স্টাফ রিপোর্টার:
জৈব পদার্থ মাটির প্রাণ। মাটির পুষ্টিমান এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্যে জৈব পদার্থের বিকল্প নেই। সাধারণভাবে জৈব পদার্থ হলো গাছ-পালা ও জীব-জন্তুর মৃত দেহ মাটিতে পচে যে পদার্থের সৃষ্টি হয় তাই জৈব পদার্থ। আর জৈব পদার্থ হতে সংগ্রহীত ও রুপান্তরিত সবই হলো জৈব সার।
তার সারা পৃথিবী স্বীকৃত ভারমি কম্পোস্ট/কেঁচো সার সর্ব উৎকৃষ্ট। শত শত বছর ধরে পৃথিবীতে এই সারের প্রচলন হয়ে আসছে।
বাংলাদেশে কেঁচো সার উৎপাদন, ব্যবহার, বিপনন ও স¤প্রসারণে ভূমিকা রেখে চলছেন কৃষক মোঃ হাবিবুর রহমান এবং তার একমালিকানা প্রতিষ্ঠান এইস, এস বন্ধু ভারমি কম্পোস্ট। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সাল থেকে নিবন্ধিত। তিনি কেঁচো সার উৎপাদনকারী উদ্যেক্তাদের প্রশিক্ষণও দিয়ে যাচ্ছেন। চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ানপুর ইউনিয়নের বারোইগাঁও গ্রামের মোঃ লুতফর রহমানের ছোট ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান। শিক্ষাজীবনে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। এরপর যুব উন্নয়ন থেকে তিন মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ। এছাড়া কৃষি বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। স¤প্রতি ঊহঃৎবঢ়ৎবহবঁৎংযরঢ় উবাবষড়ঢ়সবহঃ চৎড়মৎধস ( বাংলাদেশ ব্যাংক ) এ ট্রেনিং নিচ্ছেন।
২০১৪ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছেন মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতকরণে। নিজে কেঁচো সার উৎপাদন করেন, নিজেই ব্যবহার করেন।
এ প্রসঙ্গে কৃষক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, এই কেঁচো সার নিয়ে কাজ করাটা মোটেই সহজ ছিলো না। বরং এটি ছিলো খুবই চ্যালেঞ্জিং কাজ। কারণ মাস্টার্স কমপ্লিট করা কোনো যুবকের কাছ থেকে তার পরিবার এমন উদ্ভট কাজ আশা করে না। পরিবার ও সমাজের মানুষের ভাষায় এ যেনো পাগলামি ছাড়া আর কিছুই ছিলো না। কিন্তু তিনি হাল ছাড়িনি।
সোনার বাংলার সোনার মাটি যেনো তামা হয়ে গেছে রাসায়নিক সারের অপরিকল্পিত রমরমা ব্যবহারে। বাংলাদেশ সরকার জৈব কৃষিতে খুবই জোরদার ভূমিকা রেখে চলছে। মোঃ হাবিবুর রহমান জৈব কৃষি আন্দোলনে একজন সৈনিক হতে চেয়েছেন।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর-নভেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ইউরোপীয় একটি অর্গানাইজেশনের তত্ত¡াবধায়নে খুলনা বিভাগের বাগেরহাট জেলায় দরিদ্র কৃষকের মাঝে (১৫ কেজি করে ১০ হাজার ২৯২ জন কৃষককে) ১ লাখ ৫৪ হাজার ৩শ ৮০ কেজি। প্রতি ব্যাচে ২৫ জন করে ৬টি ব্যাচে মোট ১৫০ জন উদ্যোক্তাকে কেঁচো সারের উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং প্রত্যেককে ১টি করে কেঁচো সারের খামার করে দিয়েছেন। এই খামার করতে প্রতিটি উদ্যোক্তাকে দেয়া হয়েছে ২টি রিং, ২ টি ¯øাব, আধা কেজি কেঁচো। এই টোটাল প্যাকেজটি করেছেন মোঃ হাবিবুর রহমান এবং তার একমালিকানা প্রতিষ্ঠান ‘এইস.এস বন্ধু ভারমি কম্পোস্ট’।
২০২০ সালে চাঁদপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ‘অনুরণন’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে। সেখানে মোঃ হাবিবুর রহমানের ‘বাংলাদেশে কেঁচো সারের বিপ্লব’ শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশ হয়।