দৈনিক শপথ রিপোর্ট:
র্যাগ ডে’র নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজে পার্টি, উদ্যম নৃত্য, বুলিং, অশ্লীলতা, নগ্নতা, কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে শিক্ষাসচিব, তথ্যসচিব, সংস্কৃতিসচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে রুল জারি করেছেন আদালত। রুলে অশ্লীলতা ও নগ্নতা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষাসচিব, তথ্যসচিব, সংস্কৃতিসচিব, ইউজিসি চেয়ারম্যান, ঢাবি, রাবি, জাবি, খুবি ও ববির উপাচার্য, পুলিশের মহাপরিদর্শক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (১৭ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল হাসান। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসমা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
এ বিষয়ে আইনজীবী কামরুল হাসান বলেন, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘র্যাগ ডে’ পালনের নামে ডিজে পার্টিসহ নগ্ন, অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর কর্মকাণ্ড বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষাসচিব, তথ্যসচিব, সংস্কৃতিসচিব, ইউজিসি চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ ১৩ বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৭ এপ্রিল র্যাগ ডে’র নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজে পার্টি, উদ্যাম নৃত্য, বুলিং বন্ধে আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। এর আগে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। নোটিশের পর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রিট করা হয় বলে জানান কামরুল হাসান।
আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে র্যাগ ডে’র নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল ও ডিজে পার্টির আয়োজন করা হচ্ছে। এগুলোর স্থিরচিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। যেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিক জীবনমান ও সুকুমার বৃত্তি বিকাশের কারিগর হওয়ার কথা, সেখানে আজ চরম নৈতিক অবক্ষয়মূলক কার্যকলাপ হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজের অজান্তে নৈতিক অধঃপতনে নিমজ্জিত হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ ভাগ শিশু, কিশোর ও তরুণ। আগামী প্রজন্মকে এ ধরনের অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষার জন্য র্যাগ ডে’র নামে অশ্লীলতা, ডিজে পার্টি ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়মূলক এসব কার্যক্রম বন্ধ করা প্রয়োজন। এসব কারণে রিটটি দায়ের করা হয়েছে।