রিয়াজ শাওন:
চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড দক্ষিণ হামানকর্দ্দি ডাকাতিয়া নদীর তীরে অবস্থিত। প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা অর্ধচাঁদ আকৃতির বেড়িবাঁধটি হতে পারে পর্যটন খাতের অপার সম্ভবনাময় একটি স্থান।
শহর থেকে একটু দূরে কোলাহল মুক্ত পরিবেশে। এখানে পর্যটকরা গ্রামীন পরিবেশে অপরূপ প্রকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। সেই সাথে ডাকাতিয়া নদীর বিশুদ্ধ বাতাস আর গাছে গাছে নানান প্রজাতির পাখির গুঞ্জন পর্যটকদের মনে এনে দিতে পারে মানসিক প্রশান্তি।
স্থানীদের ভাষ্যমতে, প্রায় ১৯৭৪ সালে তৎকালীন চেয়ারম্যান মান্নান শেখের তত্ত্বাবধানে সরকারি উদ্যোগে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিন কোন মেরামত না করায় অযত্নে পড়ে রয়েছে বাঁধটি। বেশ কয়েক জায়গাও ভেঙে পড়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের দুইপাশে সারিসারি লাগানো আছে নানা জাতের গাছ। আর গাছে গাছে নানান প্রজাতির পাখিরা বাসা বেঁধেছে। অর্ধশত বছর পুরানো কড়ই গাছের বড় বড় শেকড় পর্যটকদের দিতে পারে বাড়তি আনন্দ। মূলত বৃক্ষের শিকড় দেখতে অনেক বেশি চমকপ্রদ এবং দৃষ্টিনন্দ। এছাড়াও বাঁধের এক পাশে ডাকাতিয়া নদী। অপর পাশে বিল। দুই পাশেই পানি থাকে বছরের বেশিরভাগ সময়।
মৈশাদী ইউনিয়নের ৯নং ওর্য়াড ছাত্রলীগ সভাপতি কাউসার খান বলেন, ‘চাঁদপুরের পর্যটন খাতে এই জায়গাটি হতে পারে অপার সম্ভাবনাময় একটি স্থান। এর জন্য প্রয়োজন সরকারি অথবা বেসরকারি উদ্যোগ। এই বাঁধটি মেরামত করে র্দশনাথীদের জন্য বাসার ব্যবস্থা করা এবং যাতায়াতের জন্য রাস্তা প্রসস্থ করা জরুরি। এছাড়াও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা দরকার। এখানে অনেক মানুষ ঘুরতে আসে। কিন্তু বসার কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে তাদের অনেক অসুবিধা হয়। সরকারের প্রতি আমার আবেদন বেড়ি বাঁধটি দৃষ্টিনন্দিত করে গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হোক।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন পাটোয়ারী বলেন, চমৎকার একটি জায়গা এটা। সঠিক পরিকল্পনা আর উদ্যোগের অভাবে আজ অবহেলায় পড়ে রয়েছে। কত মানুষ আসে ঘুরতে। কিন্তু বসার কোন ব্যবস্থা নেই। খাবারের কোন দোকান নেই। সরকার কিংবা কোন ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠান যদি উদ্যোগ নিয়ে এটা সাজায়। তাহলে দেখতে জায়গাটা খুব সুন্দর হবে।
৬নং মৈশাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মানিক দৈনিক শপথকে বলেন, বেড়ি বাঁধটা খুব সুন্দর। আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর নিজেই এই বেড়ি বাঁধটি নিয়ে র্দূযোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেছি। এখনো উন্নয়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। কারণ আমরা যদি বাঁধাটিকে মেরামত করতে পারি তাহলে তিনটা উপকার হবে। পর্যটকের জন্য চমৎকার একটি জায়গা হবে। বর্ষার মৌসুমে মাছ চাষ করতে পারবো এবং শুষ্ক মৌসুমে ধানও চাষ করতে পারবো। বাঁধটাকে পর্যটকের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। এটা অনেক ব্যয়বহুল কিন্তু সৎ থেকে কাজ করলে অল্প টাকায়ই কাজ হয়ে যাবে। আশাবাদী আমাদের মন্ত্রী মহোদয়ের সুদৃষ্টিতে যেমন স্কুলের ভবনের উপর পড়েছে ফলে আমাদের সবগুলো স্কুলে ভবন হয়েছে। ঠিক তেমনি এই জায়গাটিও উপরেও পড়বে। তবে বর্তমানে বেড়িবাঁধটি অনেক ঝুঁকিতে আছে। মেরামত করা জরুরি।
এলাকাবাসীর দাবি, এই বেড়িবাঁধটি যাতে মেরামত করা হয় এবং উপযুক্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে জায়গাটি পর্যটকদের বিনোদনের জন্য উপযুক্ত করে তোলা হয়। এতে করে জেলার ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে ভ্রমণের একটি উত্তম জায়াগা হবে। অন্যদিকে মানুষেরও কর্মসংস্থান হবে। এই বাঁধটি দৃষ্টিনন্দিত আধুনিক চাঁদপুর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।