সুমন আহমেদ
মতলব উত্তর উপজেলার বদরপুর গ্রামে শুরু হওয়া ৭ দিনব্যাপী লেংটার মেলায় মাদক কেনাবেচা, সেবন ও অশ্লীল নৃত্যের আসর বসার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি এতে তরুণ ও কিশোরেরা বিপথগামী হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ।
স্থানীয় লোকজন জানান, উপজেলার বদরপুর এলাকায় পীর ও সাধক হজরত শাহ সুফি সোলায়মান (রহ.) ওরফে লেংটা বাবা বাংলা ১৩২৫ সালের চৈত্র মাসে মারা যান। এরপর প্রতিবছর তাঁর মাজার এলাকায় চৈত্র মাসের শেষের দিকে ওই মাজারের খাদেম, আশেকানরা মেলা ও বার্ষিক ওরসের আয়োজন করেন। স্থানীয়ভাবে মেলাটি ‘লেংটার মেলা’ নামে পরিচিত। এতে প্রতিবছর হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। এবারের মেলা শুরু হয় গত বুধবার।
রোববার দুপুরে মেলার এরিয়ে ঘুরে দেখা গেছে, হাজারো মানুষের ভিড়। তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে মেলার নানা কার্যক্রম। বিভিন্ন জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। মাজার এলাকায় আশেকান-ভক্তের উপচে পড়া ভিড়। মাজারটির পশ্চিম দিকে পুকুরের পাড়ে, পুকুর সংলগ্ন বাগানে ও বেড়িবাঁধ এলাকায় গাঁজা-মদ সেবন ও বিক্রির জমজমাট আসর চলছে। পুলিশ ও প্রশাসনের নজরদারি সত্ত্বেও সেখানে প্রকাশ্যে গাঁজা, আফিমসহ বিভিন্ন মাদকের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। নেশাখোরেরা সেখানে এসে আড্ডা দিচ্ছেন। এছাড়া মেলার কয়েকটি এলাকায় নারীদের অশ্লীল নৃত্যের জমজমাট আসরও দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বদরপুর এলাকার দুজন প্রবীণ বাসিন্দা অভিযোগ করেন, লেংটার মেলার নামে এখানে যেভাবে দিন–রাতে মাদক ও অশ্লীল নাচ-গানের আসর বসছে, পবিত্র রমজান মাসে তা মেনে নেয়া যায় না। মেলা এলাকার শতাধিক স্থানে মাদক কেনাবেচা ও সেবনের জমজমাট আড্ডা চলছে। এতে মেলা ও আশপাশের এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নেশাগ্রস্ত ও বিপথগামী হয়ে পড়ছে কিশোর-তরুণেরা। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক পরিবেশ। ওপরে মেলা আর ভেতরে চলছে লাখ লাখ টাকার মাদকের ব্যবসা। প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এসব অপকর্ম হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, মেলা এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অসামাজিক কাজ বন্ধে নজরদারি চালাচ্ছেন তাঁরা। এরপরও পুলিশ ও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু লোক সেখানে মাদক কেনাবেচা ও অশ্লীল নৃত্যের আয়োজন করছে বলে জেনেছেন। এসব বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।