সুমন আহমেদ:
মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধনাগোদা নদী কচুরিপানার দখলে। এ নদীর আমিরাবাদ ল ঘাট থেকে কালিপুর ল ঘাট পর্যন্ত প্রায় ৫৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে কচুরিপানার জট। এতে নদীতে বন্ধের উপক্রম হয়েছে নৌ চলাচল। এমনকি নৌকা দিয়ে নদী পারাপারেও চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে দুই উপজেলার জনসাধারণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ধনাগোদা নদীর মতলব খেয়াঘাট, বাইশপুর, গাজীপুর মোড়, সাহেব বাজার, লক্ষীপুর, টরকী, মাছুয়াখাল, শাহপুর, নায়েরগাঁও, দুর্গাপুর, শ্রীরায়ের চর, কালিরবাজার, নন্দলালপুর খেয়াঘাট এলাকায় কচুরিপানা জমাট বেঁধে আছে। এতে খেয়া পারাপারের যাত্রী সাধারণের চরম ভোগান্তি হচ্ছে।
মতলব রয়মনননেছা মহিলা কলেজের ছাত্রী জয়া মজুমদার, ব্যবসায়ী রেহান উদ্দিন রাজন বলেন, বছরের এই সময়ে নদীতে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা থাকায় নৌকা দিয়ে নদী পারাপারে নিজেদেরই নৌকার বৈঠা বাইতে হয়, সেই সাথে সময়ের অপচয় হয়। তাই বাধ্য হয়ে অনেক পথ ঘুরে মতলব সেতু দিয়ে নদী পার হয়ে যেতে হচ্ছে।
এ পথে যাতায়াতকারী একাধিক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, নদীর দুই পাড়ে অবৈধ ঝাঁক থাকায় জোয়ার-ভাটার সময় কচুরিপানা সরতে পারে না। এতে কয়েক মাস কচুরিপানার জমাট বেঁধে নৌকাসহ এই নদীতে অন্যান্য নৌ-যান চলাচলে বাঁধার সম্মুখিন হয়।
মতলবের খেয়াঘাটের নৌকা শ্রমিক সমবায় সমিতির সভাপতি হাসেম খান জানান, নদী পারাপারে নৌকায় পুরুষ মানুষ না থাকলে নৌকা ছাড়ি না। নদীর কচুরিপানা সরিয়ে নদী পারাপারে অনেক কষ্ট হয়। এতে এই পথে অনেক যাত্রী কমে যাচ্ছে।
মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, নদীর দুই পাড়ে অসংখ্য অবৈধ মাছ ধরার ঝাঁক (মাছ ধরার ফাঁদ) রয়েছে। এই অবৈধ মাছ ধরার ফাঁদ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় পত্র-পত্রিকায় একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না। ফলে বছরের এই সময়ে নদীতে কচুরিপানা আটকে নৌকা পারাপারে জনসাধারণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল হাসান বলেন, ধনাগোদা নদীতে যে কচুরিপানা দেখা দিয়েছে তা নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিঘœ। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক সভায় এ ব্যাপারে আলোচনা করবো। উপজেলা প্রশাসনও যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়ে কচুরিপানা পরিস্কার করে নদীটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।