নজরুল ইসলাম আতিক:
কৌশলে বেকারীর ভোগ্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি করে দিয়েছে চাঁদপুর বেকারি ও কনফেকশনারী মালিক সমিতি। নতুন ধার্যকৃত মূল্যের দাম নিয়ে ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেছে। মূল্য তালিকাটির আইনগত কোন অনুমোদন আছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ ভোক্তা। গত ৬ ডিসেম্বর থেকে নতুন মূল্য তালিকা অনুযায়ী পণ্য বিক্রি হতে দেখা গেছে। মহামারী করোনায় মানুষের যেখানে দুই বেলা খাবার জোটাতে কষ্ট হয় সেখানে বেকারি পণ্যের দাম বৃদ্ধি করায় সাধারণ মানুষের মনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন।
জানা যায়, নতুন মূল্য তালিকা প্রকাশের আগে শুক্রবারসহ দুইদিন মালিক কর্তৃপক্ষ বেকারি বন্ধ রাখে। তারপর পণ্যের সাময়িক সংকট তৈরি করে বাজারজাত শুরু করে। অবশ্য এ দুই দিনের ফাঁকেই নতুন মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে চাঁদপুর জেলা ও কনফেকশনারী মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ দেয় প্রায় প্রতিটি দোকানে।
মূলত হতদরিদ্র অসহায় মানুষ অনেক সময় বাটার বন, গোলবন, শিরা ডেনিস, টিপিন কেক, শাহী কেক, শ টুস, মধু বন ইত্যাদি জাতীয় খাবার খেয়ে তাদের ক্ষুধা নিবারণ করে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির কারণে এখন সেটাও তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বেশিরভাগ বেকারি পণ্য বিক্রেতাও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
চেয়ারম্যানঘাট জি টি রোডের দোকানদার মোঃ আব্বাস, সফি উল্লাহসহ বেশ কয়েকজন দোকানী বলেন, আগে দিনে দু একটি রুটি গরীব অসহায় মানুষকে এমনিতেই দিতাম কিন্তু এখন মনে হয় আর তাও পারবো না। দাম বৃদ্ধি হওয়াতে আমাদের বিক্রিও অনেক কমে গেছে। কেউ কেউ বলছেন বেকারী কাজে ব্যবহৃত মুদি সামগ্রীর দাম অল্প কিছু বাড়লেও বেকারি পণ্যের দাম তুলনামূলক বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এতোদিন আটার খুচরা মূল্য ছিলো ২৮ টাকা যা এখন বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দুই টাকা বেশি দরে।। চিনির দাম ছিলো ৬০ এখন ৬২-৬৫। আর ময়দার দাম একটু বেড়েছে কেজি প্রতি দুই থেকে তিন টাকা। সে তুলনায় বেকারী পন্যের দাম বাড়ানো হয়েছে তুলনামূলক বেশি এমনটাই অভিযোগ করেছেন অনেক ভোক্তা। অপরদিকে অভিযোগ রয়েছে ৫৫ গ্রামের পন্যে ৫০ গ্রাম, ৭০ গ্রামের পণ্যে ৫০-৬০ গ্রাম, ১৭০ গ্রামের পন্যে ১৫০ গ্রাম দেয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ওজনের দিক থেকে সাধারণ মানুষ ঠকছে। ওজন ঠিক রাখার জন্য নির্দিষ্ট তদারকি প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন ভোক্তভূগিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সেলসম্যান জানান, মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমাদের পন্য সেলের পরিমাণ কিছুটা কমে গেছে। তাছাড়া পণ্য দিতে গিয়ে বিভিন্ন দোকানি ও সাধারণ মানুষের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। অনেক সময় সাধারণ মানুষ আমাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে কিন্তু আমাদের কিছুই করা নেই।
এ বিষয়ে বেকারি ও কনফেকশনারী মালিক সমিতির সভাপতি এস এম জয়নাল আবেদীন বলেন, ১২ বছর পর আমরা বেকারি পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেছি। ইতিমধ্যে সব কিছুরই দাম বেড়ে গেছে। আটা, ময়টা, চিনি, ঘি, তেল, গ্যাস স্টাফসহ যাবতীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে আমরা আমাদের বেকারি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি করেছি। দীর্ঘদিন আমরা এ ব্যবসায় লস দিয়ে আসছি তাই সময়ের প্রয়োজনে আমরা মূল্য বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছি।