সুমন আহমেদ:
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ট্রলারযোগে ব্যবসায়ীক কাজে চাঁদপুর আসার পথে দিনে দুপুরে দুইটি ট্রলারে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা লুটে নেয় ওই ডাকাত সদস্যরা। এছাড়া তাদের হামলায় অন্তত ৩জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল রোববার দুপুরে চাঁদপুর সদরের মেঘনা নদীর সফরমালী লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, ব্যবসায়ী আক্কাস শেখ (৩৫), হাকিম গাজী (৪৮) ও ট্রলারের মাঝি উজ্জল শেখ (২৫)। পরে তাদের মধ্যে গুরুতর আহত আক্কাস শেখ ও উজ্জল মাঝিকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ট্রলারে থাকা সবাই মতলব উত্তর উপজেলার আমিরাবাদ ও গৌরাঙ্গ বাজারের ব্যবসায়ী।
ট্রলারে থাকা আহত ব্যবসায়ী হাকিম আলী গাজী জানায়, মেঘনা নদীর সফরমালী লঞ্চঘাটের কাছে আসলে স্পীডবোড নিয়ে ৮ থেকে ৯জন মুখোশধারী ডাকাত কাটা রাইফেল, শটগান, রামদা ও রড নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারা আমাদের কাছে থাকা টাকা-পয়সা ও আমাদের মোবাইলগুলো নিয়ে যায়। পরে তারা মেঘনা নদীর উত্তর দিকে চলে যায়। ওদের সবার গায়ে লাইফ জ্যাকেট ছিল।
ট্রলারের মাঝি উজ্জল শেখ (২৫) জানায়, আমার ট্রলারে ডাকাতরা স্পীডবোড দিয়ে উঠেই মারধর শুরু করে। কয়েকজন ব্যবসায়ী ট্রলারে সাথে আসে নাই। তারা আমার কাছে ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদপুরের পার্টিদের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য দেয়। সব টাকা ডাকাতরা নিয়ে গেছে।
আহত পাইকারী মুদি ব্যবসায়ী আক্কাস শেখ জানান, আমার কাছে ৯ লাখ টাকা ছিল। টাকা দিতে দেরি করায় রড দিয়ে আমার হাত ভেঙ্গে ফেলে এবং টাকা ছিনিয়ে নেয়।
তেলের ডিলার ব্যাপারী ট্রেডার্সের মালিক আতাউর রহমান সবুজ জানান তার টাকা ছিল ৩ লাখ ৫০ হাজার, তেলের ডিলার নাইমা ট্রেডার্সের মালিক মোহাম্মদ হোসেন জানান তার টাকা ছিল ৩ লাখ ১১ হাজার, মরিচের পাইকার খোকন মেম্বার জানান তার টাকা ৩ লাখ ১০ হাজার, গৌরাঙ্গ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী কামাল মল্লিক জানান তার টাকা ৩ লাখ ১৫ হাজার, রহমআলী গাজী জানান তার ১ লাখ ১০ হাজার টাকা যা সব ডাকাতরা নিয়ে গেছে।
চাঁদপুর নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, আমি খবর পেয়ে সাথে সাথে চাঁদপুর সদর ও মোহনপুর নৌ-পুলিশের ওসিকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দিয়েছি। সাথে সাথেই নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেনকে পাঠিয়েছি। ব্যবসায়ীদের মিসিং মোবাইলের নম্বর আমার কাছে চলে আসছে, আমি সেগুলো নিয়ে ডাকাতদের ধরার বিষয়ে যা যা করণীয় সবই করছি। আশা করি দ্রæতই ডাকাতদের আটক করতে সক্ষম হবো।
ঘটনাস্থলে পরিদর্শন শেষো চাঁদপুর নৌ-পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান, ডাকাতদের ধরার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাজই আমরা শুরু করে দিয়েছি। তবে এই ডাকাতির ঘটনায় স্থানীয়দের যোগসাজশ থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। তবে এতো টাকা নিয়ে নৌ-পথে মোকামে গেলে আমাদের সহযোগিতা নিলে সবার জন্য সহজ হবে।