মো. হোসেন বেপারী:
খেলার সঙ্গীদের সাথে বাড়ির পাশের ডোবায় শাপলা তুলতে যায় ৭ বছর বয়সী সুমাইয়া। কিন্তু শাপলা তুলে আর তার বাড়ি ফেরা হলো না তার। কে জানতো? এই যাওয়াই ছিলো তার শেষ যাওয়া। বাড়ি থেকে বের হওয়ার তিন ঘন্টা পর ঠিকই ফিরেছে সে, তবে তার নিথর দেহ। ডোবার পানিতে ডুবে অকাল মৃত্যু হয় শিশু সুমাইয়ার।
ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নে। এদিকে তার এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না আত্মীয়-স্বজন। পরিবারের আদরের সন্তানকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ স্বজনরা। এছাড়াও সুমাইয়ার এমন মৃত্যুর খবরে আশেপাশের এলাকার মানুষ ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। এসময় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার মায়ের সাথে নানার বাড়িতে বেড়াতে আসে সুমাইয়া। রোববার দুপুরে মা গোসল করতে যাই বলেই বাড়ি থেকে বের হয় সে। এসময় নানার বাড়ির খেলার সঙ্গী তানজিনা, জান্নাত ও সিয়ামের সাথে সুবিদপুর উত্তর-পশ্চিম পাড়ার ডোবায় শাপলা তুলতে যায় সে। এরপর মজুমদার বাড়ির সামনের ড্রেজারে খোদাই করা গর্তে তারা ৪জন গোসল করতে নামে। গোসলের এক পর্যায়ে হঠাৎ সুমাইয়াকে হারিয়ে ফেলে তার খেলার সাথীরা। এসময় তারা সুমাইয়ার মাকে বিষয়টি অবহিত করে। পরে স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের শ্বাসরুদ্ধকর প্রায় দেড় ঘন্টার অভিযানের পর শিশু সুমাইয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শিশু সুমাইয়ার বাবার বাড়ি সিলেট মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল বারাউড়া নোয়া বাড়ি। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সুমাইয়া মেঝো। সে তার মায়ের প্রথম পক্ষের দ্বিতীয় সন্তান। গত কয়েক বছর আগে বাবা রুমানের সাথে তার মা পাখি বেগমের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে তার মা পুনরায় বিয়ে করেন সিলেটের বাসিন্দা মহিবুলকে।
সুমাইয়ার সাথে থাকা তানজিনা জানান, পানিতে সাঁতার কাটছিলো তারা। হঠাৎ সুমাইয়াকে দেখতে না পেয়ে তারা তার মাকে খবর দেয়।
নিখোঁজের পর স্থানীয়রা তাকে খোঁজতে পানিতে নামে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় হাজীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা রাশেদুল আলম ও তার টিম। পরে খবর দেয়া হয় চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে। ডুবুরি মো. রাজিব হোসেন প্রায় আধঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে উদ্ধার করে সুমাইয়ার মৃতদেহ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন হাজীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল আজিজ।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি জুবায়ের সৈয়দ বলেন, খবর পেয়ে মৃতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।