ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:
গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১১নং চর দুঃখিয়া পুর্ব ইউনিয়নে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ তিন প্রার্থী। এসময় তারা ওই ইউনিয়নের গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখে পুনঃনির্বাচনের দাবী জানান। গতকাল শনিবার সকালে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন প্রার্থীরা।
ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে তিন বিজিত প্রার্থীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাছির আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, অপর দুই প্রার্থী সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মর্জিনা আক্তার আঁখি এবং ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী আমিন খান।
লিখিত বক্তব্যে প্রার্থীরা উল্লেখ করেন, গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১১নং চর দুঃখিয়া পুর্ব ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের তিনটি কেন্দ্রে সীমাহীন অনিয়ম ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে।
তিনটি কেন্দ্র থেকে ব্যালট, ব্যালটের মুড়ি ও সিল ছিনতাই করে কেন্দ্রের বাইরে ও ভেতরে ওই ব্যালটে সিলমারা, অবৈধভাবে সিলমারা ওই ব্যালট ভোটের বাক্সে ফেলা, প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেওয়া, প্রতিদ্ব›দ্বী অন্যান্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষের সিলমারা ব্যালট নৌকার পক্ষে গণনা এবং একইভাবে ১, ২ ও ৩ নং কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিদ্ব›দ্বী একাধিক সাধারণ সদস্য ও একজন সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থীর পক্ষের ফলাফল পাল্টে দিয়ে অপর সদস্যকে অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
ওই ইউনিয়নরে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোটের সংখ্যার সাথে সাধারণ সদস্য, সংরক্ষিত সদস্যদের ভোটের সংখ্যার কোন মিল নেই। ১নং কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৬শ ১৩জন। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ফলাফল শিটে মোট কাস্টিং ভোটের সংখ্যা ১ হাজার ৭শ ১৭। সংরক্ষিত সদস্যদের মোট কাস্টিং ভোটের সংখ্যা ১ হাজার ৫শ ৭৮, সাধারণ সদস্যদের মোট কাস্টিং ভোটের সংখ্যা ১ হাজার ৬শ ১৩টি।
নির্বাচনের কয়েকদিন পর গত ৯ জানুয়ারি পুর্ব সন্তোষপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী বাগানে বেশ কিছু সিলমারা ও সিলছাড়া ব্যালট পেপার, মুড়ি ও সিল পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ওইদিন রাতে ঘটনা উল্লেখ করে প্রতিদ্বন্ধী চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছির আহমেদ লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়া অনিয়ম, জালিয়াতির বিষয়ে রির্টানিং অফিসারকে জানানো হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেন নি বলেও জানান তিনি। ফলে বাধ্য হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
তাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের পক্ষে গেজেট প্রকাশ ও শপথ গ্রহণ স্থগিত রেখে পুনঃনির্বাচনের দাবী করেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে চরদুঃখিয়া পুর্ব ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মিরাজ নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন।