৪৬ দিন পর নৌ পথ সচল
দীর্ঘ ৪৬ দিন পর অবশেষে চালু হল চাঁদপুর টু ঢাকা লঞ্চ যোগাযোগ ব্যবস্থা। এতে স্বস্তি ফিরেছে লঞ্চের মালিক, কর্মরত শ্রমিক ও যাত্রী সাধারণের মাঝে। এর আগে গত ৫ এপ্রিল সরকার ঘোষিত লকডাউনের মাধ্যমে দেশের সকল দূরপাল্লার গণপরিবহন, লঞ্চ অভ্যন্তরীণ, বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অপরদিকে লঞ্চ চলাচল চালু হলেও চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে নিবিড়ভাবে কাজ করছে বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
মুলত চাঁদপুরসহ এর আশেপাশের কয়েকটি জেলার মানুষের ঢাকা যাওয়ার প্রধান বাহন হচ্ছে লঞ্চ। লঞ্চে যাতায়াত অনেকটা আরামদায়ক হওয়ায় লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, শরীয়তপুর ও কুমিল্লার কিছু অংশের মানুষ এই রুটে যাতায়াত করেন।
করোনা সংক্রমনের ঊর্ধ্বগতি ও মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ৬ এপ্রিল থেকে দেশের সকল দূরপাল্লার বাস, লঞ্চ ও অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা দেয় সরকার। এরপর দীর্ঘদিন মালিক ও শ্রমিক পক্ষ লঞ্চ ও গণপরিবহন চালুর দাবি জানিয়ে আসলেও অবশেষে গতকাল সোমবার সরকার এসব যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেয়। এতেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে। এদিন সকাল ছয়টায় এম ভি রফ রফ-৭ চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে ঢাকা সদর ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। লঞ্চ চলাচলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির দূর হয়ে খুশিতে সাধারণ যাত্রীরা।
সরেজমিনে সোমবার সকালে চাঁদপুর লঞ্চঘাট ঘুরে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাত্রী উঠানো হচ্ছে। এছাড়া প্রবেশমুখে প্রতিটি লঞ্চের একজন করে শ্রমিক দাঁড়িয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও যাত্রীদের মাক্স নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অবস্থান করছেন। এছাড়াও হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে যাত্রীদের সচেতন করার জন্য প্রচারণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।
ঢাকাগামী যাত্রী রারেক গাজী, মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ বেশকয়েকজন জানান, অবশেষে সরকার লঞ্চ-বাস চলাচল চালু করায় আমাদের ভোগান্তি অনেক কমেছে। এর আগে গত ঈদে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করার জন্য আসতে প্রচন্ড ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। আমাদের কয়েক ধাপে ভেঙে এবং ২০০ টাকার জায়গায় প্রায় ২ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। সবশেষে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় অনেক খুশি যাত্রীরা বলে জানান তারা।
এদিকে লঞ্চ চলাচল চালু হওয়ায় খুশি লঞ্চে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা। তারা জানায়, বন্ধ থাকার কারণে তারা ঘরে শুয়ে বসে দিন কাটিয়েছে। অবশেষে লঞ্চ চালু হওয়ায় তাদের কর্মচাঞ্চল্য ফিরে পাওয়ার সাথে সাথে আয় রুজির পুনরায় ব্যবস্থা হল।
লঞ্চ সুপারভাইজার আজগর আলী সরকার জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তা মাক্স পরিধান এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ সজাগ দৃষ্টিতে আছে।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ এর উপ-পরিচালক কায়সারুল ইসলাম জানান, সরকারি নির্দেশনা মেনে লঞ্চের ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী এবং নির্ধারিত ভাড়ায় লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। এছাড়াও যাত্রীদের নিরাপত্তা হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাক্স পরিধানসহ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে বিআইডব্লিউটিএ, নৌ পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন কাজ করছে।
উল্লেখ্য, এদিন লঞ্চে যাত্রীদের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ডেক ১৬০, ১ম শ্রেণি ও বিজনেস ক্লাস ৪০০, সিংগেল কেবিন ৫০০ ও ডাবল কেবিন ১০০০। এছাড়া চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও বিভিন্ন অঞ্চলের মোট ৩৫টি লঞ্চ চলাচল করে।
নজরুল ইসলাম আতিক