ফরিদগঞ্জ সংবাদদাতা :
কুমিল্লা জয় করা তারকা ফুটবলার হৃদয় আর খেলতে পারবে তো ?
গোলকিপার হৃদয়। পুরো নাম হৃদয় চন্দ্র দাস। নামের মধ্যেই তারকা শব্দটি জ্বল জ্বল করে যার। শুধু উপজেলা নয়, জেলার শীর্ষ দলগুলোকে হারিয়ে যার দলটি হারিয়েছে বৃহত্তর কুমিল্লার শক্তিশালী ফুটবল দলকেও। ডাক পেয়েছে চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধি ফুটবল দলের গোলকিপার হিসেবেও। খেলেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পর্যায়ের একাধিক ম্যাচ।
ফরিদগঞ্জের সেই ফুটবলার হৃদয় চন্দ্র দাস খেলতে গিয়ে পা ভেঙ্গে গৃহবন্দি গত কয়েকদিন। এক্সরে রিপোর্টে জানা যায় ভেঙ্গে গেছে পায়ের মূল হাড়। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকা! কিন্তু অস্বচ্ছল হৃদয় কোথায় পাবে এত টাকা?
করোনার দুর্দিনে দুবেলা খাবার যোগাতে যারা হিমশিম খেতে হয় তারা কোথায় পাবে এত টাকা? হৃদয়ের বাবা নিম্ন আয়ের একজন ক্ষুদ্র শ্রমজীবী। তাই তার চোখে মুখেও এখন ছেলের পঙ্গুত্বের ছবি ভেসে উঠছে বারবার।
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়,বর্তমান সময়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সবচেয়ে আলোচিত গোলরক্ষকদের অন্যতম একজন হৃদয় চন্দ্র দাস । হৃদয় যখন ফরিদগঞ্জ উপজেলা দলের হয়ে গোলরক্ষকের দায়িত্বে থাকেন প্রতিপক্ষের পায়ের কাপন ধরে যায়, বল জালে জড়ানো একটু বেশি চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়ে, গোলরক্ষক হিসেবে স্কুল টুর্নামেন্টের যে ছেলেটির আত্মপ্রকাশ হলেও ফুটবলের এই ছোট্ট ক্যারিয়ারে কখনো ফরিদগঞ্জ পৌরসভা দল কখনো ফরিদগঞ্জ উপজেলা দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। জেলা পর্যায় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বাঘা বাঘা স্ট্রাইকাররা বহুবার হার মেনেছে হৃদয়ের দক্ষ গোল কিপিং এর কাছে । এই ছেলেটির হাত ধরেই ফরিদগঞ্জ এ আর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কুমিল্লায় আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। নামের পাশে এত শত সাফল্য থাকা প্রতিভাবান কিশোর এই গোলরক্ষকের একটি প্রিতি ফুটবল ম্যাচে ডান পায়ের দুটি হাড় ভেঙ্গে যায়।
উপজেলার পাইকপাড়া ইউ জি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চরবসন্ত বনাম চান্দ্রার মধ্যকার ম্যাচের খেলার শুরুর ৫ মিনিটে ডি-বক্সের মধ্যে প্রতিপক্ষকের এক খেলোয়ারের সরাসরি পায়ে আঘাতে মুহুর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন গোলরক্ষক হৃদয়, অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষণিক চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
সেখানে পায়ের এক্সরে করার পর সদর হাসাপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার জানান, তার ডান পায়ের দুটি হাড় মারাত্মক ভাবে ভেঙে গেছে এবং পায়ের অবস্থা খুবথই আশঙ্কাজনক, যত দ্রুত সম্ভব ঢাকা পঙ্গু হাসাপাতে গিয়ে পায়ের অপারেশন করানো অতি জরুরী । অপারেশন এর ব্যয় প্রায় ৮০থেকে ৯০ হাজার টাকা। হৃদয়ের পরিবারের পক্ষে এতো টাকার বহন করা প্রায় অসম্ভব, তাই উপজেলা ক্রীড়া অঙ্গনের প্রতিভাবান এই খেলোয়াড় পায়ের অপারেশনের জন্য আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন। উপজেলার ক্রিয়াঙ্গানের কর্তা,ক্রীড়া সংস্থা ,রাজনৈতিক ব্যাক্তি সহ বৃত্তবানরা একটুখানি এগিয়ে আসলেই উপজেলার একটি রত্ন আগামী দিনগুলোতে স্বপ্নসারতি রূপে ফিরে আসবে, এতে প্রয়োজন সবার মানবিক সহযোগিতা।
এ বিষয়ের ফরিদগঞ্জ স্পোর্টস ক্লাবে আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন জানান, এরকম একটি অপত্যাশিত ঘটনা উপজেলা ক্রীড়া অঙ্গনের জন্য এক কালো অধ্যায়, ক্লাবের পক্ষ থেকে হৃদয়ের পাশে দাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে ক্লাব কর্তাদের সাথে কথা হচ্ছে আমরা তার চিকিৎসার জন্য একটি ফান্ড সংগ্রহ করার চেস্ট করছি।
অপরদিকে হৃদয়ের সাথের বাকি খেলোয়াড়দের মধ্যে কয়েকজন মিলে সোস্যাল মিডিয়াতে তার চিকিৎসার জন্য মানবিক আবেদনের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। সেখানে নির্দিষ্ট একটি বিকাশ নাম্বার ও হৃদয় এর পরিবারের একটি মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছে। বিকাশ নাম্বার (০১৭৮১৪৭৪৩৯৩) ,হৃদয়(০১৩১০০৩০৮৭১)।
আমি আপনি আপনারা সমাজের সকল বিত্তবানদের ক্ষুদ্র প্রয়াসথই পারে একটি স্বপ্নের পুনঃজাগরণ করতে।