সম্পাদকীয়
‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ বঙ্গবন্ধুর সেই মহান ভাষণের শক্তিতে আমরা পেয়েছি আমাদের মহান বিজয়। ৭ মার্চের ভাষণ মুক্তির আন্দোলন মুক্তির ডাক স্বাধীনতার আশা সঞ্চারিত আন্দোলন মহাসমাবেশ আমাদেরকে এ পর্যন্ত এতটুকু এগিয়ে আনছে। আমরা পৃথিবীতে উন্নয়নশীল জাতি হিসেবে পরিচিত হলেও এর গভীরে রয়ে গেছে দারুন দহন অজস্র যন্ত্রনা প্রায় ১৯ কোটি মানুষের বসবাস বাংলাদেশে। এদেশের মানুষ কয়েকটি শ্রেণীতে বিভক্ত। যার মধ্যে এলিট শ্রেণী, বিত্তবান শ্রেণী, মধ্যবিত্ত শ্রেণী, নি¤œ মধ্যবিত্ত শ্রেণী, দরিদ্র শ্রেণী এমনকি ভূমিহীন ভাসমান শ্রেণীও রয়েছে। বাংলাদেশের মোট মানুষের অভ্যন্তরে দুর্ভিক্ষ বিদ্যমান। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের অনেক কিছুই এখন দৃশ্যমান। বিশেষ করে মানুষের নিত্যপণ্য দ্রব্যাদির উপরে লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির বৈচিত্রময় পরিস্থিতি বিভিন্ন নাটকীয়তার জন্ম দিচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি থামাতে পারছে না আবার কেউ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকে পুঁজি করে রাজনীতি করছে। কাজের কাজ জনগণের কিছুই হচ্ছেনা। ঊর্ধ্বগতিকে কেন্দ্র করে রাজনীতির এপিঠ ওপিঠ হলেও সাধারণ জনগণের কতটুকু কল্যাণ হচ্ছে সেটা পরিমাপ করার কে রয়েছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে উপার্জন আর নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি কোনভাবেই সামাল হচ্ছেনা। সাধারণ জনগণ সামলে উঠতে পারছে না এই চাপ। রাজনীতি আর জনগণের মূলনীতি বেঁচে থাকার যুদ্ধ দুইটা এখন মুখোমুখি অবস্থান করছে। জনগণ সীমাহীন কষ্টের কথা কারো কাছে বলতে পারছেনা। প্রতিবাদ করে বা করার কোন সুযোগ পাচ্ছে না। সরকার জনগণকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার প্রক্রিয়া করলেও তা কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ, কতটুকু বাস্তবসম্মত তৃণমূল পর্যায়ে খবর নিলেই তার বাস্তবতা পরিলক্ষিত হয়। জনগণকে আশ্বাস সরকার দিচ্ছে, সে আশ্বাসে জনগণ কতটুকু বাস্তবে প্রাপ্ত হবে সেটাও দেখার বিষয়। কিন্তু এই মুহূর্তে জনগণকে দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের জীবনকে বিষিয়ে তুলছে। এখন সরকার জনগণ দুই অবস্থান দুই মেরুতে। বিশেষ করে সরকারের আমলা সমাজের কোন সমস্যা নেই। তাদের বেতন বৃদ্ধি তাদের সমস্যাকে লাঘব করে দিয়েছে। কিন্তু কোটি কোটি জনগণের জীবন একেবারেই থমকে আছে। মানুষ প্রতিনিয়ত দেশের এনজিও সংস্থার কাছে জিম্মি হয়ে যাচ্ছে। তাদের ঋণ গ্রহণ করে ওইটা কাজে লাগানোর আগেই সংসারের কাজে খরচ হয়ে যায়। এতে ঋণ দাতা সংস্থাগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে হয়। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি অত্যাধুনিক হয়ে জনজীবনে উন্নত সরঞ্জামাদি দিলেও অর্থনৈতিক উন্নতি মানুষের হচ্ছে না তার কারণে খাপ খাইয়ে চলা এদের জন্য এখন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের উচিত জনগণের বেঁচে থাকার যুদ্ধ স্বাচ্ছন্দে জীবন-যাপন করার যুদ্ধ থামিয়ে জনগণকে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে দ্রব্যমূল্য আনার চেষ্টা করতে হবে।