সুমন আহমেদ:
মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ হয় ১১টি ঘর। সাদুল্লাপুর গ্রামে অবস্থিত ওই ঘরগুলোতে বর্তমানে ১১টি পরিবার বসবাস করছে। কিন্তু এখন বিদ্যুৎ, পানি, শীতবস্ত্র সংকটসহ নানান অসুবিধায় জীবন যাপন করছে তারা। কনকনে শীতেও কেউ খোঁজ নেয়নি তাদের। সরেজমিনে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা।
তাদের মধ্যে আছিয়া, প্রিয়াংকা, মঞ্জু রানী, আরিফ ও তছি বেগমের ঘরে বিদ্যুতের মিটার সংযোগ নেই। ঘরে উঠার পর কিছুদিন অন্ধকারে থেকে বাধ্য হয়ে সাইড লাইন দিয়ে আলো জ্বালাচ্ছেন তারা। আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসরতদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে দুইটি গভীর নলক‚প। স্থাপনের কিছুদিন পর থেকেই যার একটি বিকল হয়ে যায় আর অপরটিতে পরিমাণ মত পানি উঠে না। যার কারণে সুপেয় পানির অভাবে ভুগছে পরিবারগুলো। এমনকি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তদারকি নেই বলে জানান তারা।
গুচ্ছগ্রাম নির্মাণের পর থেকে এক বছর ধরে এই সমস্যাগুলো নিয়ে দিনাতিপাত করছেন তারা। প্রিয়াংকা, মঞ্জু রানী ও তছি বেগম বলেন, আমাদের ঘরে বিদ্যুতের মিটার নেই। ঘরে থাকতে পুরো সমস্যা হচ্ছিল। পরে পাশের ঘর থেকে সাইড লাইন এনে কোনরকম চলছি। খাবারের পানি নাই, গোসলের পানি নাই, টয়লেটের ট্যাঙ্কের অবস্থা ভালো না। তাই এখানকার স্থানীয় মানুষদের সাথে আমাদের প্রতিনিয়তই তর্ক করতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার শীতবস্ত্র পর্যন্ত এখনো কেউ দেয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, প্রশাসনের কোন কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান, মেম্বার কেউ আমাদের খোঁজ খবর নেয় না। আমরা কি হালে আছি।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরিফুল হাসান বলেন, ঘরগুলো নির্মাণ করে আমরা প্রতিটি ঘরের থাকা বাসিন্দাদের কাছে দলিল করে হস্তান্তর করেছি। টিউবয়েল ও বিদ্যুতের সমস্যা থাকলে আমরা সরেজমিন দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সমস্যা সমাধান করে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় মতলব উত্তরের ছেঙ্গারচর পৌরসভায় ৫টি, গজরা ইউনিয়নে ৫টি ও সাদুল্লাপুর ইউনিয়নে ১১টি সহ মোট ২১টি ঘর নির্মাণ করা হয়। গত বছরের জানুয়ারিতে এই ঘরগুলো মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে বরাদ্দ করা হয় ভূমি ও আশ্রয়হীন মানুষের জন্য। প্রতিটি ঘর নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। বাসস্থানহীন পরিবারের মাঝে ঘরগুলো বরাদ্দ করে দলিল করে দেয়া হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নের ঘরগুলোতে বাসিন্দারা কেমন আছে? তা পরবর্তী খবরে প্রকাশ করা হবে।