স্টাফ রিপোর্টার:
‘ফেসবুক ও পাঠ্যসূচির গন্ডিতে আর নই, চর্যাপদের সঙ্গে থেকে পড়ব সকল বই’ এই শ্লোগানে পালিত হলো চর্যাপদ একাডেমির বই উপহার কর্মসূচি। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁদপুরের আক্কাছ আলী রেলওয়ে একাডেমিতে ফিতা কেটে বই উপহার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির উপমহাপরিচালক দুখাই মুহাম্মাদ।
একাডেমির সভাপতি নুরুন্নাহার মুন্নির সভাপতিত্বে ও নির্বাহী পরিচালক আইরিন সুলতানা লিমার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম মিয়াজী। বক্তব্য রাখেন বই উপহার কর্মসূচির আহŸায়ক রফিকুজ্জামান রণি, সদস্য সচিব দিলীপ ঘোষ, প্রধান সমন্বয়কারী ফেরারী প্রিন্স, সহ-সভাপতি আয়শা আক্তার রুপা ও স্কুল শিক্ষক ইমরান শাকির।
এ সময় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর হাতে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, ছড়া, ভ্রমণ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গ্রন্থ উপহার হিসেবে তুলে দেয়া হয়। স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রদান করা হয় পাঁচটি পুরস্কার। কুইজে বিজয়ীরা হলেন, ইউসুফ আদনান, সামিয়া, ইমন, খাদিজা আক্তার ও মিলি আক্তার।
চর্যাপদ একাডেমির মহাপরিচালক রফিকুজ্জামান রণি বলেন, গ্রামাঞ্চলের তরুণ-তরুণীরা পাঠ্যপুস্তকের বাইরে সৃজনশীল ও মননশীল বই-ম্যাগাজিন পড়তে সবসময়ই আগ্রহী। হাতের নাগালে সে সুযোগ খুব একটা আসে না। আমরা কাঁধে বই নিয়ে তাদের দরজায় গিয়ে দাঁড়াতে চাই। প্রতি মাসে অন্তত ১০০ থেকে ২০০ কপি বই উপহার দিয়ে বইপাঠের প্রতি উৎসাহ যোগাতে চাই। উপহার হিসেবে বই প্রদানের রেওয়াজ তৈরিতে মানুষের আগ্রহ বাড়াতে চাই। সুধিজন ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকেও উপহার হিসেবে বই দেই আমরা। শহরে এবং গ্রামে সবখানেই চলে উপহার কর্মসূচি। মূলত বই পাঠের মাধ্যমে মাদক, জঙ্গীবাদ ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর একটি নিবিড় আন্দোলন এটি। ফেসবুকের সীমিত ব্যবহারের প্রতি নতুন প্রজন্মকে সচেতন করে তোলার একমাত্র উপায় হলো তাদের হাতে হাতে ভালো মানের বই তুলে দেয়া।
তিনি আরও জানান, শিক্ষার প্রসার লাভের প্রয়াসে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নানামুখী উদ্যোগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরাও কাজ করতে চাই। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। জুতসই পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সারাদেশে বইয়ের আলো ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো আমরা। গেলো পৌনে তিন বছরে ছয় হাজারের কাছাকাছি বই উপহার দিয়েছি আমরা।
এবারের কর্মসূচিতে সহযোগিতা করেছেন কথাসাহিত্যিক মনি হায়দার, কবি বীরেন মুখার্জী, কবি রহমান হাবিব, কবি মুক্তা বুকল, কবি আফরোজা অদিতি, কবি জরিনা আখতার, কবি সজীব মোহাম্মদ আরিফ, কবি সুরাইয়া চৌধুরী, কবি মামুন রশীদ, কবি মনজুরে কাদের ও রতন খান।
বই উপহার কর্মসূচিটি উৎসর্গ করা হয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মবলিদান করা সকল বীর শহীদের স্মৃতির প্রতি।