চাঁদপুর শহরের পালবাজারের পুরানো মাংস ব্যবসায়ি মোঃ মাসুদ গাজী। বয়স পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই। কসাই কাজ করে চলেছেন প্রায় দুই যুগ। বাপ-দাদারাও পাকিস্তান আমল থেকে এ ব্যবসা করে গেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় মাসুদ গাজীরা তিন ভাই তাদের পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রেখে প্রায় দুই যুগ ধরে গোস্ত ব্যবসা করে আসছেন। পশু জবাই ও গোস্ত ব্যবসা নিয়ে সম্প্রতি সাপ্তাহিক শপথের সাথে কথা হয় পালবাজারের এই পুরানো গোস্ত ব্যবসায়ি মাসুদ গাজীর সাথে। স্বাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাপ্তাহিক শপথের চীফ রিপোর্টার কবির হোসেন মিজি।
সাপ্তাহিক শপথ: কত বছর ধরে পশু জবাই ও গোস্ত ব্যবসা করে আসছেন ?
মাসুদ গাজী: আমরা প্রায় ২৫ বছর ধরে এই ব্যবসা করে আসছি। আমি একা নয়, এই পালবাজারে আমার আরো দুই ভাইসহ আমরা মোট তিন ভাই প্রায় ২৫/৩০ বছর ধরে গরু জবাই করে গোস্ত এবং চামড়ার ব্যবসা করে আসছি। আমার বড় ভাই আকবর গাজী পালবাজার গোস্ত ব্যবসায়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক। আরেক ভাই মোস্তফা গাজীও আমাদের মতো গোস্ত এবং চামড়ার ব্যবসা করেন।
সাপ্তাহিক শপথ: আর কতোদিন এ ব্যবসা চালাবেন?
মাসুদ গাজী: ছোটবেলা থেকেই আমরা এ কাজে জড়িত হই। আমার দাদা এবং বাবা পাকিস্তান আমল থেকেই এই কাজ করতেন। তাদের সাথে থেকে আমরাও পর্যায়ক্রমে এ কাজ শুরু করি। যতদিন বেঁচে আছি ততোদিন এ পেশাতেই আছি।
সাপ্তাহিক শপথ: আপনারা যখন পশু জবাই করেন, তখন কি কোন মায়া হয় বা কষ্ট লাগে ?
মাসুদ গাজী: একটু তো মায়া লাগবেই। আমরাও মানুষ, আমাদের শরীরেরও রক্ত মাংস আছে, মায়া মমতা আছে। কিন্তু কি করবো এটাতো আমাদের কাজ।
সাপ্তাহিক শপথ: যখন পশুর গলায় ছুরি চালান, রক্ত বের হয়, তখন ভয় হয় ?
মাসুদ গাজী: প্রথম প্রথম একটু একটু ভয় লাগতো। এখন আর তেমন কোন ভয়ডর কাজ করে না। আমাদের পেশাগত কাজ বলেই কাজটা নির্ভয়ে করে যাই।
সাপ্তাহিক শপথ: অনেক ডাক্তারকে নীতিবাচক অর্থে মানুষ কসাই বলে গাল দেয়, এ বিষয়ে কি বলবেন ?
মাসুদ গাজী: যারা আমাদেরকে ছোট করে এমন কথা বলে, সেটাতো গায়ে লাগবেই। যারা আমাদের কাজকে ছোট করে এমন কথা বলে, তারা হচ্ছে বড় কসাই। আমরা প্রকাশ্যে পশুর গলায় ছরি চালাই বলে মানুষ আমাদেরকে কসাই বলে। কিন্তু এদেশে অনেক লোক আছে, যারা প্রকাশ্যে মানুষের গলায় এবং বুকে ছুরি চালায়, অনেক জঘন্যতম কাজ করে। তারা তো আমাদের চেয়েও বড় কসাই। আমরা ব্যবসা করে খাই। আমরা তো আর চুরি করি না। কেউ যদি আমাদেরকে ছোট করে কসাই বলে গালি দেয়, তাহলে আমাদের করার কি আছে?
চাঁদপুর শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়কে (সাবেক স্ট্যান্ড রোড) মাসুদ পরিবারসহ বসবাস করেন। পিতা মৃত খোরশেদ গাজী। তারা পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই পালবাজারে কসাই কাজ করেন। বাকি দুই ভাই বিদেশে থাকেন। তার বাবা এবং দাদা স্বাধীনতার পর থেকেই চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার, পালবাজার, বিপনীবাগে এ ব্যবসা করেছেন। তাদের উত্তরসূরী হিসেবে তারা তিন ভাই মাসুদ গাজী, আকবর গাজী এবং মোস্তফা গাজী, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে মাংস এবং চামড়ার ব্যবসা করে চলেছেন।
আজ,
সোমবার , ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।