এম এ লতিফ:
ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ‘ইলিশ প্রজনন মৌসুম’। এ কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়িত হওয়ায় এ বছর প্রজনন মৌসুমে রেকর্ড ৫১.৭ ভাগ ইলিশ ডিম ছাড়ে। এতে করে এবছর সর্বোচ্চ সংখ্যক ইলিশ ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান।
তিনি দৈনিক শপথকে বলেন, এ বছর দেশের সকল নদ-নদীতে ইলিশ নিরাপদে বিচরণ করে ও নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ে। এ কারণেই আমরা আশা করছি এবার প্রায় পৌনে ৬ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হতে পারে। তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতেও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ২০১৯ সালে ৫ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন, ২০২০ সালে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার মা ইলিশের ডিম ছাড়ার পরিমানও বেশি। সে হিসেবে আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে গত বছরের সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে এবার ইলিশ উৎপাদন পৌনে ৬ লাখে পৌছে যেতে পারে। আর যদি তাই হয়, তাহলে দেশের রাজস্ব আয়ে আরো বেশি অবদান রাখবে ইলিশ।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুরে ৫১ হাজার ১শ ৯০জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এ বছর প্রজনন মৌসুমে নদীতে না নামার জন্য তাদেরকে সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে প্রজনন মৌসুম শুরুর সাথে সাথেই নিবন্ধিত সব জেলেকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। যে কারণে চাঁদপুরের অধিকাংশ জেলে প্রজনন মৌসুমে নদীতে নামেনি।
এছাড়াও মা ইলিশের নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য এবার সকল ধরনের বলগেট ও ড্রেজারও বন্ধ রাখা হয়। এতে করে ইলিশের ডিম নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, এবছর আমরা ইলিশ প্রজনন মৌসুমের সফলতা পেতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি। বিশেষ করে স্থানীয় মৎস্য বিভাগসহ জেলা প্রশাসন, কোষ্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও জণপ্রতিনিধিরাও ছিল যথেষ্ট আন্তরিক। যেকারণে অন্য বছরের তুলনায় এবার প্রজনন মৌসুমের সফলতা ছিল উল্লেখ করার মত। যার প্রমাণ গবেষণায় ইতোমধ্যে বেরিয়ে এসেছে। তাই আশা করছি এবার সর্বোচ্চ সংখ্যক ইলিশ উৎপাদন হবে।