সুমন আহমেদ
মতলব উত্তর উপজেলায় বেশ কয়েকটি ইটভাটাই চলছে আইন অমান্য করে। ইটভাটা আইন ২০১৩ না মেনেই চলছে এসব ইটভাটা। ইটের ওজন ও মাপ কোনটাই সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না এসব প্রতিষ্ঠানে। এতে যেমনিভাবে প্রতিরিত হচ্ছে মানুষ তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর বসত বাড়ির একেবারে কাছাকাছি ইটভাটা স্থাপন হওয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে এলাকাবাসী। এরমধ্যে আবার সরকারি অনুমতি ও পরিবেশের ছাড়পত্র নেই উপজেলার কালীপুরে অবস্থিত মেসার্স নাজির আহমদে চৌধুরী ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারস্-এর।
পরিবেশ ছাত্রপত্র ও সরকারি অনুমতিপত্র ছাড়া কিভাবে ইটভাটা চলছে? এই প্রশ্নের জবাবে মেসার্স নাজির আহমদে চৌধুরী ব্রিকস্ ম্যানুফ্যাকচারস্ (এনবিএম) এর দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার মোঃ শাহিন বলেন, আসলে আমাদের এই ইটভাটার কোন কাগজপত্র নেই। ডিসি অফিস ও প্রশাসন ম্যানেজ করেই ইটভাটা চালাচ্ছি। পরিবেশ ছাড়পত্র ও সরকারি অনুমতিপত্রের জন্য আবেদন করলেও এখনো পাইনি। এ ব্যাপারে মালিক জাফরিল চৌধুরীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে মেসার্স নাজির আহমদে চৌধুরী ব্রিকস্ ম্যানুফ্যাকচারস্-এ গিয়ে দেখা গেছে, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ইটের মাপ ১০˟৫˟৩ ইঞ্চি থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে মাপ অনেকটাই কম। যার ফলে মানুষ এই ইটভাটা থেকে ইট কিনে প্রতিনিয়তই ধোকা খাচ্ছে। কয়টি কোয়ালিটির ইট তৈরি করা হয় এখানে? এই প্রশ্নের সঠিক জবাবও দিতে পারেননি ইটভাটা কর্তৃপক্ষ। এদিকে ভাটা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ৩০ ভাগই শিশু শ্রমিক। যাদের মধ্যে কারো বয়স ১২ বছর, কারো ১৩ বছর বা ১৪ বছর বয়সী। এই শিশু শ্রমিকদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে দেখা গেছে। শুধু কিশোর দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে তা নয়, কিশোরীও আছে এই ইটভাটায়।
কথা হয় শিশু শ্রমিক সাহিদা আক্তারের সাথে। সে বলে প্রতি সপ্তাহে ৩ হাজার সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা পায় কাজ করে। কেন করছ এই কাজ? এমন প্রশ্নের জবাবে সে বলে, আমার বাবা মা এখানে কাজ করে তাই আমিও এখানে কাজ করি। বাড়িতে কেউ নেই। ১২ ও ১৩ বছর বয়সী আরো দুই ছেলে শিশু শ্রমিকের কাছে জানতে চাইলে তারা বলে, পেটের দায়ে আমরা এখানে কাজ করি। সপ্তাতে ২ হাজার আবার কোন সপ্তাহে তিন হাজার টাকা পাই। মেসার্স নাজির আহমদে চৌধুরী ব্রিকস্ ম্যানুফ্যাকচারস্-এর শিশু শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর কারণে মারাত্মকভাবে আইন লঙ্গন হচ্ছে বলে মনে করেন সচেতন মহলের ব্যক্তিবর্গ। এ ব্যাপারে ম্যানেজার মোঃ শাহিন বলেন, আমরা যখন উত্তরবঙ্গ থেকে শ্রমিক আনি। তখন তাদের সাথে ছেলে মেয়েরাও চলে আসে। তাই তাদের বাবা-মা তাদেরকে দিয়ে কাজ করায়।