রিয়াজ শাওন
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন দেশের স্কুল কলেজ বন্ধ রেখেছে সরকার। সারাদেশে লকডাউন। সাপ্তাহের পর সাপ্তাহ লকডাউনের সময়সীমা বাড়িয়ে চলেছে সরকার। কবে যে লকডাউন মুক্ত বাংলাদেশ। সেই হিসেবে কেউই মিলিয়ে দিতে পারছে না। ভেঙে পড়েছে সাধারণ মানুষ। জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে দুর্ভোগ।
প্রাণঘাতী করোনা কেড়ে নিয়েছে জীবনের মহামূল্যবান একটি বছর। কেড়ে নিয়েছে লাখ লাখ প্রাণ। দিয়েছে দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা আর হতাশা। আর শিক্ষার্থীদের জীবন পড়েছে অনিশ্চিতয়ার মূখে। তাদেরই একজন ঐতিহ্যবাহী সুনামধন্য বিদ্যাপীঠ চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা পুতুল। তিনি হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেছেন। তিনি একজন মেধাবী বিতার্কিক প্রতিভাবান চিত্রশিল্প এবং সৃজনশীল লেখিকা। অত্যান্ত মেধাবী এই শিক্ষার্থী ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার নিয়েছেন দৈনিক শপথ-এর স্টাফ রিপোর্টার রিয়াজ শাওন। তার সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
দৈনিক শপথ: মহামারি করোনার এই দূর্যোগকালীন বন্ধে পড়াশোনা কেমন চলছে?
সায়মা পুতুল: আগের মতো না, তবে চলছে মোটামুটি। যেমন চলার কথা তেমন না। চলছে এই আর কি!
দৈনিক শপথ: দীর্ঘ সময় ধরে কলেজ বন্ধ। এই বন্ধ সময়ে বাসায় পড়াশোনা কিভাবে করা হয়?
সায়মা পুতুল: পড়াশোনা এখন সম্পূর্ণ অনলাইন ভিত্তিক হয়ে পড়েছে। রুটিন অনুযায়ী স্যারদের ক্লাস করা, নোট করা এভাবেই চলছে। আর কতদিন চলবে আল্লাহই ভালো জানে।
দৈনিক শপথ: বাসায় পড়াশোনা করার জন্য কলেজ থেকে কোন গাইডলাইন দেওয়া হয় কি না?
সায়মা পুতুল: অবশ্যই দেওয়া হয়। আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণ অতি যত্ন সহকারে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন। উনারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন যেনো আমরা পড়াশোনায় আগের মতোই মনযোগী থাকতে পারি।
দৈনিক শপথ: বাসায় পড়াশোনা ছাড়া অন্য কি করে সময় কাটে?
সায়মা পুতুল: বাসায় পড়াশোনা ছাড়াও ছবি এঁকে, গল্পের বই পড়ে এবং ফুটবল খেলা দেখেই সময় কেটে যায়।
দৈনিক শপথ: সাধারণত এত দীর্ঘ সময় ধরে কলেজ বন্ধের সাথে তোমরা পরিচিত না। সেক্ষেত্রে এতদিন কলেজের ক্লাস থেকে দূরে থাকায় পড়াশোনার প্রতি কোন অনিহা কাজ করছে কি না?
সায়মা পুতুল: পড়াশোনা আগের মতন মনযোগ সহকারে করা হচ্ছে না আলসেমী কাজ করে। অনিহা কাজ করে। তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছি করার। আর পড়াশোনা তো করতেই হবে।
দৈনিক শপথ: করোনার পর্রবতীকালে পড়াশোনায় কেমন প্রভাব পেলবে বলে তুমি মনে করো?
সায়মা পুতুল: দীর্ঘদিন ভার্সিটি থেকে দূরে থাকার ফলে অনেক কিছু শিখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এজন্য আমার মনে হয় করোনা পরবর্তীকালে পড়াশোনায় ক্ষতিকর প্রভাবটাই বেশি পড়বে।
দৈনিক শপথ: কলেজ, শিক্ষক কিংবা বন্ধু-বান্ধবী কাকে বেশি মিস করো?
সায়মা পুতুল: সবাইকেই ভীষণ মিস করি। বিশেষ করে প্রিয় ক্যাম্পাসকে।
দৈনিক শপথ: আচ্ছা এত লম্বা সময় ধরে কলেজ বন্ধ থাকায় তুমি কতটা খুশি?
সায়মা পুতুল: আমি একদমই খুশি না। অনেক কিছু শিখার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এই বন্ধ আমাদের জন্যই ক্ষতিকর। এত লম্বা বন্ধ এখন অসহ্য লাগে।
দৈনিক শপথ: করোনা পর্রবতীকালে তোমার ভাবনা কি?
সায়মা পুতুল: পড়ালেখায় আগের মতন মনযোগী হওয়া। প্রাণের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়া।
দৈনিক শপথ: একজন শিক্ষার্থী কিভাবে করোনাকালে মানসিক এবং শারীরিক সুস্থ থাকতে পারে বলে তুমি মনে করো?
সায়মা পুতুল: পৃথিবী সুস্থ হওয়ার অপেক্ষায় দিন পার করছি। এ সময়টাতে সচেতনভাবে চলাফেরা করতে হবে। মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মানসিকভাবে স্ট্রং থাকতে হবে।
দৈনিক শপথ: একজন মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে অন্য শিক্ষার্থীদেকে সঠিকভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া জন্য তুমি কি পর্রামশ দিতে চাও?
সায়মা পুতুল: পড়াশোনার বিকল্প কিছু নেই। যে করেই হোক এ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে হবে। মহান আল্লাহ একদিন সব ঠিক করে দিবেন, সেই আশা রাখি।
দৈনিক শপথ তোমার মত মেধাবী শিক্ষার্থীর সফলতা কামনা করে।
সায়মা পুতুল: দৈনিক শপথকে অনেক ধন্যবাদ।