ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:
ফরিদগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীর ওপর দীর্ঘদিন যাবৎ নির্যাতন ও হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার বৈঠক, আদালতে মামলা, থানায় একাধিক অভিযোগ করার পরও অভিযুক্তের হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না প্রবাসীর স্ত্রী। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন এমরান হোসেন স্বপন (৩৫)। বড়ালী গ্রামের সারেং বাড়ির মৃত আবুল হোসেন মিজির ছেলে।
জানা গেছে, কয়েকদিন পূর্বে আদালত থেকে সমন জারি হলে শারীরিক নির্যাতনসহ প্রবাসীর ঘরে ভাংচুর করার অভিযোগও করেছেন প্রবাসীর ওই স্ত্রী। নির্যাতন, ভাংচুর চালিয়ে উল্টো আমার নামে এমরান হোসেন স্বপন অভিযোগ প্রদান করেছেন থানায় বলেছেন নাজমা বেগম।
বড়ালী গ্রামের সারেং বাড়ির মোঃ খোকন মিজি দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে চাকরী করছেন। বাড়িতে তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫), ছেলে আশিকুর রহমান (১৭) ও মেয়ে রাবেয়া আক্তার মিম (১৫) কে নিয়ে নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। একই বাড়ির অভিযুক্ত এমরান হোসেন স্বপন ভূক্তভোগীর বাড়িতে কাজ করতেন। এ সুবাদে নাজমা বেগমের বাড়িতে কয়েক বছর যাবত এমরান হোসেন স্বপনের যাতায়াত রয়েছে। বাড়িতে কাজের সুযোগে আর্থিক অনটনের অজুহাতে স্বপন নানান সময়ে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে টাকা পয়সা হাওলাত চান। বারংবার আবদারের কারণে বিভিন্ন সময়ে নাজমা বেগম তাকে টাকা হওলাত দিয়েছেন। টাকা ফেরত চাইলে সময়ে দুর্বব্যহার, অশ্লীল-অশালীন আচরণ করেন
তিনি বলেন, ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর, ২০-এ ডিসেম্বর ও এ বছরের ১০- ফেব্রæয়ারি পর্যায়ক্রমে তিনটি অভিযোগ দায়ের করেন ফরিদগঞ্জ থানায়। অভিযোগ তদন্ত করে প্রমাণ সাপেক্ষে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ২৩-এ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। এছাড়া নাজমা বেগমের ওপর শারীরিক নির্যাতন ও অবরুদ্ধ থাকার ঘটনায় দু’বার ৯৯৯-এ কল দিলে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে উদ্ধার করে। তিনি বিভিন্ন সময়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। এছাড়াও, এমরান হোসেন স্বপনের নির্যাতনের শিকার হয়ে নাজমা বেগম চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন।
নির্যাতনের শিকার হয়ে বিভিন্ন সময়ে নাজমা বেগম এলাকাবাসীর কাছেও বিচার প্রার্থনা করেন। এতে, গ্রামে একাধিকবার শালিস-বৈঠক হয়। কিন্তু তাতেও কোন সমাধান হয়নি। সর্বশেষ ৯ ফেব্রæয়রি আদালত থেকে সমনজারি হলে ১০ ফেব্রæয়ারি সকাল আনুমানিক ৯ ঘটিকায় বসতঘরে ঢুকে নাজমা বেগমকে মারধর করে ও ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে স্বপন। তিনি কান্না করে বলেন, স্বপন এতোটাই বেপরোয়া যে, জামিনে এসে আমাকে মারধর ও ঘরে ভাংচুর চালিয়ে উল্টো ফরিদগঞ্জ থানায় আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে।
নাজমা বেগম বলেন, ১০ ফেব্রæয়ারি আমাকে পেটানোর পর ৯৯৯-এ কল দেই। এতে থানা থেকে পুলিশ উপস্থিত হয়ে আমাকে উদ্ধার করে ও চিকিৎসার সুযোগ করে দেন। চিকিৎসা নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। অভিযোগের তদন্তক্রমে ব্যবস্থা নিতে এসআই আনোয়ার হোসেনকে হাওলা করেন থানার অফিসার ইনচার্জ।
এ ব্যপারে মুঠোফোনে কথা হয় এমরান হোসেন স্বপনের সাথে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে অনেক কথা সামনা-সামনি বলবো। ফোনে বলা যাবে না। ‘নাজমা বেগম বিভিন্ন সময়ে থানায় কয়েকটি অভিযোগ দিয়েছেন, বিজ্ঞ আদালতেও মামলা বিচারাধীন’- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরাও অভিযোগ আছে। এক পশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, না, এর আগে আমি কোনো অভিযোগ দেইনি। দুই পক্ষের অভিযোগ নিয়ে থানায় বৈঠক হবে। আপনাকে থানার পক্ষ থেকে দাওয়াত দিলাম। সেখানে আসলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, এসআই বরকতের কাছে অভিযুক্ত এমরান হোসেন স্বপনেরও একটি অভিযোগ আছে। তাছাড়া বাদী নাজমা বেগম বলেছেন তারা আপোষ মিমাংসা করবেন। তাই, তদন্তের জন্য ওই বাড়িতে যাওয়া হয়নি।