স্টাফ রিপোর্টার:
মহান বিজয় দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবস আমাদের গৌরবের একটি দিন। এবার দিবসটি ৫০ বছরের। করোনার দুর্বিষহতায় আমরা অনেক জাতীয় অনুষ্ঠানাদিই সেভাবে করতে পারিনি। সারাদেশেই এমন স্থবিরতা বিরাজমান ছিলো। আমরা ১৮ মাসের ঐ স্থবিরতা সবখানি কাটিয়ে উঠতে না পারলেও আগের তুলনায় অনেকটা ভালো অবস্থানে আছি। তার জন্যে ডিসেম্বরে মহান বিজয় দিবসসহ মাসব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করার একটা প্রস্তুতি আমরা নিয়ে রেখেছি। আশা করি, আমাদের সকলের প্রচেষ্টায় ১৬ ডিসেম্বরে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করতে পারবো। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ১৪ ডিসেম্বর পালন এবং মহান বিজয় দিবস উদযাপনে জাতীয়ভাবেই আমাদের কর্মসূচি পাঠানো হয়েছে। সেটিকে সমন্বয় করে আমরা চাঁদপুরেও তা করতে যাচ্ছি।
জেলা প্রশাসক বলেন, ১৬ ডিসেম্বরের কর্মসূচির মধ্যে: জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১বার তোপধ্বনি এবং এরপর পুষ্পস্তবক অর্পন করা হবে। পুষ্পস্তবক অর্পণের ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শহরের অঙ্গীকার পাদদেশে তা হবে। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর একেক করে সরকারি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, রাজনীতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো অঙ্গীকারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে।
তিনি আরো বলেন, গতবারের থেকে একটু বাড়ালেও সীমিত পরিসরেই কুচকাওয়াজ হবে। এবারও কোন বদ্ধ জায়গাতে না দিয়ে খোলা জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে তা হবে গত ২৬ মার্চের জায়গা তথা স্টেডিয়ামে। সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাত করা হবে। বিকেল ৩টায় স্টেডিয়ামে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলা হবে। এছাড়াও এ মাসে টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। যদি বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয় তাহলে বিজয় মঞ্চে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আলোচনা সভা হবে আর বিজয় মেলা যদি না হয় তাহলে শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী করা হবে। সন্ধ্যায় শিল্পকলায় অথবা মেলামঞ্চে আলোচনা সভা। সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আলোকসজ্জা করা হবে। আলোকসজ্জা যাদের ভালো হবে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। জেলা প্রশাসক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অঙ্গীকারের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। আপাতত একটা সংস্কার করতে হবে। সেটা আমরা করে দেবো। আর স্থায়ীভাবে এটিকে সংস্কার করার জন্য প্রশাসন, পৌরসভা এবং সাহিত্য সাংস্কৃতিক এবং সাংবাদিক ব্যক্তিবর্গ নিয়ে আমরা বসবো। জেলা প্রশাসক বলেন, বিজয় দিবসে নিয়মনীতি মেনে পতাকা উত্তোলন করতে হবে। এর জন্য কমিটি কাজ করবে। যারা পতাকা উত্তোলনে অনিয়ম অনীহা বা অসম্মান দেখাবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুননাহার চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সাহিত্য একাডেমির মহাপরিচালক কাজী শাহাদাত, পুরান বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, জেলা কালচারাল অফিসার মোঃ আয়াজ মাবুদ, শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় ভৌমিক, অনন্যা নাট্যগোষ্ঠীর সভাপতি শহিদ পাটোয়ারী, অনন্যা নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মৃনাল সরকার প্রমুখ।
এদিকে এ প্রস্তুতি অনুষ্ঠানে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ওইদিন সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে স্বাধীনতা যুদ্ধে চাঁদপুরে শহীদ হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মিত স্তম্ভটিতে পুস্পস্তবক অর্পণ এবং পরে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।