সোবহান ফারুক:
মতলব দক্ষিণের ভুয়া বিচারপতি পরিচয়দানকারী আসামী বিপ্লব হোসেন প্রধানকে শনিবার চাঁদপুর জেলা জজ কোটের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে মতলব দক্ষিণ থানায় মামলা করে পুলিশ। মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ জানায়, বিপ্লব হোসেন প্রধান সাজাপ্রাপ্ত আসামী। তার বিরুদ্ধে পূর্বেই মতলব দক্ষিণ থানায় ৩টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলায় আদালত তাকে ১ বছর করে সাজা প্রদান করেন। যার একটি মামলা চলমান। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে থানায় আরেকটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। সে মতলব দক্ষিণ উপজেলায় একটি গ্রিল ও আলমারি তৈরির কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। এই পরিচয় লুকিয়ে উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি পরিচয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফেরার পথে পুলিশের প্রটোকল চান তিনি। এর আগে ঢাকা থেকে ফেরার পথে বিভিন্ন সুবিধাও নেন তিনি। যদিও চাঁদপুরে প্রবেশের সাথে সাথে বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাকে আটক করা হয়। তার প্রটোকল চাওয়ার বিষয়টি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ জানতে পারলে প্রথমেই তার সন্দেহ হয় এবং তাৎক্ষণিক তার বিষয়ে খোঁজখবর নিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়কে নির্দেশনা প্রদান করেন। পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে অভিযুক্ত বিপ্লব প্রধান ওই গ্রামের মৃত মাহাবুব প্রধানের ছেলে। তিনি উপজেলা সদরের কলেজ গেট এলাকায় একটি গ্রিল ও আলমারি তৈরির কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। কয়েক বছর আগে তিনি নিজেকে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ বলেও দাবি করেন বলে স্থানীয়রা জানান।
পুলিশ জানায়, নিজেকে উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি পরিচয় দিয়ে ঢাকা থেকে একটি প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় রওনা দেন বিপ্লব প্রধান। পথে বিভিন্ন জায়গায় বিচারপতির প্রটোকল সুবিধা নেন। দাউদকান্দি পেরিয়ে এলে কুমিল্লা পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়, একজন বিচারপতি তার নিজ বাড়িতে আসছেন। তাকে পুলিশ প্রটোকল দেয়ার জন্য মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশকে জানানো হয়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, তার বিরুদ্ধে থানায় পূর্বেই তিনটি মামলা রয়েছে। দুইটি মামলায় সাজা হয়েছে। একটি মামলা চলমান রয়েছে। ওই দিনের ঘটনায় আরেকটি নিয়মিত মামলা হয়েছে। আটক বিপ্লব হোসেন প্রধানকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, বিপ্লব প্রধান একটি প্রাইভেটকার ভাড়া নিয়ে ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা হন। পথে পুলিশের কাছে এসে নিজেকে বিচারপতি বলে পরিচয় দেন। পরে থানার চারজন অফিসারকে তার বাড়িতে পাঠানো হলে তারা বাড়ির পরিস্থিতি এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে জানতে পারেন, তিনি বিচারপতি নন। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।