নজরুল ইসলাম আতিক:
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, এখন আর প্রশ্ন ফাঁসের কোন সুযোগ নেই, তবে যারা প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা করে বা গুজব ছড়ায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গত মঙ্গলবার শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে চাঁদপুরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, সদ্য শেষ হওয়া এসএসসি পরীক্ষার নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে একটি পর্যালোচনা সভা করেছি। সভায় এসএসসি পরীক্ষার কোথায় কোনো ত্রæটি বিচ্যুতি হয়েছে কিনা এবং কিভাবে তা আমরা মোকাবেলা করেছি সে বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে। যেন আমাদের আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় সারাদেশে সঠিকভাবে আমরা পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারি। এক্ষেত্রে যদি কোন ভুল থাকে তাও সুদরে নেয়ার চেষ্টা করা হবে।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার যেসব নিয়মকানুন রয়েছে তার কোথাও যেন কোন ব্যত্যয় না ঘটে। এক্ষেত্রে যদি কোন শিক্ষকের কোথাও কোন সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ সময় আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য সাংবাদিক, অভিভাবক ও সকল শিক্ষকদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
দুর্গোৎসব নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। আমরা সবাই মিলেই এই বাংলাদেশ। একাত্তরে সবাই মিলে এই বাংলাদেশকে আমরা যেভাবে স্বাধীন করেছিলাম আবার সবাই মিলেই এই বাংলাদেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। এই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। একটি অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশ। তাই এই অসা¤প্রদায়িক বাংলাদেশে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম চর্চা করবে, পালন করবে, প্রচার করবে। এদেশে কেউ কোন ধর্মের উপর ভিত্তি করে কারো উপর কোন জোর জবরদস্তি বা অত্যাচার করবে না, কারো অধিকার ক্ষুন্ন করা হবে না।
মন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশে আমরা এখনো মাঝে মাঝেই দেখি সেই অপশক্তির আস্পালন, যারা একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে। যারা ৭৫-এ জাতের পিতাকে হত্যা করেছে, যারা ২০০৪ এর ২১শে আগস্ট সহ বারংবার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, যারা ২০১৩-১৪ সালে অগ্নি সন্ত্রাস করেছে, এই অপশক্তিকে আমরা এখনো দেখি বারবার তারা আস্পালন করে। তারা এখনো ৭৫ এর হাতিয়ার আবার গর্জে উঠতে বলার মতো দুঃসাহস দেখায়। সেই অপশক্তি, যারা সা¤প্রদায়িক শক্তি, যারা ধর্মের ভিত্তিতে মানুষে মানুষের মাঝে ভেদাভেদ করে এবং এই দেশের সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি নষ্ট করতে চায়, আমাদের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে আমাদের এগিয়ে যাওয়াকে বন্ধ করে দিতে চাই, সেই অপশক্তিকে রোধ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, সরকার সব সময় সচেষ্ট প্রতিটি মানুষের অধিকার রক্ষা করার জন্য। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই-বোনদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার সারাদেশের সবাই শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করছে। এক্ষেত্রে সরকারের সমস্ত সংস্থাগুলো তীক্ষè দৃষ্টি রাখছে। তবে সরকারের পাশাপাশি সারাদেশের এই আনাচে-কানাচের পূজা মন্ডপে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের সকলের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আহবানে সকলেই সজাগ রয়েছেন যেন কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। সেজন্যই এখন পর্যন্ত সবাই শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান উদযাপন করতে পারছেন এবং আমি আশা করি এটি অব্যাহত থাকবে। এর আগে সোমবার বিকেলে চাঁদপুরের হাইমরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ ও রাতে শহরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন মন্ত্রী। এসময় পূজা মন্ডপের পূজারী ও দর্শনার্থীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আর্থিক অনুদান দেন তিনি।
পূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহŸায়ক মাহফুজুর রহমান টুটুল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আসিফ মহিউদ্দিন, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।