সুমন আহমেদ:
মতলব উত্তরে আগাম শিম চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চলতি মৌসুমে লাভের আশায় আগাম শিম চাষ করেছেন কৃষকরা। আবহাওয়া ও জমি চাষের উপযোগী হওয়ায় শিমের বাম্পার ফলনও হয়েছে। বাজারে দাম ভালো পেলে লাভবান হবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষক নান্নু মিয়া (৪৫) বলেন, আবহাওয়ায় ও বাজার দরও বেশ ভালো। তার দেখাদেখি অন্যান্য অনেক কৃষকরা আগ্রহী হয়ে শিমের চাষ করেছেন। প্রথমে অল্প-অল্প জমিতে শিমের আবাদ করলেও এখন ব্যাপক হারে শিম আবাদ করছেন। কৃষক নান্নু মিয়া জানান, প্রতিবছর শিম বিক্রি করে লাখ-লাখ টাকা আয় করছেন। তিনি গত বছরের মত এবছর দেড় বিঘা জমিতে অটো জাতের শিম চাষ করেছেন। কমপক্ষে দেড় লাখ থেকে ২ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, বর্তমানে শিমের আবাদে নানা উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় কিছুটা বেশি। বীজ লাগানোর পর থেকে এক বিঘা জমিতে শিম আবাদ করতে বীজ, সার, বাঁশ, তার, শ্রমিক, সেচ খরচ হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। শিমের গাছ মাচায় উঠে গেলে ফুল এবং ফল ধরার সময় পোকা দমন এবং পচন রোধে প্রায় প্রতিদিন ওষুধ স্প্রে করতে হয়। ৪৫ থেকে ৫০ দিনে গাছে শিম ধরা শুরু করে। এখানকার কৃষকদের উৎপাদিত শিম বাজারজাত করতে অন্য কোন স্থানে যেতে হয় না। পাইকারি ক্রেতারা এসে তাদের কাছ থেকে শিম কিনে নিয়ে যায় বলেও তারা জানান।
ছেংগারচর পৌরসভার ঢালীকান্দি গ্রামের কৃষক আবুল কালাম ও দক্ষিণ বালুরচর গ্রামের সোহাগ বলেন, মৌসুমের শুরুতেই বাজারে শাকসবজি তুলতে পারলে চাহিদা বেশি থাকে, দামও বেশি পাওয়া যায়। আগাম সবজি চাষ করতে হলে যেমন অর্থ খরচ হয়, তেমনি শ্রমও দিতে হয় বেশি।
ছেংগারচর পৌরসভার মোহাম্মদ আজগর জানান, প্রতিবছরই আগাম শীতকালীন শিম চাষ করে থাকেন তিনি। ১৯৯৮ সাল থেকে চাষ করে আসছেন। পরিকল্পিতভাবে শিম চাষ করলে লাভবান হওয়া সম্ভব। এতে আগ্রহী হয়ে এবছরও ব্যাপকভাবে শিমের চাষ করেছেন তিনি। গত দু’সপ্তাহ আগে থেকেই তিনি বাজারে বিক্রি করছেন ১২০ টাকা কেজি দরে। শিম বিক্রি থেকে এ বছর প্রায় এক লাখ টাকা আয় হতে পারে তার।
মতলব উত্তর উপজেরা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সালাউদ্দিন দৈনিক শপথকে বলেন, গত বছর ১শ ৫০ হেক্টর জমিতে গ্রীস্মকালীন শিমের আবাদ হয়েছিল আর এ বছর প্রায় ২শ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে শিমের উত্তোলন শুরু হয়ে গেছে এবং বাজারে বিক্রি হচ্ছে। অসময়ে শিমের দামটা বেশি পাওয়া যায়। এই জন্য কৃষকরা আগ্রহী হয় এবং লাভ ভালো পাওয়া যায়।