নজরুল ইসলাম আতিক:
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে দেশের হয়ে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তার সেঞ্চুরিতে সারাদেশের ন্যায় আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় তার নিজ জেলা চাঁদপুরেও। ছেলের সেঞ্চুরিতে খুশি বাবা-মা। পাশাপাশি চায়ের দোকানে, বাসায় বসে বসে জয়ের কৃতিত্ব দেখেছেন যুবক বৃদ্ধ সহ সকল বয়সী ক্রিকেট প্রেমী।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা ১০ দক্ষিণ গোবিন্দপুর ইউনিয়নের পশ্চিম লাডুয়া গ্রামের মো. আব্দুল বারেকের ছেলে জয়। জয় নামেই ডাকে সবাই। তার বাবা আবদুল বারেক পূবালী ব্যাংকে চাঁদপুর শহরের বাবুরহাট শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত। মা হাছিনা বেগম গৃহিণী। চার ভাই-বোনের মধ্যে জয় তৃতীয়।
ছোট্ট গ্রামের সেই জয় আজ বিশ্ব জয়ের প্রতিক্ষায়। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটপাগল জয় খেলার জন্য বাবা মায়ের বকুনি খেয়েছেন বেশ। তবে চাচা কর্নেল বশিরুল ইসলামের অনুপ্রেরণায় বিকেএসপিতে ছেলেকে ভর্তির চিন্তা করেন বাবা আব্দুল বারেক। দেশের হয়ে ছেলের এমন কৃতিত্বে এখন খুশি তিনি। দেশের জন্য আরও এমন কৃতিত্ব অর্জনের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বাবা।
জয়ের বাবা ব্যাংকার আব্দুল বারেক বলেন, সাউথ আফ্রিকার মাটিতে আমার ছেলে জয় আজকে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করল। আজকে আমার ছুটি থাকায় পুরো খেলা আমি দেখেছি। আমার খুবই আনন্দ লেগেছে। আমার ছেলে যাতে ভবিষ্যতে আরো ভালো খেলতে পারে এবং বাংলাদেশের মান আরও উজ্জ্বল করতে পারে তার জন্য দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া চাই।
চাঁদপুর ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমির প্রধান শামীম ফারুকীর হাত ধরে বিকেএসপিতে ভর্তি হয় জয়। ১০ থেকে ১২ বছর আগে চাঁদপুর ক্লেমন একাডেমিতে তার তত্ত¡াবধানে প্রশিক্ষণ নিয়ে ক্রিকেটে পথচলা শুরু জয়ের। জয়ের মধ্যে রাহুল দ্রাবিড় এবং মোহাম্মদ ইউসুফকে খুঁজে পান এই কোচ। একান্ত আলাপচারিতায় জয়ের প্রথম কোচ শামীম ফারুকী জানান, আমি জয়ের মাঝে সেই রাহুল দ্রাবিড়, মোহাম্মদ ইউসুফের ব্যাটিং টেকনিক দেখি। তাদেরকে আউট করা যেমন দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। যেকোনো বলারই তাদের উইকেটগুলো পাওয়ার জন্য অনেক ঘাম ঝরাতে হত। আমার জয় ঠিক সেভাবেই ব্যাটিং করছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের জন্য সে একটি সম্পদ এবং রাহুল দ্রাবিড় ও মোহাম্মদ ইউসুফের মত একজন প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান।
তিনি আরো বলেন, যদিও তার কিছু ভুল ত্রæটি এখনো রয়েছে। এগুলো হয়তো কাটিয়ে উঠতে পারবে যেহেতু বিশ্বমানের অনেক কোচদের আন্ডারে সে এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি। ওর ফোকাস যেন সব সময় ব্যাটিংয়ের প্রতি থাকে এবং খেলার প্রতি থাকে সে জন্য দোয়া করি। যেহেতু সে অনেক পরিশ্রমী তাই সে নিত্যনতুন অনেক কিছুই শিখছে। আমি তার সাফল্য কামনা করি।
চায়ের দোকানে জয়ের কৃতিত্ব দেখার সময় অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে চাঁদপুরের কয়েকজন ক্রিকেটপ্রেমী বলেন, জয় আমাদের চাঁদপুরের ছেলে এটা আমাদের জন্য গর্বের। সে সারা বিশ্বে আমাদের চাঁদপুর তথা বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করছে। আমরা জয়ের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য আরো ভালো কৃতিত্ব দেখাবে সেই কামনাই করি।