভূঁইয়া, হালিমা বেগম, স্বামী আরিফ হোসেন তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের দেওয়া তথ্যমতে জৈনিক সুমন কবিরাজের কাছে শিশু খাদিজা আটক আছে বলে জানা গেলে। পুলিশ সুমন কবিরাজকে খুঁজে পাচ্ছে না। শিশু খাদিজা অপহরণের তারিখের তার দাদা শাহজাহান কবির শাহরাস্তি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন যার নং ৪৭৪। তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২১ ইং। তার মাতা জানায় এজাহার নামীয় আসামি রবিউল আলম শিশু খাদিজাকে মোটরবাইকে ঘুরাইবে বলিয়া সুকৌশলে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইতিপূর্বে আসামি রবিউল আলম পঞ্চগড় সরকারি স্কুল বন্ধ থাকার সময় একটি শিশু বাচ্চাকে স্কুলের ১ টি কক্ষে আটক রাখিয়া অভিভাবকের নিকট মুক্তিপণ দাবি করে এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি হয়। ২ নং আসামি মোঃ ফরহাদ একটি শিশু বাচ্চাকে অপহরণ করিয়া ৩০,০০০/হাজার টাকা অন্যত্রে বিক্রি করি আছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে। খাতিজা অপহরণের ঘটনা আর ১৫ দিন পূর্বে ১নং আসামী ঋণগ্রস্ত হওয়ায় ভিকটিমের মাতা ফাতেমা আক্তার এর নিকট ৫০,০০০/ হাজার টাকা ধার চায়। কিন্তু ফাতেমা আক্তার এর নিকট টাকা না থাকায় অপারগতা প্রকাশ করলে আসামি রবিউল আলম ভিকটিমের মাকে বলেছিল কাজটা ভাল করেন নাই। পুলিশ শিশু খাদিজা অপহরণের ঘটনায় ২ মাস ১৪ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও খাদিজাকে উদ্ধার করতে না পারায় পরিবারের সদস্যগণ খুবই উদ্বিগ্ন। খাদিজার মা বাচ্চার সঙ্গে মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। থানা-পুলিশের ব্যর্থতার কারণে বর্তমানে মামলাটির পিবিআই তদন্তের জন্য বাদীপক্ষ আদালতে আবেদন করেছেন। ভিকটিমের চিন্তায় ভিকটিমের মা ফাতেমা আক্তার প্রায় অজ্ঞান হয়ে যায়। একমাত্র শিশুসন্তান খাদিজা আক্তার কে উদ্ধারের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন।