সুমন আহমেদ :

হঠাৎ খরস্রোতা মেঘনা নদীর চাঁদপুর অঞ্চলের বেশ কিছু জায়গায় কয়েক লাখ মাছ ভেসে উঠে তীরে ভাসতে থাকে। এসব মাছ মূলত মরে গিয়ে নদী তীরে ভেসে উঠেছিলো গত ৩০ মার্চ। চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার কোল ঘেঁষে বয়ে চলা প্রমত্তা মেঘনায় লাখো মাছের এমন মৃত্যুতে স্থানীয় জেলেদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে কয়েক লাখ মাছের মৃত্যু চিত্র চোঁখে পড়ে। এমন ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও সঠিক কোন কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেনি মতলব উত্তর উপজেলা মৎস অফিস। উপজেলার জেষ্ঠ মৎস কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ঘটনা শুনে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে গিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন। তবে নদীর পানি দূষণ কিংবা অন্য কোন ঘটনা অনুসন্ধান করা মৎস অধিদপ্তরের দায়িত্ব না বলে তিনি জানান।
এসব বিষয়ে অনুসন্ধান করা এবং পানি অথবা মাছের নমুনা সংগ্রহ করা পরিবেশ অধিপ্তরের কাজ বলে জানিয়ে তাদের সাথে কথা বলারও পরামর্শ প্রদান করেন এ কর্মকর্তা। এদিকে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ প্রজনন মৌসুম থাকায় এমন ঘটনায় ইলিশ প্রজননে বাধা নিয়ে শঙ্কাও রয়েছে স্থানীয় জেলেদের মাঝে। সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের জেলেপাড়া, বাবু বাজার,সটাকি, বাহাদুরপুর সহ বিভিন্ন এলাকার মেঘনা নদীর তীরে মরে থাকতে দেখা যায় কয়েক লাখ মাছ।
এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বর্বস্তরে আলোচনার জন্ম নেয়। ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে (ল্যাবরেটরী) পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর জেলায় দায়িত্বরত পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান। এখন পর্যন্ত ল্যাব রিপোর্ট হাতে পাননি বলে জানান এ কর্মকর্তা । এদিকে মৎস অধিপ্তর থেকে অনুমানের উপর নির্ভর করে একটি প্রতিবেদন তৈরী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় অনাবৃষ্টির পর মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ সহ আশে পাশের এলাকা থেকে নির্গত কলকারখানার বিভিন্ন রাসায়নিক বৃষ্টির পানির সংস্পর্শে এসে বিক্রিয়ার ফলে মাছের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে অন্যান্ন বছর এমন বিক্রিয়া কিংবা লাখো মাছের হঠাৎ মৃত্যু কেন ঘটেনি? এমন প্রশ্নের সদুত্তর না দিয়ে তিনি, মৎস গবেষণা ইনস্টিটিউট নমুনা সংগ্রহ করেছে বলে দায়মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেন।
তবে জেলা কিংবা উপজেলা মৎস কার্যালয় থেকে নির্দিষ্ট কোন তথ্য প্রকাশ না হওয়ায় জনমনে থাকা আতঙ্ক ও আশঙ্কা এখনো বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলে জেলেদের জালে ধরা পরা মাছ আহরণ করা কতটা নিরাপদ তা নিয়েও অনিশ্চিত মৎসভোগীরা।