আক্তার হোসেন সোহেল ভূঁইয়া। কচুয়ার রাজনীতিতে অতি পরিচিত মুখ। ভদ্র আর বিশুদ্ধ মানুষ হিসেবেই সবাই তাকে চিনে। স্বল্পভাষী মানুষ। অনেকেই ভুল বুঝে ভাবেন ‘মুডি মানুষ’। মূলত তিনি কথা কম বলেন। নিরিবিলি চলতে পছন্দ করেন। আর নিরব মনে ভাবেন শুধু মানুষের কল্যানের কৌশল। আয়ত্ব করছেন পরোপকারি মনোভাব কিভাবে চর্চা করা যায়। মূলত নিজেকে ক্লিন রেখেই মানুষের সেবায় কাজ করে চলেছেন এ আওয়ামী নেতা। মানুষকে সহযোগিতা করে তৃপ্তি পান। শুধু তৃপ্তির কারনে কচুয়ার পৌরসভার নাগরিকদের কাছাকাছি আসতে চান। কচুয়া উপজেলার ৮নং কাদলা মহর্দ্দীরবাগ গ্রামে জন্ম হলেও কচুয়া আর কুমিল্লায় কেটেছে শৈশব, কৈশর আর শিক্ষা জীবন।
ইন্টারমিডিয়েট পাসের পর বাবা দেলোয়ার হোসেন ভূইয়া মারা যান। তারপর চাচার ছায়ায় ছিলো তাদের পরিবার। কিন্তু চাচাও ২০০৯ সালে মারা যান। তারপর একান্নবর্তি পরিবারের গা দেয়ালে ঠেকে যায়। বাধ্য হয়ে চাকুরীর চিন্তা না করে পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেণ। এরইর মাঝে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে অনার্স মাষ্টার্স শেষ করেন। একমাত্র ছোট ভাই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। তিন বোন বিভিন্ন পেশায় রয়েছেন।
পারিবারিক জীবনে সোহেলের স্ত্রী নুসরাত ইয়াসমিন গৃহিনী। স্ত্রীর নামেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। একমাত্র ছেলে আরাফ আহমেদ ভূইয়া। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। আক্তার হোসেন নিজে ঠিকাদারি, ব্যবসা এবং রাজনীতি করছেন সমান তালে। রাজনীতিতে পুরোপুরি সময় দিলেও মূল পেশা ব্যবসা। চাচা রাজনীতি করেছেন তাই নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি তার সাথে কথা হয় সাপ্তাহিক শপথ এর সাথে। যা তুলে ধরা হলো-
সাপ্তাহিক শপথ: এখন কী করছেন জোরেসোরে?
আক্তার হোসেন সোহেল: ব্যবসাই আমার পেশা। পাশাপাশি রাজনীতি করি মানুষের জন্য। আমার আয়ের একটা অংশ মানুষের সেবায় নিয়োজিত করতে চাই।
সাপ্তাহিক শপথ : রাজনীতি শব্দটির প্রতি সাধারণ মানুষের ভিন্ন দৃষ্টি; কি বলবেন ?
আক্তার হোসেন সোহেল: রাজনীতি জোর করে চাপিয়ে দেয়ার কিছু নেই। সমাজ ব্যবস্থায় রাজনীতির আদর্শ অনেক অংশেই পিছিয়ে আছে। রাজনীতিতে লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার হচ্ছে। রাজনীতিতে তরুন সমাজ বেশি উদ্ভুদ্ধ। অথচ তারা জানে না তাদের সামনে কতোটা বন্ধুর পথ অপেক্ষা করছে। রাজনীতি সরাসরি পেশা হওয়া ঠিক না। রাজনীতি থেকে মানুষের শ্রদ্ধা অনেকাংশে কমে গেছে।
সাপ্তাহিক শপথ : নির্বাচনী মাঠ কিভাবে গোচাচ্ছেন?
আক্তার হোসেন সোহেল: আমার নির্বাচনী মাঠ আমি গুচাচ্ছি। যারা রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন তারা আমাকে অনুপ্রাণিত করলে তাদের সহযোগিতায় আমি এগিয়ে যেতে চাই। সমাজকে ভালো কিছু উপহার দিতে চাই।
সাপ্তাহিক শপথ : কচুয়া পৌরসভায় নাগিরক সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন আছে নাগরিকদের। কি সুবিধা বাড়ানো উচিত ?
