এইচ.এম নিজাম:
মতলব দক্ষিণ উপজেলার রসুলপুর গ্রামের গৃহবধূ রহিমা হত্যা হত্যার দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যাল আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
প্রত্যেক আসামিকে নারী শিশু নির্যাতন আইনের ৩০২/৩৪ ধারায় মৃত্যুদন্ড এবং ৯ (১)-এর ৩০ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদÐ দেয় আদালত। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী (পিপি) সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু দৈনিক শপথকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদÐপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন: রসূলপুর গ্রামের ফজলুল হক মাস্টারের ছেলে মোহাম্মদ জিয়া (৩২), আবুল খায়ের মিয়াজির ছেলে কামাল হোসেন মিয়াজি, আব্দুল জলিলের ছেলে আবুল বাশার (৪৮), নজরুল ইসলামের স্ত্রী মোসাম্মৎ মাহমুদা বেগম (৩৮)। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে মাহমুদা আক্তার পলাতক রয়েছেন। বাকি তিন আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
বাদী পক্ষের আইনজীবী সাইয়্যেদুল ইসলাম বাবু জানান, ২০১৩ সালের ২১ মে রসুলপুরের রহিমা আক্তার নামের ওই নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ বাড়ির পাশে ভুট্টা ক্ষেতে ফেলে যান আসামিরা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রহিমার পাশের বাড়ির প্রবাসীর স্ত্রী মাহমুদা বেগম ও কামাল হোসেনের সাথে অবৈধ সম্পর্কের কথা রহিমা আক্তার জানতে পারে। এতে তাদের সাথে রহিমার দ্বন্ধ বাঁধে। এই ঘটনার জেরে কামাল ও মাহমুদা বেগম রহিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
২০১৩ সালের ১৯ মে রহিমা আক্তার তার পিতার বাড়ি থেকে নায়েরগাঁও স্বামীর বাড়িতে যায়, ২০ মে স্বামীর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ির আসার কথাটি ফোনে তার বাবাকে জানান। ২০ মে রহিমা বাড়িতে ফিরে না আসায় তাকে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করেন তার স্বজনরা।
পরে খবর পাওয়া যায় রসুলপুর গ্রামের কদম আলী প্রধানিয়া বাড়ির পূর্ব পাশে আক্কাস আলীর ভুট্টা খেতে অজ্ঞাত একটি মরদেহ পড়ে আছে। পরে অজ্ঞাত মরদেহ রহিমা আক্তারের বলে সনাক্ত করে তার বাবা ও স্বজনরা।
ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা সফিউল্লাহ মিয়াজী বাদী হয়ে রহিমার স্বামী আবু জাফরকে আসামী করে মতলব দক্ষিণ থানায় মামলা দায়ের করেন, মামলা নং ০৮/১৩। তবে পরে পুলিশি তদন্তে অভিযান চালিয়ে সন্দেহজন ৩ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আসামিগণ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। সমশেষ মঙ্গলবার আদালত সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এ রায় ঘোষণা দেন। এ মামলায় আসামী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডঃ সফিকুর রহমান ভূঁইয়া।