সম্পাদকীয়:
অপরাধ-অপরাধী শাসন-প্রসাশন নিরাপত্তা শৃঙ্খলা এসব আবহমানকাল থেকে চলে আসছে। প্রশাসন নিরাপত্তা ও শৃংখলার জন্য কাজ করবে, কাজ করে আসছে। একসময় অপরাধী অপরাধ করে পার পেতে কষ্ট হতো। এখন এমন এক সময় চলছে, যে সময় অপরাধ করা যেন এটাই নিয়ম। ন্যায় পথে থাকা এবং ন্যায়ের কথা বলা অপরাধ।
একটা অপরাধ চক্র তাদের অপরাধী মন থেকে একজন সদস্যকে ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা প্রবল প্রচেষ্টা একদিনে তৈরি হয়নি। বর্তমান সময়ে প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও সঠিক পথে চলা যত কঠিন, অন্যায় পথে চলা অন্যায় কাজ করা ও অন্যায়ের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্বার্থ হাসিল করা স্বার্থকে মেলে ধরা মামুলি ব্যাপার মনে হয়। তা না হলে দৈনিক শপথ পত্রিকা ৭ ফেব্রæয়ারি এমন ঘটনাই প্রকাশ করেছে হাজীগঞ্জে হাতকড়াসহ আসামি ছিনতাই। পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরিতাপের বিষয় এমন এক আসামি পরপর ২০ মামলার আসামি হয়ে তার সহকারীরা মাদক কারবারি তাকে প্রশাসনের থেকে ছিনতাই করে নিয়ে যায়। তাহলে সময়ের ব্যবহার সময়ের প্রাপ্তি সময় এর উপযোগিতা সময়েরও প্রয়োগ সময়ের ব্যবস্থাপনা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তা অনুমান করাও অপরাধ। আরো বড় আজব বিষয় হলো দেশের কোন এক বিষয় নিয়ে যখন আলোচনার ঝড় উঠে সেই বিষয়টাকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য নতুন আরেকটা বিষয় কে উৎক্ষেপণ করা হয়। জেলার ভেতর চলছে এক ধরনের টানাপোড়েন এর ফাঁকে ২০ মামলার আসামি পুলিশের হাত থেকে ছিনতাই করে নিয়ে যায় মাদক কারবারি গ্রুপ। এই লজ্জা সমগ্র জাতির। জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত। আমাদের লজ্জা কোথায় রাখবো বলে শেষ করা যাবে না। একজন জাকির হোসেন ৩৮ বছর বয়স। তার এই অবস্থা একদিনে হয়নি। তার একা প্রচেষ্টায় এতোটুকু পর্যন্ত আসে নাই। এর পেছনে রয়েছে বিশাল দুর্বলতার চিত্র। জাতিকে দেখতে হচ্ছে এমন অনেক ঘটনা। অপরাধ থামাতে বিভিন্ন অফিসের সামনে পোস্টার টাঙানো আছে। বলা আছে দালাল মুক্ত অফিস। কিন্তু দালালি কাজটা আজও থামেনি। যারা টেবিলে টেবিলে বসে আছে দালালরা যে প্রক্রিয়ায় কাজ করতো সেই প্রক্রিয়া থেকে বের হতে পারেনি। তাহলে দালালমুক্ত অফিস বলে কি লাভ হবে? সেদিকে যাব না, সেটা অন্য বিষয়। পুলিশ জানায়, গত ৪ ফেব্রæয়ারি শুক্রবার সকালে হাজীগঞ্জ থানার এএসআই মোজাম্মেল হোসেন আসামি জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন। তবে এ সময় স্থানীয়দের অনুরোধে জাকির হোসেনকে স্থানীয় এক মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। আর এই সুযোগে এলাকার কয়েকজন মাদক কারবারি পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ জাকির হোসেনকে নিয়ে যায়।
চমৎকার একজন নিরপরাধ মানুষ যার কোন আলোচিত পূর্বের কোন অপরাধ নেই তাকে যদি পুলিশ কারণবশত গ্রেপ্তার করে তার জন্য সামাজিক ভাবে মানুষ একাত্মতা পোষণ করে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করলে এমন কি জামিনদার হয়ে আনতে গেলেও ছাড়ে না। সেখানে ২০ মামলার আসামি মামলা পরিচালনা হওয়ার সময় পার করেছে এসময় অত্র অঞ্চলের তার মাদক কারবারি সংখ্যা সংগঠন কত বেড়েছে তাও বলে শেষ করা যাবে না। এমন আসামিকে কয়েকজন লোকের অনুরোধে পুলিশ সুযোগ দেয় জানাজায় অংশগ্রহণ করতে। তা কতটুকু আইনসম্মত ছিল তা দেখার বিষয়ে আদালতের। তাহলে কোটকাচারি আদালত কিসের জন্য। এমন বিষয়ে সচেতন মহলে তুমুল সমালোচনার ঝড় বইছে আর সচেতন মহলের দাবি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এমন ঘটনার অপরাধীদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে সামাজিক অবস্থানের ক্ষেত্রে মাদক কারবারীদের কার্যক্রম থামানোর জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে।