শপথ নিউজ রিপোর্ট:
আজ দিবাগত রাত হচ্ছে পবিত্র শবে বরাত। তাৎপর্যপূর্ণ এ রাতে বিশেষ বরকত হাসিলের মানসে মুসলিম উম্মাহ রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী, জিকির-আজকার, মিলাদ-কিয়াম, দোয়া-মাহফিল, নফল নামাজ ও কোরআন তেলাওয়াতে মশগুল থাকেন। আর পরবর্তী দিন রোজা রাখেন। কেউ কেউ দুটি বা তিনটি নফল রোজা পালন করেন। তবে এবার করোনা ভাইরাসের কারণে সকল ইবাদত ঘরে করার নির্দেশনা রয়েছে। জনসমাগম না হওয়া এবং সামাজিক দূরত্ব ঠিক রাখতে এ সিদ্ধান্ত।
শবে বরাতকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ নামেও অভিহিত করা হয়। শাবান মাসের মধ্যবর্তী তথা ১৪ শাবান দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত পালিত হয়। হাদীস শরীফে একে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা মধ্য শাবানের রাত্রি নামে অভিহিত করা হয়েছে। আর পক্ষকাল পরেই আসবে মাহে রমজান। লাইলাতুল বারাআত মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা প্রশিক্ষণের পূর্ব প্রস্তুতিস্বরূপ। এজন্যে একে বলা হয় রমজানের মুয়াজ্জিন বা আহ্বানকারী। মূলত বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতে এ রাতটি শবে বরাত হিসেবে পরিচিত। আরববাসীরা এ রাতকে ‘লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান’ বলেন।
হাদীসে বর্ণিত আছে, ১৪ শাবান দিনের সূর্য অস্তমিত হওয়ার পরক্ষণ থেকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নূরের তাজাল্লি পৃথিবীর কাছাকাছি আসমানে প্রকাশ পায়। তখন আল্লাহ পাক বলতে থাকেন, আছে কি কেউ ক্ষমাপ্রার্থী, যাকে আমি ক্ষমা করবো, আছে কি কেউ রিজিকপ্রার্থী, যাকে আমি রিজিক প্রদান করবো, আছে কি কেউ বিপদগ্রস্ত, যাকে আমি বিপদমুক্ত করবো। আল্লাহপাকের মহান দরবার থেকে প্রদত্ত এ আহ্বান অব্যাহত থাকে ফজর পর্যন্ত। বস্তুত শবে বরাত হলো, আল্লাহপাকের মহান দরবারে ক্ষমা প্রার্থনার বিশেষ সময়। আল্লাহপাকের নৈকট্য ও সান্নিধ্য লাভের এক দুর্লভ সুযোগ এনে দেয় এ পবিত্র শবে বরাত।
অতএব, প্রতিটি কল্যাণকামী মানুষের প্রধানতম কর্তব্য হলো, এ সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা, আল্লাহপাকের ইবাদত-বন্দেগিতে পূর্ণ রাত অতিবাহিত করা, সাধ্যমত দান-খয়রাত করা। হাদীস শরীফে আছে যে, রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি শাবানের ১৫ তারিখে রোজা রাখবে তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না।
সারাদেশে আজ ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ যথাযথ মর্যাদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে পবিত্র শবে বরাত পালন করবে। তবে অন্যান্য বছরের মতো করে এবারের শবে বরাত পালিত হচ্ছে না। এবার মসজিদে মসজিদে নামাজসহ অন্যান্য ইবাদত, ওয়াজ ইত্যাদি হচ্ছে না। সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রত্যেকে নিজ নিজ ঘরে ইবাদত বন্দেগী করতে। কারণ করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) একটি মারাত্মক ছোঁয়াছে রোগ। এ রোগ একজন থেকে অসংখ্য জনের মধ্যে সংক্রমিত হয়। এই সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা পেতেই মুসলমানদের প্রতি এই নির্দেশনা। শুধুমাত্র জনসমাগম এড়িয়ে থাকা এবং সামাজিক দূরত্ব ঠিক রাখতে এই নির্দেশনা।
আজকের রাতটি ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে কাটিয়ে দিয়ে মহান আল্লাহর রহমত কামনাসহ করোনা ভাইরাস নামে খোদায়ী গজব থেকে পরিত্রাণ পেতে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করতে হবে। মনকে বিগলিত করে কায়মনোবাক্যে খালেছ তওবা করে আল্লাহর কাছে পরিত্রাণ চাইতে হবে।