আক্তার হোসেন সোহেল : যে রাস্তা আছে তার খারাপ অবস্থা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা আরো আধুনিক হওয়া উচিৎ। সড়ক সম্প্রসারণ করতে হবে। লিংক রোডগুলো আরো সম্প্রসারণ করতে হবে। খালে ময়লা জমে গেছে। খাল পরিষ্কার করা প্রয়োজন। কচুয়া বাসষ্ট্যান্ড বা পৌর টার্মিণাল, পৌর গোরস্থান করা জরুরি। হিন্দুদের মৃতদেহ সৎকারের জন্য পৌর শশ্বান প্রয়োজন।
সাপ্তাহিক শপথ : আপনিতো গত নির্বাচনেও মেয়র প্রার্থী ছিলেন?
আক্তার হোসেন সোহেল : নিজের দায়িত্ব না নিয়ে অন্যের দায়িত্ব কিভাবে নেবো? তাই গত নির্বাচনে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলাম। অনেক কিছু অজানা ছিলো। যা গত পাঁচ বছরে আরও জানার চেষ্টা করেছি। আমি এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত নির্বাচনকে ঘিরে।
সাপ্তাহিক শপথ : মেয়র হলে কোন কাজগুলো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন?
আক্তার হোসেন সোহেল : পৌরবাসীর নিত্য সমস্যা গ্যাস। গ্যাস সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হবে। মানুষ চুলার বিল দিলেও গ্যাস পাচ্ছে না। রান্নার জন্য সিলিন্ডার ও লাকড়ি ব্যবহার করতে হচ্ছে। কচুয়া থেকে গৌরিপুর যে লাইন ৪ ইঞ্চি সে লাইন ৬ ইঞ্চি করতে হবে। গ্যাসকে সহজলভ্য করা জরুরি। পাশাপাশি আমি একজন নাগরিক হিসেবে বলব, পৌরসভার সব বিল দেয়া সত্বেও সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। রাস্তাঘাটগুলো যেভাবে মেরামত হওয়ার প্রয়োজন সেভাবে মেরামত হচ্ছে না। আমি নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
সাপ্তাহিক শপথ : পৌরবাসীর প্রত্যাশা কি?
আক্তার হোসেন সোহেল : রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের সবার দায়িত্ব আছে। একার পক্ষে যে কোন কাজ করা কঠিন। কিন্তু ওয়ার্ড ভিত্তিক সবাই যদি দায়িত্ব নেই অবশ্যই আমাদের যে নাগরিক সুযোগ সুবিধা আসে সেটা আমরা ভোগ করতে পারবো।
সাপ্তাহিক শপথ : প্রার্থী হিসেবে আপনার অযোগ্যতা বলুন ?
আক্তার হোসেন সোহেল : প্রার্থী হিসেবে মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারি না। আমার লাঠিয়াল বাহিনী নেই। ইচ্ছে করলেই লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করা যায়। কিন্তু মানুষ এসব যেমনি পছন্দ করেন না। তেমনি আমিও। শুদ্ধতার মধ্যে থেকেও মানুষের সেবা করা যায়। অবশ্য নির্বাচন এলে এসব লাঠিয়াল বাহিনী আর উচ্ছৃংখল বাহিনীও লাগে। কিন্তু আমি প্রমাণ করতে চাই। নির্বাচন শৃংখলার মধ্য দিয়েও হতে পারে।
সাপ্তাহিক শপথ: আর যোগ্যতা?
আক্তার হোসেন সোহেল : জনগণ আমার সাথে আছে। মানুষের কোন ক্ষতি আমি চাই না। নিশ্চয় আমার ক্ষতিও মানুষ চাইবে না।
সাপ্তাহিক শপথ: পৌর নির্বাচন খুব দূরে নেই। প্রকাশ্যে মাঠে নামবেন কবে ?
আক্তার হোসেন সোহেল: ডিসেম্বর থেকে প্রকাশ্যে সার্বিক কার্যক্রম শুরু করবো ইনশাল্লাহ।
সাপ্তাহিক শপথ : আপনাকে ধণ্যবাদ।
আক্তার হোসেন সোহেল : সাপ্তাহিক শপথকেও ধন্যবাদ।
আজ,
সোমবার , ২৭ মার্চ, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ , ১৩ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।